যুবলীগ চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি করল মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ
- অনলাইন প্রতিবেদক
- ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৫:৪৯, আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৬:৪৪
রাষ্ট্রকে হুমকি প্রদান করার অপরাধে এবং সাংগঠনিক ব্যর্থতার দায়ভার নিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীকে পদত্যাগ জরার দাবি জানিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।
শনিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ দাবি জানায়। সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের বিভিন্ন পর্যায়ে নেতারা উপস্থিত ছিলেন। একই সময় বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদেরও পদত্যাগের দাবি জানায় সংগঠনটি।
সংবাদ সন্মেলনে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি অধ্যাপক ড. আ ফ ম জামাল উদ্দীন জানান, কারো ব্যক্তিগত অপকর্ম অনিয়ম দুর্নীতির দায়ভার দেশেরত্ন শেখ হাসিনা নিবেন না। বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ ১৯৭২ সালের ১১ নম্বর বঙ্গবন্ধু প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ ফজলুল হক মনি। যুবলীগ অনুপ্রবেশকারী হাইব্রিড নেতারা দলের নাম ভাঙ্গিয়ে অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর খোলস পাল্টিয়ে বিএনপি নেতা থেকে যুবলীগ নেতা বনে যাওয়া জিকে শামীমরা একের পর এক টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, হত্যা ইত্যাদি করে শেখ হাসিনার উন্নয়নমূলক কাজগুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছে। এদের আশ্রয়দাতা কারা?
এদেরকে দলে কে জায়গা দিয়েছে? ঢাকা শহরে অবৈধভাবে ক্যাসিনো ব্যবসা, মাদক ব্যবসা, টেন্ডারবাজি, কমিটি বাণিজ্য করে যুবসমাজকে ধ্বংস করার চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে। এরা কখনোই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার চর্চা করে না। এরা টাকা দিয়ে পদ নিয়ে নানা অপকর্ম করে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন। দুর্নীতিবাজদের জায়গা বাংলাদেশ হবে না। সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের বিভিন্ন অপকর্মের খবর প্রকাশিত হয়েছে। বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এর অঙ্গসংগঠন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্রের অফিসকে অবৈধভাবে দখল করে জুয়ার আসর বসিয়ে বিভিন্ন অপকর্মের মাধ্যমে দলীয় আদর্শ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে বেইমানি করা হয়েছে।
সম্প্রতি সরকারের নির্দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান চলমান রয়েছে। আমরা সরকারের কাছে দাবী জানাই এ অভিযান যেন নিয়মিত অব্যাহত থাকে। দুর্নীতি-অনিয়ম সমাজ থেকে নির্মূল করতে হবে। আইন শৃংখলারক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেফতার কৃত যুবলীগ নেতার নাম ভাঙ্গিয়ে এসব অপকর্ম দীর্ঘদিন ধরে করে আসছে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি। বিভিন্ন কর্মসূচি তারা একসাথে পালন করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি। সুসময়ে একসাথে কাজ করলে কিন্তু গ্রেফতারের পর তাদের আর চিনতে পারলেন না।
তিনি বলেন, আমরা লক্ষ্য করলাম জি কে শামীম ভূঁইয়াকে গ্রেফতারের আগে যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী গণমাধ্যমে উদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, যুবলীগের কেউ গ্রেপ্তার হলে আমরা বসে থাকব না। এ ধরণের বক্তব্য দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ। শেখ হাসিনার চোখকে আর ফাঁকি দিতে পারবেন না। যথেষ্ট হয়েছে এবার পদত্যাগ করুন।
২০১২ সালে যুবলীগের কমিটি হয়েছে। এ কমিটি অনেক বছর আগের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে। কেন্দ্রীয় সম্মেলন না করার কারণ কি? নিয়মিত নেতৃত্বে পরিবর্তন না হওয়ার কারণে তারা অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক হারুন-অর-রশিদ বিতর্কিত নেতাদের এসব অপকর্মের দায়ভার কোনোভাবেই এড়াতে পারেন না ব্যর্থতার দায়ভার নিয়ে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। চেয়ারম্যান সাধারণ সম্পাদক এবং দপ্তর সম্পাদকের সকল স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির হিসাব জানতে চাই মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।
সংগঠনের দায়িত্বশীল জায়গা থেকে তারা ভূমিকা পালন করতে ব্যর্থ হয়েছে। যুবলীগের শীর্ষ পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন ওমর ফারুক চৌধুরী এবং হারুন-অর-রশিদ। আপনারা দ্রুত পদত্যাগ করে যুবলীহের ভাবমূর্তি রক্ষা করুন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত করার জন্য বঙ্গবন্ধু কন্যার চেষ্টা সফল করতে তাদের অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত।
অন্যথায় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ জনগণের স্বার্থে দেশের স্বার্থে চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদকের অপসারণের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি প্রদান করবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা