বাজেটে মেহনতি মানুষের চাহিদার প্রতিফলন থাকতে হবে : পংকজ ভট্টাচার্য

প্রবীন রাজণীতিবিদ ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পংকজ ভট্টাচার্য বলেছেন, শ্রমজীবী মেহনতি মানুষেরাই নিজেদের রক্ত দিয়ে এই দেশ স্বাধীন করেছি। দেশের বাজেটে আমাদের সকল মানুষের চাহিদার প্রতিফলন থাকতে হবে। কিন্তু গরিব, মেহনতি ও নিম্ম আয়ের মানুষের জন্য কোনো বাজেট হয় না।

‘জাতীয় বাজেট ও নগরের বস্তিবাসী নিম্ম আয়ের মানুষের ভাবনা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি একথা বলেন। বেসরকারি উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক ও পরিবেশবাদী সংগঠন পবা যৌথভাবে গতকাল এই বাজেট বৈঠক আয়োজন করে।

পবা চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট রাজনৈতিক নেতা ঐক্যন্যাপের পংকজ ভট্টাচার্য আরো বলেন, বাজেট হয় কালোটাকার মালিক, হারামখোর আর ধনীদের স্বার্থে। সংবিধান থেকে শুরু করে নির্বাচনী ইশতেহার সর্বত্র গরিব মেহনতি মানুষের উন্নয়নের উপর বেশি জোর দেয়া হয়েছে। কিন্তু এখনও শহরের বস্তিবাসী নিম্ম আয়ের মানুষেরা অধিকার বঞ্চিত ও নিষ্পেষিত। বস্তিবাসীদের আবাসন, শিক্ষা ও চিকিৎসা খাতের জন্য জাতীয় বাজেটে নির্দিষ্ট বরাদ্দ রাখতে হবে। প্রতিজন বস্তিবাসীর জন্য সরকারিভাবে ১০ টাকার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও পরিচয়কার্ড দিতে হবে।

পবার চেয়ারম্যান বলেন, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে কিন্তু সকল উন্নয়ন উদ্যোগ একইভাবে সকলের জন্য কাজে লাগছে না। শহর ও গ্রামের নিম্ম আয়ের মানুষরা সবচেয়ে অবহেলিত। তাই তাদের জন্য পৃথক উন্নয়ন উদ্যোগ প্রয়োজন। বিশেষ করে তাদের বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসার ব্যবস্থা। তিনি আরো বলেন, সকল বস্তিবাসীদের জন্য সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণ ও ১০ টাকায় ব্যাংক একাউন্ট খোলার দাবি জানান । আলোচনা করেন নগর দারিদ্র্য বিশেষজ্ঞ জাহাঙ্গীর আলম, গবেষক পাভেল পার্থ, বারসিক প্রতিনিধি সুদিপ্তা কর্মকার, নৃবিজ্ঞানী সৈয়দ আলী বিশ্বাস, বস্তিবাসী ইউনিয়নের নেতা কুলসুম বেগম এবং রাফেসা বেগম।

মোহাম্মদপুর বস্তির নাছিমা বেগম, ঝুমুর বেগম, নূরুজ্জামান, কুদ্দুস মিয়া প্রমুখ বৈঠকের শুরুতেই নগরের নিম্ম আয়ের মানুষের জন্য জাতীয় বাজেটে বরাদ্দের দাবিগুলো তুলে ধরেন। গোলটেবিল বৈঠক সঞ্চালনা করেন পবার সম্পাদক ফেরদৌস আহমেদ উজ্জল।

গোলটেবিল বৈঠকে নিম্ম আয়ের মানুষের জন্য জাতীয় বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ রাখতে অংশগ্রহণকারীরা নিম্মক্ত দাবিগুলো তুলে ধরেন: বস্তিবাসীদের জন্য সরকারীভাবে সহজ শর্তে আবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে, তাদের সকল কাজের ক্ষেত্রে সরকারীভাবে বেতন কাঠামো ও উৎসব ভাতা নির্ধারণ করা ও মর্যাদাপূর্ণ কাজের ব্যবস্থা করতে হবে, বস্তির শিশুদের জন্য অনুপাতিক হারে সরকারী স্কুল প্রতিষ্ঠা করা, যুবদের জন্য কর্মসংস্থান বান্ধব প্রশিক্ষন ব্যবস্থা করতে হবে, সকল বস্তিবাসীদের জন্য ভর্তুকী মূল্যে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয়ের ব্যবস্থা করতে হবে, নিম্ম আয়ের মানুষদের জন্য সহজ শর্তে সুদমুক্ত ঋণের ব্যবস্থা করতে হবে, বস্তিবাসীদের জন্য আলাদা পরিচয়পত্র বা কার্ডের ব্যবস্থা করা, নিম্ম আয়ের মানুষদের নিয়ন্ত্রণে ও তাদের উৎপাদিত পণ্যের বাজার সৃষ্টি করতে হবে। সরকারী সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী যেমন; বয়স্ক, বিধবা, মাতৃত্বকালীন, প্রতিবন্ধি ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধায় তাদের যুক্ত করতে হবে। নিম্ম আয়ের মানুষদের মালিকানায় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হবে। বিনামূল্যে তাদের জন্য চিকিৎসার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

গোলটেবিলে উত্থাপিত দাবিসমূহ্

১. বস্তিবাসীদের জন্য সরকারীভাবে সহজ শর্তে আবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে ।

২.তাদের সকল কাজের ক্ষেত্রে সরকারীভাবে বেতন কাঠামো ও উৎসব ভাতা নির্ধারণ করা ও মর্যাদাপূর্ণ কাজের ব্যবস্থা করতে হবে।

৩. বস্তির শিশুদের জন্য অনুপাতিক হারে সরকারী স্কুল প্রতিষ্ঠা করা। যুবদের জন্য কর্মসংস্থান বান্ধব প্রশিক্ষন ব্যবস্থা করতে হবে।

৪. সকল বস্তিবাসীদের জন্য ভর্তুকী মূল্যে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।

৫.নিম্ম আয়ের মানুষদের জন্য সহজ শর্তে সুদমুক্ত ঋণের ব্যবস্থা করতে হবে।

৬.বস্তিবাসীদের জন্য আলাদা পরিচয়পত্র বা কার্ডের ব্যবস্থা করা

৭. নিম্ম আয়ের মানুষদের নিয়ন্ত্রণে ও তাদের উৎপাদিত পণ্যের বাজার সৃষ্টি করতে হবে।

৮. সরকারী সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী যেমন; বয়স্ক, বিধবা, মাতৃত্বকালীন, প্রতিবন্ধি ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধায় তাদের যুক্ত করতে হবে।

৯. নিম্ম আয়ের মানুষদের মালিকানায় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হবে।

১০. বিনামূল্যে তাদের জন্য চিকিৎসার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।