১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আবরারের তালাবদ্ধ রুমের আশপাশ শুনশান নীরবতা

আবরারের তালাবদ্ধ রুমের আশপাশ সুমসাম নীরবতা - ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শেরেবাংলা হলে অনেকটা সুমসাম নীরবতা বিরাজ করছে। গত সোমবার থেকেই নিহত আবরার ফাহাদের ১০১১ নম্বর রুমটি তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। এ সময় কর্তব্যরত নিরাপত্তারক্ষী, ক্যান্টিনের দায়িত্বে থাকা কেউ এ বিষয়ে কথা বলার আগ্রহ দেখাননি।

দুপুরের দিকে দেখা যায়, আবরার ফাহাদের তালাবদ্ধ রুমের ছবি তুলছেন ফটোসাংবাদিকরা। রুমের গেটের ওপরের পাশের একটি অংশ খোলা। ওই খোলা অংশ দিয়ে রুমের ভেতরের ছবি তুলতে দেখা যায় অনেককে। হলের ডাইনিং, ক্যান্টিন খোলা থাকলে প্রভোস্ট, সহকারী প্রভোস্ট ও অফিস কক্ষ তালাবদ্ধ দেখা যায়।
দেখা যায় ক্যান্টিনের ভেতরে হাতেগোনা কয়েকজন ছাত্রকে আড্ডা দিতে।

ক্যান্টিনের দায়িত্বরত বিক্রেতা সোহরাব হোসেনের কাছে মেধাবী ছাত্র আবরার খুনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে হত্যার পর হলের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি শুধু বলেন, বুয়েটে মোট সাতটি হল রয়েছে। প্রতিটা হলেই একটি করে ক্যান্টিন আছে। আবরার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখানে প্রতিদিন অনেকেই আসে। সেই হিসাবে সেও আসত। তারা খাওয়া-দাওয়া করে আবার চলে যেত। আমি ব্যবসায় নিয়ে ব্যস্ত থাকি সারাক্ষণ। তাই ঠিক সবার খোঁজ তেমন একটা রাখতে পারি না। এ সময় একটি প্রিন্ট মিডিয়ার এক কর্মী ক্যান্টিন বিক্রেতার ছবি তোলেন। তখন তিনি জানতে চান তার ছবি কেন তোলা হচ্ছে। তখন ওই মিডিয়াকর্মী তাকে শুধু বলেন, কোনো সমস্যা নাই। একইভাবে শেরেবাংলা হলের গেট দিয়ে বের হওয়ার সময় প্রধান গেটের সামনে সাদা পোশাকে চেয়ারে বসে থাকা এক যুবকের ছবি তুললে তখন ওই যুবকও জানতে চান তার ছবি কেন তোলা হচ্ছে। পরক্ষণেই মিডিয়া কর্মীকে ওই যুবক বলেন, তোলেন আমার ছবি। আমি এসবে ভয় পাই না।

উল্লেখ্য, গত রোববার রাতে আবরার ফাহাদকে তার ১০১১ নম্বর রুম থেকেই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ডেকে নিয়ে যান হলের দোতলার ২০১১ নম্বর রুমে। এরপর সেখানে তাকে হকিস্টিক দিয়ে মধ্যরাত পর্যন্ত পিটিয়ে চ্যাং দোলা করে কয়েক যুবক একতলা ও দোতলার মাঝখানের সিঁড়ির মধ্যে ফেলে যায়। একপর্যায়ে বিনা চিকিৎসায় আবরার সেখানেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। এ ঘটনার পর হলের ছাত্ররা ফুঁসে ওঠেন। তারা দীর্ঘ দিন ধরে হলে ছাত্রলীগের হাতে নাজেহাল ও নির্যাতনের ভয়াবহ তথ্য সাংবাদিকদের কাছে দিতে শুরু করেন।

এ সময় আবরারের রুমের পাশের এক ছাত্র ভয়ে ভয়ে এ প্রতিবেদককে শুধু বলেন, আবরার মারা যাওয়ায় ছাত্রলীগের কুকীর্তিগুলো প্রকাশ পাচ্ছে। কিন্তু এত দিন ধরেই ফেসবুকে লাইক কমেন্ট দেয়ার ঘটনায়ও তারা ডেকে নিয়ে শাসাতেন। গুনে গুনে চড়থাপ্পড় দিতেন। শুধু তাই নয়, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হলের ২০০৫ নম্বর রুমে দু-এক দিন পর পর বিচার সালিশ বসানো হতো। চলত মদের আড্ডা। তাদের অত্যাচার সবাই নীরবে সহ্য করেছে এতদিন সাধারণ ছাত্ররা।


আরো সংবাদ



premium cement