২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

এ কেমন আজব নির্বাচন কমিশন!

চলতে ফিরতে দেখা
-

কে এম নুরুল হুদার নির্বাচন কমিশন বাংলাদেশে এক আশ্চর্য রাজনীতির খেল দেখাচ্ছে। আমরা ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না, এই নির্বাচন কমিশনকে সংবিধান যে ক্ষমতা দিয়েছে, সে ক্ষমতা চর্চা করার শক্তি তাদের আছে কি না। সাধারণত নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষ হওয়ার কথা। জনগণ সেটাই জানেন। কিন্তু কে এম নুরুল হুদার নির্বাচন কমিশন যেভাবে কথা বলে, তাতে কখনো কখনো ভ্রম হয় যে, নির্বাচন কমিশন কথা বলছে নাকি সরকারি দলের কোনো মন্ত্রী-মিনিস্টার কথা বলছে। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব সব রাজনৈতিক দলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা। সে পথে এই নির্বাচন কমিশন কোনো দিন উঁকি দিয়ে দেখেনি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছিলেন, ‘তোমার পতাকা যারে দাও, তারে বহিবারে দাও শক্তি।’ এই নির্বাচন কমিশনকে পতাকা দেয়া হয়েছে বটে, কিন্তু সেই পতাকার ভার বইবার শক্তি এই কমিশন কোনো দিনই দেখাতে পারেনি। এই নির্বাচন কমিশন গঠনপ্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে কমিশনকে দুর্বল তথা বশংবদ করার পরিকল্পনা সরকারের প্রথম থেকেই ছিল এবং অতি দ্রুত তথাকথিত সার্চ কমিটির নামে বিএনপির ওপর ক্ষুব্ধ কে এম নুরুল হুদাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব দেয়া হয়। আরো যাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তারাও এ পর্যন্ত সরকারের বশংবদের ভূমিকাই পালন করছে। ব্যতিক্রম আছেন শুধু একজন, তা-ও তিনি সব সময় কথা বলতে পারেন না।
এই নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত যতগুলো নির্বাচন হয়েছে, তার কোনোটিই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়নি। ইউনিয়ন কাউন্সিল থেকে শুরু করে সিটি করপোরেশন নির্বাচন কোনোটাই নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করতে পারেনি এই নির্বাচন কমিশন। নিরপেক্ষতা যে তাদের একটা দায়িত্ব সে বোধও হারিয়ে ফেলেছে কমিশন। ইউনিয়ন কাউন্সিল পর্যায়ে ভোট ডাকাতি হয়েছে, সেখানেও প্রশাসন ও নির্বাচনী কর্মকর্তারা ভোট কারচুপিতে সহায়তা করেছে। কমিশন কোনো ভূমিকা নিতে পারেনি কিংবা সম্ভবত তারা এমনটিই হতে দিতে চেয়েছে। নির্বাচন যখন হয়, তখন সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রশাসন নির্বাচন কমিশনের অধীনে চলে আসে। কিন্তু নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির বিরুদ্ধে কমিশন কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। সরকার তার পেটোয়া পুলিশবাহিনী লেলিয়ে দিয়ে বিরোধীদলীয় প্রার্থী ও তাদের এজেন্টদের বিরুদ্ধে হাজারে হাজারে মামলা করেছে। লাখ লাখ বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীকে সেসব মামলার আসামি করা হয়েছে। কমিশন শুধু তাকিয়ে দেখেছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) শেষ পর্যন্ত বলেই ফেলেছিলেন, জাতীয় নির্বাচন যে নিরপেক্ষ হবেÑ এমন কোনো গ্যারান্টি দেয়া যায় না। সিটি করপোরেশন নির্বাচনগুলোতে যে ভয়ভীতি সৃষ্টি করা হয়েছিল, কমিশন তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি। বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সকাল ৯টার মধ্যেই মেয়র প্রার্থীর সব ব্যালটে সিল মারা হয়ে গিয়েছিল। কারা এই সিল মেরেছিলেন, কারা ব্যালট বাক্স ভরলেন, সে খবর নিতে চায়নি নির্বাচন কমিশন। সেখানে একজন কমিশনার উপস্থিত ছিলেন, তিনি নির্বাচনের ভোটডাকাতি দেখে এলাকা ছেড়ে চলে এসেছিলেন। কিন্তু নির্বাচন কমিশন এই প্রশ্নের জবাব দিতে পারেনি যে, কেনো সকাল ৯টার মধ্যে মেয়র প্রার্থীর সব ব্যালট শেষ হয়ে গেল, ভোট দেয়া সম্পন্ন হলো। এ রকম আজগুবি কাণ্ড বাংলাদেশে কমই ঘটেছে। আমরা আগে শুনেছি অযোগ্য লোককে গুরুত্বপূর্ণ পদে বসালে অনেক সময় পদের মর্যাদায় তারা দায়িত্বশীল হয়ে ওঠে; কিন্তু এবার ভিন্ন চিত্র দেখলাম। এই কমিশন নিজ পদের পর্যাদা উপলব্ধি করতেও সক্ষম হয়নি। সে কারণে সরকার যে সোনার হরিণ চেয়েছে, নির্বাচন কমিশন তেমনি সোনার হরিণ ধরে এনে সরকারের হাতে তুলে দিয়েছে। ফলে এটা আশা করার সঙ্গত কারণ নেই যে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই কমিশন একটি সুষ্ঠু, অবাধ, অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারবে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি আসুক সরকারি দল সেটা চায়নি। সে কারণেই প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে ক্ষমতাসীন ১৪ দলীয় জোটের সব পর্যায়ের নেতা ও মন্ত্রীরা বারবার বলেছেন, কে নির্বাচনে এলো কে এলো না সেটা দেখার দায়িত্ব তাদের নয়। নির্বাচন হবে, যার খুশি সে অংশ নেবে, যার খুশি সে অংশ নেবে না। নির্বাচন কমিশনের ভাষাও প্রায় একই রকম ছিল। অথচ নির্বাচন অংশগ্রহণ করানোর দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। নির্বাচন যদি অংশগ্রহণমূলক না হয়, তা হলে দেশে গণতন্ত্র টিকতে পারে না। সে কারণে এখন বাংলাদেশ গণতন্ত্রহীন। মানুষের মৌলিক অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। নিত্যনতুন নিবর্তনমূলক আইন জারি করা হয়েছে। কথা বলার স্বাধীনতা রদ করা হয়েছে। এখন জনগণ নিজ দেশেই বন্দী। কত যে নিবর্তনের আইন সরকার করেছে তার কোনো শেষ নেই। এমনকি তরুণ সমাজের ফেসবুকে মতপ্রকাশ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য তারা এখন নানা ধরনের আইন করেছে। আর এসব কারণেই বর্তমান বাংলাদেশ সরকারকে বিশ্বে নব্য স্বৈরাচার আখ্যা দেয়া হয়েছে। কিন্তু এই সরকার বিরোধীদলীয় নেত্রী এবং তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ঠুনকো এক মামলায় কারাবন্দী করে রেখেছে। বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশে তার কারবন্দিত্বের সময় দেশে যাতে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয় সে ব্যবস্থা হয়েছে। তিনি যেকোনো পরিস্থিতিতে নেতাকর্মীদের শান্ত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। তেমনি উসকানির ফাঁদে পা না দেয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন।
সরকার মনে করেছিল, মামলা দিয়ে বিএনপি নেতাদের কারাবন্দী করে লাখ লাখ কর্মীকে ঘর ছাড়া করে তাদের দমিয়ে দেয়া সম্ভব হবে। সে কারণে তাদের একটি জনসভা পর্যন্ত করতে দিতে সরকার নানাভাবে বাধা দিয়েছে। একটি জনসভা করতে বারবার ঘুরিয়েছে। অজুুহাত হিসেবে বলা হয়েছে, বিএনপিকে সমাবেশ করতে দিলে, তাদের কাছে খবর আছে, সেখানে নাশকতার পরিবেশ সৃষ্টি হবে। কিন্তু যতবারই বিএনপিকে জনসভার অনুমতি দেয়া হয়েছে, ততবারই দেখা গেছে সেখানে জনসমুদ্রের সৃষ্টি হয়েছে। নাশকতা বলে কিছুই ঘটেনি। অথচ সরকারি দলের জনসভা করতে কোনো শর্ত আরোপ করা হয় না। এটিও এক যাত্রায় ভিন্ন ফল। নির্বাচন কমিশন বলার চেষ্টা করেছে যে, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত এ ব্যাপারে তাদের কিছুই করার নেই। শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। এখন তো সব কিছুই নির্বাচন কমিশনের করার কথা। প্রশাসনের দায়িত্ব চলে আসার কথা নির্বাচন কমিশনের হাতে। কিন্তু কোথায় যেন ফাঁক রয়ে গেছে। নির্বাচন কমিশনও কি তবে সরকারের মত অনুসরণ করে চাইছে যে, বিএনপি নির্বাচন থেকে দূরে থাকুক। চাইছে যে না, তা এখন পর্যন্ত কমিশন প্রমাণ করতে পারেনি। তফসিল ঘোষণার পর আমরা দেখলাম, নির্বাচনে মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু করল আওয়ামী লীগ তাদের ধানমন্ডি কার্যালয় থেকে। সেখানে ডজন ডজন গাড়ি, ট্রাক, বাস নিয়ে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা ধানমন্ডি এলাকা একেবারে অচল করে দিলো। সারা দিন যানজটে নাকাল থাকল নগরবাসী, ঢাকঢোল পিটিয়ে সেখানে এক উৎসবের আমেজ তৈরি করেছিল আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। আসলে এ রকমই হয়। নমিনেশন কে পাবে বা কে পাবে না সেটা পরের কথা; কিন্তু নমিনেশন প্রার্থীরা নিজের সমর্থন প্রমাণ করার জন্য এভাবেই দলে বলে দলীয় কার্যালয়ে আসতে থাকেন। মানুষের ভোগান্তি হয়েছে সন্দেহ নেই। কিন্তু একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের আশায় মানুষ সে ভোগান্তি মেনে নিয়েছে। আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র বিতরণ ও সংগ্রহের সময় আওয়ামী লীগের দু’পক্ষের গোলাগুলিতে গাড়িচাপা পড়ে প্রাণ হারিয়েছেন দুই কিশোর। এর জন্য দায়ী একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রীও বেশ শক্ত কথা বলেছিলেন, এই হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ীদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। কাকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে জানি না। কিন্তু যাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল, সন্ধ্যার পর আওয়ামী নেতারা গিয়ে তাকে থানা থেকে ছাড়িয়ে নেন। যে দুই নিরীহ কিশোর এই সংঘর্ষের বলি হয়েছিল, তাদের খবর কেউ রাখেনি। তা সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশন চুপ করে ছিল। টুঁ শব্দটি পর্যন্ত করেনি।
কিন্তু বিপত্তি বাধল বিএনপির মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমাদানের দিন থেকে। গত ১১ নভেম্বর থেকে বিএনপি নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু হয়। আওয়ামী লীগের মতোই একইভাবে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীরা হাজার হাজার সমর্থক নিয়ে নয়াপল্টনের অফিসের সামনে হাজির হন। পরে ফকিরাপুল থেকে নাইট এঙ্গেলের মোড় পর্যন্ত লাখো মানুষের সমাগম ঘটে। প্রথম দিন যত লোক হয়েছিল, দ্বিতীয় দিন তার চেয়েও বেশি লোক হয়েছিল নয়াপল্টন এলাকায়। খুব সাধারণ মানুষ আশা করছিলেন, এ উৎসবের পরিবেশ যদি বজায় থাকে, বিরোধী দল তথা বিএনপি যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে, তা হলে দেশে একটি সুষ্ঠু, রাজনৈতিক ধারার সূচনা হবে। হ্যাঁ, এটা সত্য যে, এই বিপুল পরিমাণ লোক সমাগমের ফলে নয়াপল্টন এলাকায় যান চলাচল বিঘিœত হয়েছিল। যেভাবে আওয়ামী লীগ অফিস এলাকায় যান চলাচল বিঘিœত হয়েছিল এখানেও তাই ঘটেছিল। মানুষ এ উৎসবের পরিবেশকে স্বাগত জানিয়েছিল। কিন্তু তৃতীয় দিনে এসে হঠাৎ করেই পুলিশ বিএনপির কর্মী-সমর্থকের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। আওয়ামী লীগের লোক সমাগম হয়, ভালো, কিন্তু বিএনপির মনোনয়ন সংগ্রহে কেন এত লোকের সমাগম হবে। এটা সরকার সহ্য করতে পারছিল না। এখন উপায়! তখন সরকার নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে একটি ঘোষণা দিয়ে দিলো, মনোনয়নপত্র সংগ্রহ বা জমাদানের জন্য কোনো শোডাউন করা যাবে না। এটা বন্ধ করার জন্য নির্বাচন কমিশন থেকে পুলিশকে আদেশ দেয়া হয়। আর সে আদেশ পালনের জন্যই গত ১৪ নভেম্বর পুলিশ নয়াপল্টনে হামলা চালায়। সকাল থেকেই সে এলাকায় শত শত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এরপর বেলা ১টার দিকে পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলে পড়ে। তারা নির্বিচারে লাঠিচার্জ, ছড়রা গুলি ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করতে থাকে। ফলে আহত হন বেশ কিছু কর্মী-সমর্থক। তাদের সাথে সঙ্ঘাত বেধে যায় পুলিশের।
তখন সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন উঠল, আওয়ামী লীগ যখন মনোনয়নপত্র বিক্রি ও জমাদান শুরু করল তখন ব্যাপক শোডাউন হলো, রাস্তাঘাট বন্ধ থাকল এবং দু’টি নিরপরাধ কিশোর খুন পর্যন্ত হলো, তারপরও নির্বাচন কমিশন এমন কোনো পরিপত্র জারি করল না বা নির্দেশ দিলো না। আর বিএনপির এখানে লোকসমাগম দেখে সরকারসহ নির্বাচন কমিশন যেন ভীত হয়ে পড়ল। তারা পুলিশকে অমন একটি নির্দেশ দিলো। এ দিকে আবার আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দলীয় মনোনয়ন প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করার জন্য গণভবনে ডেকে নিলেন। সেটা তো দলীয় কার্যক্রম করার জন্য নয়। এটা তো আচরণবিধির চরম লঙ্ঘন। তবুও চুপ করে আছে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জনমতের চাপে নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন জানালেন, বিএনপি অফিসের সামনে যে শোডাউন হচ্ছে তা আচরণবিধি লঙ্ঘন নয়। আগের দিন এক তিক্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি করলেন, পরের দিন এমন ঘোষণা দিলেন। তারপর গত বৃহস্পতিবার আবার উৎসবমুখর হয়ে উঠেছে নয়াপল্টন এলাকা। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব নিয়েছেন বিএনপির ভলান্টিয়াররা। তারা যান চলাচলের জন্য রাস্তার একাংশ খোলা রেখেছেন নিজেদের উদ্যোগেই। অর্থাৎ দল হিসেবে বিএনপি নিজেদের সুশৃঙ্খল হিসেবে প্রমাণ করেছে। বৃহস্পতিবার পুলিশ ছিল দূরে। সঙ্ঘাতের পরিবেশ আর হয়নি।
এ দিকে নির্বাচন কমিশন আরেক কাণ্ড করেছে। তারা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করার ব্যবস্থা করেছে। একজন নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, সংবাদমাধ্যমগুলোকে সরাসরি সম্প্রচার করতে দেয়া হবে না। তিনি বলেছেন, সাংবাদিকেরা নির্বাচনী কর্মকর্তাদের অনুমতি নিয়ে মাত্র পাঁচ মিনিটের জন্য নির্বাচন কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন। তার বেশি তারা কেন্দ্রের ভেতরে থাকতে পারবেন না। এ-ও এক ষড়যন্ত্রের আভাস। সাংবাদিকদের সরিয়ে দিয়ে ভেতরে যে পাইকারি হারে সিল মারা হবে না, তার নিশ্চয়তা কে দেবে? নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশ্য সম্ভবত সেটাই। সরকারি দলের লোকেরা গণহারে সিল মারবে, সে পথে যেন কেউ বাধা হয়ে উঠতে না পারে। অর্থাৎ নির্বাচন কমিশন নিজেই স্বচ্ছতার পথ রুদ্ধ করার চেষ্টা করেছে। সে কারণে ১৪ দল ছাড়া বাকি সব রাজনৈতিক দল একযোগে সংশয় প্রকাশ করছে যে, এ নির্বাচন কমিশন দিয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অসম্ভব। তবে নির্বাচন কমিশনকে মনে রাখতে হবে, গগনে চাঁদ উঠলে কোনো কিছু দিয়েই জোয়ারের পানি ঠেকানো যায় না। হ
লেখক : সাংবাদিক ও সাহিত্যিক
rezwansiddiqui@yahoo.com

 


আরো সংবাদ



premium cement