২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
তারেক রহমানের জন্মদিন উদযাপিত

দেশের মানুষ এখন খোলা জেলে বন্দী : মির্জা আব্বাস

দেশের মানুষ এখন খোলা জেলে বন্দী : মির্জা আব্বাস - ছবি : সংগৃহীত

কেক কেটে নয়, দোয়া মাহফিল ও সামাজিক কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্মদিন উদযাপন করেছে বিএনপি। বুধবার সকালে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তারেক রহমানের ৫৫তম জন্মদিন উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী যুব দল ও জাতীয়তাবাদী ছাত্র দলসহ বিভিন্ন সংগঠন দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের মধ্য দিয়ে তারেকের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে।

১৯৬৫ সালের এই দিনে তারেক বগুড়ায় জন্মদিন গ্রহন করেন। ২০০৭ সালে ১/১১ পরিবর্তনের পর ততকালীন সেনা সমর্থিত ফখরুদ্দিন আহমেদের সরকার তারেককে গ্রেপ্তার করে এবং তার বিরুদ্ধে কয়েকটি দুর্নীতি মামলা দেয়। গ্রেপ্তারের পর গুরুতর অসুস্থ হলে সুপ্রিম কোর্টের জামিনে তারেক চিকিতসার জন্য লন্ডনে যান স্বপরিবারে।

সকালে যুব দলের দোয়া মাহফিলে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, সুদুর প্রবাসে অবস্থারত আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। এখানে শুধু আমি নই, আমার রাজনৈতিক সহকর্মীরাও তার প্রতি শুভেচ্ছা জানাচ্ছে। আমরা দোয়া করবো আল্লাহ‘তালা যাতে তাকে সুস্বাস্থ্যে দীর্ঘদিন নেক হায়াত দান করেন।

তারেক রহমান জন্ম নিয়েছেন-এটা আমাদের জন্য আনন্দের। এই দিনটা একজন মানুষের জীবনে সকল সময়েই আসে, কেউ পালন করে সরবে, কেউ পালন করে নিরবে। আমাদের সরবে পালন করার কথা ছিলো। অনেক উতসাহ, অনেক উদ্দীপনা। আমার তো মনে হয়, সারা বাংলাদেশে অন্ততঃ কয়েক‘শ কেক এই মুহুর্তে কাটার কথা ছিলো। কিন্তু তারেক রহমান সাহেব এটা নিষেধ করেছেন। এই মুহুর্তে এই ধরনের অনুষ্ঠান চাচ্ছেন না। সবচেয়ে বড় কথা আমাদের নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এখন কারান্তরালে, হাসপাতালে অবস্থান করছেন। তার যে বর্তমান অবস্থা কেমন সেটা জানার অধিকার বর্তমানে বাংলাদেশের জনগনের অধিকার নেই। এই সরকার এটাকে ধামাচাপা দিয়ে রেখেছে।

তিনি বলেন, একদিনে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারাবন্দি আর অন্যদিকে আমরা সারাদেশে মানুষ একটা খোলা জেলে বন্দি আছি। উপরের আকাশ খোলা, বাতাসও পাওয়া যাচ্ছে কিন্তু আমরা বন্দি আছি। যুব দলের বর্তমান ও সাবেক নেতারা এখানে আছে, আপনারা কী ‍ভুলে গেছেন এমনই একটা সময় ছিলো ৯০-৯১ বা তার আগে এই যুব দলই নেতৃত্ব দিয়ে স্বৈরাচারী এরশাদকে ক্ষমতাচ্যুত করেছিলো। আজকে তারেক রহমানের জন্মবার্ষিকীতে আপনাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই-যুব দলের ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনুন, এই দেশকে আবারো স্বাধীন ও সার্বভৌম থাকতে সাহায্য করুন।আমি বিশ্বাস করি, যুব দল ঠিকভাবে কাজ করলে পরিবর্তন আসবে

স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, এই দোয়া মাহফিলের মধ্য দিয়ে অনেকটাই নিরবে আমাদের নেতা তারেক রহমানের জন্মদিন পালন করছি। কিন্তু সবকিছু নিরবে যদি উপেক্ষা করি আমরা আমাদের দায়িত্ববোধগুলো তাহলে হয়তো অনাদিকাল পর্যন্ত আমরা এমনিভাবে জন্মদিন পালন করব। কখনো আন্দন নিয়ে জন্মদিন বলতে যে উচ্ছাস, সেই উচ্ছাস নিয়ে আমাদের বিলিন হয়ে যাবে। আমরা আছি একটি দ্বন্দ্বের মধ্যে নেত্রীর মুক্তি প্যারোলে না জামিনে। কিন্তু নেত্রীর মুক্তি যে রাজপথে হয়-এই কথাটা কেনো জানি আমরা বিবেচনায় নিচ্ছি না। কি কারণে জানি দোয়া মাহফিল, মানববন্ধনের মধ্য দিয়ে আর প্যারোল ও জামিনের তর্ক-বিতর্কের মধ্যে দিয়ে সীমাবদ্ধ রাখছি। আমার মনে হয়, গণতন্ত্রের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আমাদের কাছ থেকে এই ধরনের আচরণ প্রাপ্য নয়। আমরা যদি খালেদা জিয়ার জন্য আন্দোলন করতে গিয়ে যদি লক্ষ লোক জেলে যাই- সেটি্ই হবে যথার্থ সন্মান প্রদর্শন করা, আমরা যদি রাজপথে গুলি খেয়ে মারা যাই সেটাই হবে জাতীয়তাবাদী শক্তির নেত্রী খালেদা জিয়ার প্রতি সর্বোচ্চ মর্যাদা প্রদর্শন করা। আসুন আমরা রাজপথ দখল করার প্রত্যয়ে সবাই সরব্ হই।

দলের ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আজকে কারাগারে। আমাদের নেতা তারেক রহমান আমাদেরকে নিদের্শ তার জন্মদিনে কেক কাটা যাবে না, আন্দন করা যাবে না। আমরা আজকে তার দীর্ঘায়ু কামনা করে দোয়া মাহফিল করছে। আপনারা জানেন স্বৈরশাসক শাহ পাহলবীর আমলে আয়াতুল্লাহ খোমনীকে প্যারিসে নির্বাসিত থাকতে হয়েছিলো, তার বক্তৃতা ও ছবি ওই সময়ে ইরানে নিষিদ্ধ ছিলো। প্যারিস থেকে খোমেনী যেভাবে বিপ্লব সংঘটিত করে তেহরনানের মাটিতে নেমেছিলেন, তারেক রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশেও অচিরেই বিপ্লব সংঘটিত হবে এবং বিপ্লবের মধ্য দিয়ে তিনি বাংলাদেশে ফিরে আসবেন, এবং দেশের শাসনভার গ্রহন করবেন। দেশে সুশাসন, অর্থনৈতিক মুক্তি, আধিপত্যবাদ-সম্প্রসারণবাদের হাত থেকে দেশ রক্ষা পাবে বলে আমরা এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি।

জাতীয়তাবাদী যুব দলের সভাপতি সাইফুল আলম নিরব ও সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকুর পরিচালনায় দোয়া মাহফিলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমূথ বক্তব্য রাখেন। দোয়া মাহফিলে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, যুবদলের মোরতাজুল করীম বাদরু, নুরুল ইসলাম নয়ন, মামুন হাসান, এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন, রফিকুল আলম মজনু, শফিকুল ইসলাম মিল্টন, গোলাম মাওলা শাহিন সহ বিভিন্ন নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এরআগে সকালে ঢাকা মহানগর বিএনপির কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল ঢাকা মহানগর উত্তরের উদ্যোগে দুঃস্থ ছাত্রদের মধ্যে বস্ত্র বিতরন করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল রিজভী। এই সময় স্বেচ্ছাসেবক দলের শফিউল বারী বাবু, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, মোস্তাফিজুর রহমান, গোলাম সারোয়ার, ফখরুল ইসলাম রবিন, গাজী রেজওয়ান-উল হোসেন রিয়াজ প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।

তারেক রহমানের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেয় নেতা-কর্মীরা।

বাদ জোহর নয়া পল্টনে জাতীয়তাবাদী ছাত্র দলের উদ্যোগে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, ছাত্র দলের সভাপতি ফজলুর রহমান শ্যামল, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল প্রমূখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল