জাতির প্রত্যাশা পূরণে ছাত্রশিবিরকে দৃঢ় পথচলা অব্যাহত রাখতে হবে : জামায়াত আমির

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, রাষ্ট্র ও সমাজে অসৎ নেতৃত্বের ফলাফল কতটা ভয়ঙ্কর ও দুর্বিসহ হতে পারে জাতি আজ তা প্রতিদিনই দেখছে। মূলত দেশের চলমান সংকট ও অশান্তির মূল কারণ নীতি ও আদর্শহীন নেতৃত্ব। যারা দেশের সমস্যা সমাধান ও জাতির প্রত্যাশা পূরণে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। এ অবস্থায় জাতি সৎ যোগ্য ও আদর্শিক নেতৃত্বের প্রয়োজনীয়তা গভীরভাবে অনুভব করছে। তাই প্রত্যাশিত নেতৃত্ব গঠনের মাধ্যমে জাতির প্রত্যাশা পূরণে ছাত্রশিবিরের সুদৃঢ় পথচলা অব্যাহত রাখতে হবে।

আজ শুক্রবার রাজধানীর এক মিলনায়তনে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের ২০২০ সেশনের প্রথম সাধারণ অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জেনারেল সালাহউদ্দিন আইউবীর পরিচালনায় অধিবেশনে আরো উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, মোহাম্মদ শাহজাহান, সেলিম উদ্দিন ও ড. মোবারক হোসাইনসহ কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের নব নির্বাচিত ও মনোনিত সদস্যরা।

জামায়াত আমির বলেন, জাতি ইতিহাসের ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। দেশে এখন চরম রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সংকট বিরাজ করছে। অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসে দীর্ঘদিন ধরে একটি সরকার দেশের জনগণের ওপর চেপে বসে আছে। সরকারের অদক্ষতা ও নীতিহীনতার কারণেই দেশের মানুষ আজ দ্বিধা বিভক্ত। সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়েছে। দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক ও বাকস্বাধীনতা নেই। মাদক, সন্ত্রাস, অপসংস্কৃতি ও অপকর্মে সরকারের মদদের কারণে দেশের ছাত্র ও যুবসমাজের বিরাট অংশ আজ ধ্বংসের পথে। আর এসবের ভয়াবহ প্রতিফলন ঘটছে ধর্ষণ, খুনসহ নানা নৃশংস ঘটনার মাধ্যমে। ক্যাম্পাসগুলোতে ছাত্রলীগের তাণ্ডব, মাদক, চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজি ও ভিন্নমতের ছাত্রদেরকে বিতাড়ন অব্যাহত আছে। জাতীয় নেতৃবৃন্দসহ বিরোধীমতের নেতাকর্মীদের উপর রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে নির্বিচারে জুলুম নির্যাতন ও অবিচার করা হচ্ছে। সার্বিক অপশাসনে জাতি আজ চরমভাবে হতাশ। এভাবে চলতে থাকলে অচিরেই এদেশ ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, যা হবে জাতির জন্য দুঃখজনক।

তিনি শিবিরের কার্যকরী পরিষদের উদ্দেশ্যে বলেন, আগামী দিনগুলো দেশ ও জাতির জন্য অধিক গুরুত্বপূর্ণ সময়। এ অবস্থায় ছাত্রশিবিরের প্রতিটি নেতাকর্মীকে অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় আরো বেশি দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। জনগণের অধিকার আদায় ও প্রতিষ্ঠায় সর্বোচ্চ ত্যাগের মানসিকতা নিয়ে ময়দানে থাকতে হবে। প্রতিটি ছাত্রের কাছে ইসলামের সুমহান আদর্শের বাণী পৌঁছে দেয়ার কাজ আরো গতিশীল করতে হবে। শত প্রতিকূলতার মধ্যেও যোগ্যতা ও নৈতিকতার ভিত্তিতে জাতির কাঙ্খিত নেতৃত্ব তৈরির কাজ অব্যাহত রাখতে হবে। প্রতিটি জনশক্তিকে আদর্শের মূর্তপ্রতিকরূপে গড়ে তুলতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা তাদের লক্ষ্য উদ্দেশ্য সম্পর্কে সচেতন এবং আত্মবিশ্বাসী। খুন, গুম, জুলুম চালিয়ে ছাত্রশিবিরের মত আদর্শিক ও জনপ্রিয় সংগঠনের গতিরোধ করা যাবে না। আল্লাহর ওপর আস্থা রেখে ঐকান্তিকতা ও আন্তরিকতার সাথে অর্পিত দায়িত্ব পালন করে যেতে হবে। প্রত্যেক জনশক্তিকে যোগ্য করে গড়ে তোলার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাতে হবে। ইসলামের আদর্শ মর্মবাণী ও চারিত্রিক মাধুর্য দিয়ে ছাত্রসমাজকে দ্বীনের পথে আহ্বান জানাতে হবে।

প্রেস বিজ্ঞপ্তি