২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দৃষ্টিপাত : শিক্ষিত যুবক সফল কৃষি-উদ্যোক্তা

-

কৃষিতে এক অপার সম্ভাবনার এই বাংলাদেশ। যে দেশের মাটিকে সোনার সাথে তুলনা করা হয়। সে মাটির অতল গহ্বরে সোনার খনি না থাকলেও সোনার ফসল ফলাতে এ মাটির উর্বরতা অতুলনীয়। এই উর্বরতা একটি অপরিপক্ব বীজকেও সময়ের আবর্তনে ফুলে-ফলে পরিপূর্ণ সমৃদ্ধ বৃক্ষে পরিণত করে। এ দেশের ৮০ শতাংশ প্রান্তিক কৃষকের আশার আলো সঞ্চারিত হয় কৃষিকে কেন্দ্র করে। উন্নত বিশ্বের দেশগুলো শিল্পনির্ভর হলেও আমাদের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো এখনো কৃষিকে ঘিরেই অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির স্বপ্ন দেখে। কৃষিতে নতুন প্রযুক্তি, উন্নত ও মানসম্মত বীজ এবং কীটনাশক ও রাসায়নিক সার নতুন মাত্রা যোগ করেছে। দেশের বিভিন্ন অংশে খাল খনন ও উন্নত সেচব্যবস্থা কৃষিতে এনে দিয়েছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। এ জন্যই আগেকার দিনে বিঘাপ্রতি যে পরিমাণ ফসল উৎপাদিত হতো, এখন তার পরিমাণ কয়েক গুণ বেশি। এক ফসলি জমিগুলো তিন ফসলি জমিতে রূপ নিয়েছে। তবুও দেশের শিক্ষিত যুবকদের একটি বৃহৎ অংশ বেকারত্বের অভিশাপ নিয়ে হতাশায় নিমজ্জিত। চাকরির পেছনে দৌড়াতে দৌড়াতে তারা দিশেহারা। শিক্ষিত যুবসমাজের কৃষিতে আত্মনিয়োগের মধ্য দিয়েই নতুন দিগন্তের দ্বার উন্মোচন সম্ভব। বর্তমানে আমাদের দেশে শিক্ষিত কৃষি-উদ্যোক্তার অভাব নেই। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে চাকরির পেছনে না ছুটে অর্জিত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে তারা হয়েছেন একেকজন সফল কৃষি-উদ্যোক্তা। তাদের সেই জমি বা খামারে সৃষ্টি করেছেন বড় কর্মসংস্থানের সুযোগ। এ দেশের মাটি, পানি ও বায়ু কৃষির জন্য আশীর্বাদ। যারা কৃষিকে ভালোবেসে নিজের মেধা ও শ্রমকে অকাতরে বিলিয়ে দিয়েছেন, কৃষিও তাদের দু-হাত ভরে দিয়েছে। মওসুমি ফল-ফুল ও ফসল তাদের ভাগ্যের চাকাকে বদলে দিয়েছে। হাঁস-মুরগি বা গরু-ছাগলের খামার করার মধ্যে দিয়ে হাজারো বেকার যুবক আজ আত্মনির্ভরশীল। তারা অন্য যুবকদের নিজেদের জন্য অনুকরণীয় ও উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে উপস্থাপন করতে সক্ষম। বিশেষ করে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ছাগলের খামার, দুগ্ধ খামার এবং গরু মোটাতাজাকরণের মধ্য দিয়ে অনেক যুবক আজ অনেক সচ্ছল। এ ক্ষেত্রে দেশীয় জাতের পাশাপাশি বিদেশী উন্নত জাতগুলো বিরাট ভূমিকা পালন করেছে। আমরা মাছে-ভাতে বাঙালি। এই মাছ চাষ করেও অনেক শিক্ষিত বেকার যুবক স্বাবলম্বী হয়েছে। শিক্ষিত বেকার যুবকেরা যদি আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে না পারে তা হলে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হতাশ হবে। জাতীয় অর্থনীতি স্তিমিত হয়ে পড়বে। তাই আসুন নিজে স্বপ্ন দেখি এবং জাতিকে স্বপ্ন দেখাই। তবেই দেশ বাঁচবে, মানুষ বাঁচবে।
লেখক : শিক্ষার্থী, সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়


আরো সংবাদ



premium cement