১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

স্ম র ণ : পণ্ডিত হরপ্রসাদ শাস্ত্রী

-

হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর জন্ম নৈহাটি, পশ্চিমবঙ্গ, ৬ ডিসেম্বর ১৮৫৩। পণ্ডিত, সাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ। আট বছর বয়সে বাবার মৃত্যু ঘটলে আর্থিক সঙ্কটে পড়ে টিউশনি করে লেখাপড়ার ব্যয়নির্বাহ করেন। ১৮৬৬-তে কলকাতা সংস্কৃত কলেজে ভর্তি হন। ১৮৭১-এ প্রথম বিভাগে এন্ট্রান্স, ১৮৭৩-এ ১৯তম স্থান অধিকার করে প্রথম বিভাগে এফএ, ১৮৭৬-এ অষ্টম স্থান অধিকার করে বিএ পাস। বিএ পরীক্ষায় সংস্কৃতে প্রথম হওয়ায় প্রতি মাসে ৫০ টাকা ‘সংস্কৃত কলেজ স্নাতক বৃত্তি’, ৫ টাকা ‘লাহা বৃত্তি’ এবং ‘রাধাকান্ত দেব মেডেল’ লাভ। ১৮৭৭-এ একই কলেজ থেকে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করে সংস্কৃতে এমএ ডিগ্রি অর্জন এবং কৃতিত্বের জন্য ‘শাস্ত্রী’ উপাধি লাভ করেন। ১৮৭৮ সালে হেয়ার স্কুলের শিক্ষক নিযুক্ত। ১৮৮৩ সালে সংস্কৃত কলেজে সহকারী অধ্যাপক নিযুক্ত হন। একই বছর বঙ্গীয় সরকারের সহকারী অনুবাদকের পদে যোগ দেন। ১৮৮৬ সালের জনশিক্ষা বিভাগের অধীনে বেঙ্গল লাইব্রেরির গ্রন্থাগারিক পদে এবং ১৮৯৫ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজের সংস্কৃতের প্রধান অধ্যাপক পদে যোগদান। ১৯০০ পর্যন্ত এ পদে দায়িত্ব পালন। একই বছর ৮ ডিসেম্বর সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ এবং বঙ্গদেশের সংস্কৃত পরীক্ষার রেজিস্ট্রার হন। ১৯০৮ সালে অবসর নেন। এরপর ইতিহাস, ধর্ম, সংস্কৃতি ইত্যাদি সম্পর্কে সরকারি কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য গঠিত সরকারি ব্যুরো অব ইনফরমেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। ১৯২১ সালের ১৮ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ও সংস্কৃত বিভাগের অধ্যক্ষ নিযুক্ত। ১৯২৪-এর ৩০ জুন অবসর নেন। বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সহসভাপতি ও সভাপতি। এশিয়াটিক সোসাইটির সভাপতি হিসেবে ভারতের বিভিন্ন স্থান এবং নেপাল ও তিব্বত থেকে বহু দু®প্রাপ্য পুঁথি সংগ্রহ। ঢাকা মিউজিয়ামের কিউরেটর। লন্ডন এশিয়াটিক সোসাইটির অনারারি সদস্য। বাংলা ভাষায় প্রথম গ্রন্থ ‘চর্য্য বিনিশ্চয়’ নেপালের রাজদরবার থেকে সংগ্রহ করে ১৩২৩ বঙ্গাব্দে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ পত্রিকায় প্রকাশ এবং বাংলা ভাষার প্রাচীনত্ব প্রমাণ। চর্যাপদ আবিষ্কার ও প্রকাশিত হওয়ার পরই পণ্ডিতেরা সিদ্ধান্তে পৌঁছেন, বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ঐতিহ্য হাজার বছরের পুরনো। বিএ ক্লাসে অধ্যয়নকালেই ‘ভারত মহিলা’ প্রবন্ধ রচনা করে হোলকার পুরস্কার লাভ। উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ : বাল্মীকির জয়, মেঘদূত ব্যাখ্যা কাঞ্চনমালা (উপন্যাস), হাজার বরের পুরাণ বাঙ্গালা ভাষায় বৌদ্ধ গান ও দোহা, বেণের মেয়ে (উপন্যাস), প্রাচীন বাংলার গৌরব, বৌদ্ধধর্ম। ইংরেজি গ্রন্থ : Vernacular Literature of Bengal Before the Introduction of English Education, Discovery of Living Buddhism in Bengal, Magadhan Literature, Sanskrit Culture in Modern India। হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ছিলেন শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক, বহু ভাষাবিদ, দার্শনিক, প্রতœতত্ত্ববিদ ও ঐতিহাসিক। প্রাচীন সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ইতিহাসের বহু নতুন তথ্য আবিষ্কারের জন্য তার অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। ১৮৯৬-তে ‘মহামহোপাধ্যায়’ এবং ১৯১১-তে সি,আই,ই উপাধি লাভ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি-লিট উপাধিতে ভূষিত ১৯২৭ সালে। মৃত্যু ১৭ নভেম্বর ১৯৩১। হ

 


আরো সংবাদ



premium cement