১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

স্ম র ণ : সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী

-

বাংলার মুসলিম জাগরণের অন্যতম অগ্রদূত, অনলপ্রবাহের কবি সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজীর মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ‘অগ্নিপুরুষ’ সিরাজী কাব্য, উপন্যাস, প্রবন্ধ এবং অনলবর্ষী বক্তৃতার মাধ্যমে পশ্চাৎপদ অবহেলিত, মুসলিম সমাজকে জেগে ওঠার আহ্বান জানিয়েছিলেন। জাতি ও সমাজের কল্যাণে উৎসর্গ করেছিলেন পুরো জীবন।
১৮৮০ সালের ১৩ জুলাই ইসমাইল হোসেন সিরাজীর জন্ম। ১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ জুলাই তিনি ইন্তেকাল করেন। জন্মের ১৭-১৮ বছরের মধ্যেই তার মধ্যে স্বাধীনতাচেতনার কাব্যিক বহিঃপ্রকাশ ঘটে। ১৯০০ সালে প্রথম কাব্য ‘অনলপ্রবাহ’ প্রকাশিত হলে সাড়া পড়ে যায়। ১৯০৮ সালে দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হলে এবং কাব্যে স্বাধীনতার বাণী প্রচার করার অপরাধে সিরাজী দুই বছরের কারাদণ্ড ভোগ করেন। কাব্যের ইতিহাসে এটি বিরল ঘটনা। সিরাজী ছিলেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের অনুপ্রেরণা। অনলপ্রবাহের প্রেরণায় সৃষ্টি হয়েছিল নজরুলের ‘অগ্নিবীণা’।
পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ জাতিকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করেছিলেন সিরাজী। সিরাজীর ঘটনাবহুল জীবন ছিল শাশ্বত সংগ্রামের প্রতীক। সিরাজী যে অমর সাহিত্য রচনা করেন; তার সাথে আমাদের নতুন প্রজন্মের পরিচয় নেই। সিরাজী নারীশিক্ষার অগ্রপথিক ছিলেন। অর্জিত অর্থ তিনি অকাতরে বিলিয়ে দিতেন শিক্ষার জন্য। তিনি অসাম্প্রদায়িক রাজনীতিক ও সমাজ সংস্কারক। তুরস্কে গিয়ে তিনি মুসলমানদের পক্ষে যুদ্ধ করেছেন। কৃষিকাজে ঋণদানব্যবস্থার প্রবক্তা ছিলেন। জাতীয় জীবনের চরম দুর্দিনে তাকে বড়ই প্রয়োজন। জাতীয়ভাবে তার জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা ছাড়াও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় তার সাহিত্যকর্মকে তুলে ধরতে হবে। সিরাজীর সাহিত্যকর্মকে পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্তি করা উচিত।
সিরাজী মোট ৩২টি গ্রন্থ রচনা করেন। তার জীবদ্দশায় ছয়টি কাব্য, চারটি উপন্যাস ও কয়েকটি প্রবন্ধগ্রন্থ প্রকাশিত হলেও বাকিগুলো এখনো অপ্রকাশিত। তার মৃত্যুতে তুরস্কের জাতির পিতা কামাল আতাতুর্ক, নেতাজী সুভাস চন্দ্র বসুসহ বিখ্যাত ব্যক্তিরা শোকবার্তা পাঠিয়েছিলেন পরিবারের কাছে। সিরাজীর সাহিত্যকর্ম চর্চা, লাইব্রেরি ও স্মৃতি জাদুঘর গড়ে তোলার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে ১৮ শতক জমি ওয়াকফ করে দেয়া হয়েছে। হ

নুরুল ইসলাম রইসী


আরো সংবাদ



premium cement