২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

দৃষ্টিপাত : যুক্তরাষ্ট্রের ব্যর্থতা ও পররাষ্ট্র নীতি

-

মার্কিন সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন কৌশলে হস্তক্ষেপ করেছিলেন। তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একজন দক্ষ রাজনৈতিক খেলোয়াড়। তিনি চাইছিলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের মসনদে বসুন। কারণ, তাহলে তিনি নির্ভার হতে পারেন। ঠিক সেটাই হলো। কারণ আমেরিকায় যদি একজন দক্ষ এবং কূটনৈতিক বুদ্ধিসম্পন্ন রাজনীতিবিদ রাষ্ট্রক্ষমতায় আসেন, তাহলে বিশ্বরাজনীতিতে রাশিয়া কিছুটা হলেও বেকায়দায় থাকত। পুতিন তাই চাইছিলেন, অপেক্ষাকৃত কম ব্যক্তিত্বসম্পন্ন একজন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় যেন আসেন।
এ দিকে, বিশ্বরাজনীতিতে নতুন চমক সৃষ্টি করছে চীন। বেইজিং দীর্ঘ দিন ধরে ব্যবসায় মনোনিবেশ করে সফল হয়েছে। পরে আস্তে আস্তে আঞ্চলিক ও বিশ্বরাজনীতিতে নাক গলাতে শুরু করেছে। দক্ষিণ এশিয়ায় প্রায় সব ক’টি দেশকে চীন নিজের প্রভাববলয়ে নিতে সচেষ্ট। চীনের বলয় ভেঙে ফেলার সাধ্য এখন যুক্তরাষ্ট্রের নেই বললেই চলে। দক্ষিণ এশিয়ায় মার্কিন ভুল নীতির কারণে এমনটি হয়েছে। অথচ শক্তির বিচারে যুক্তরাষ্ট্র সার্বিক বিচারে চীন থেকে এগিয়ে।
দক্ষিণ এশিয়ায় একসময় যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র ছিল পাকিস্তান; কিন্তু ওয়াশিংটনের অবিশ্বস্ততায় আমেরিকার চেয়ে চীনের সাথে বেশি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছে ইসলামাবাদ। অপর দিকে, আমেরিকা অনেক ক্ষেত্রে জোরপূর্বক কর্তৃত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করছে। এর বিপরীতে, উন্নয়ন এবং বাণিজ্য দিয়ে নেটওয়ার্ক বজায় রাখায় চীন সচেষ্ট । এশিয়া ছাড়িয়ে আফ্রিকা মহাদেশের বিভিন্ন দরিদ্র রাষ্ট্রের উন্নয়নেরও অংশীদার এখন চীন। বেইজিংয়ের বিদেশ নীতি এবং বাণিজ্য সম্পর্ক অনেকেই গ্রহণ করছেন। একটা কথা চালু আছেÑ ‘আমেরিকা যার বন্ধু, তার শত্রুর প্রয়োজন পড়ে না।’ একসময় খোদ আমেরিকাই বন্ধুরাষ্ট্রের এক নম্বর শত্রুতে পরিণত হয়। অন্য দিকে, চীন নিজস্ব গতিতে এগিয়ে চলছে। বেইজিং অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সহজ নাক গলায় না। বরং ব্যবসাবাণিজ্য এবং উন্নয়নকাজ নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকে।
মার্কিন নীতি হলোÑ পরস্পর যুদ্ধ বাধিয়ে দু’পক্ষের কাছেই অস্ত্র বিক্রি করা। তা ছাড়া, মুসলিম বিশ্বের প্রতি সাধারণত বৈরী মনোভাব পোষণ করে যুক্তরাষ্ট্র। নিজের স্বার্থের কারণে মধ্যপ্রাচ্যের কিছু আরব রাষ্ট্রের সাথে সুসম্পর্ক টিকিয়ে রেখেছে। অন্য দিকে, চীন নিজের দেশের উইঘুর মুসলমানদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে। মিয়ানমারে নিষ্ঠুর রোহিঙ্গা মুসলিম নির্যাতনকে জোরালো সমর্থন দিয়েছে। তবে মুসলিম বিশ্বের সাথে কৌশলে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলে। অন্য দিকে, আমেরিকা একের পর এক মুসলিম দেশ জোরপূর্বক দখল করায় মেতে উঠেছে। ইরাক ও আফগানিস্তান এর জলন্ত উদাহরণ।
লেখক : কে এম আলী হাসান, সাংবাদিক
Email : kmalihasan75@gmail.com


আরো সংবাদ



premium cement