১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সরকারি চাকরিতে বাধ্যতামূলক হচ্ছে ডোপ টেস্ট : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

- ফাইল ছবি

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, সরকারি চাকরিতে ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক হচ্ছে। সরকারি কর্মকর্তারা যদি মাদকাসক্ত হন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ডোপ টেস্টের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী অনুশাসন দিয়েছেন। এটা পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন হবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে। মাদকবিরোধী আইন-২০১৮ কে যুগোপযোগী করা হয়েছে। মাদকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল প্রচারণা চালানো হচ্ছে। আমাদের অঙ্গীকার মাদকের ভয়াবহতা থেকে যুবসমাজকে রক্ষা করা। এ লক্ষ্যে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

মঙ্গলবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রসঙ্গত, ২৬ জুন বুধবার মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস। ১৯৮৮ সাল থেকে জাতিসংঘের সিদ্ধান্তে এ দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। এবারের প্রতিবাদ্য বিষয় ‘সুস্বাস্থ্যই সুবিচার, মাদকমুক্তির অঙ্গীকার’। দিবসটি পালনের জন্য সরকার ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

আসাদুজ্জামান খান বলেন, সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে ডোপটেস্টের জন্য আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছি। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে অনুশাসন দিয়েছেন। এটা পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন হবে। সরকারি কর্মকর্তারাও যদি মাদকাসক্ত হন তাহলে আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সময় ডোপটেস্ট করা হবে। রক্তে যদি মাদক পাওয়া যায় তাহলে তার আবেদন বাতিল বা গ্রহণ করা হবে না।

তিনি বলেন, মাদকবিরোধী জনমত তৈরি করা হচ্ছে। মসজিদে জুমার নামাজের বয়ানে মাদকের বিরুদ্ধে সচেতন হওয়ার জন্য বলা হচ্ছে। এছাড়া, মাদকবিরোধী পোস্টার, লিফলেট টানানো হচ্ছে, টকশো করা হচ্ছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মাদক ব্যবহার বন্ধে আমরা তিনটি কর্মকৌশল নিয়েছি। এগুলো হচ্ছে- চাহিদা, সরবরাহ ও ক্ষতি হ্রাস। আমরা বিশ্বাস করি, অবশ্যই মাদক নির্মূল করতে পারবো। আগে দেশে তামাক ব্যবহার করতো ৪৩ দশমিক তিন শতাংশ মানুষ। ২০১৭ সালের জরিপে দেখা গেছে তা ৩৫ দশমিক তিন শতাংশে নেমেছে।

ভারত ও মিয়ানমার সীমান্ত মাদক নিয়ন্ত্রণে সুরক্ষিত কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে বারবার বৈঠক হয়েছে। কিন্তু কোনো কথাই কার্যকর হয়নি। আমরা তাদের বারবার অনুরোধ করেছি। তারা পাল্টা বলে আসছে এগুলো অবৈধ। আমরা চাই এ কথার বাস্তবায়ন হোক। কারণ তারা এগুলোর বিরুদ্ধে সবসময় বলে আসলেও কাজ হচ্ছে না।

তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। এখন ভারত থেকে ফেনসিডিল আনার সংখ্যা অনেক কমে গেছে। আগে ভারত থেকে যে পরিমাণ ফেনসিডিল আসতো এখন তার ৫৯ ভাগও আসে না। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে যারা ফেনসিডিল তৈরি করে তারা যাতে সেখানে সে কাজটি না করে সে বিষয়ে ভারতকে বলা হয়েছে। ভারতও সে বিষয়ে কাজ করছে। এরপরেও কিছু যে আসছে না আমি সেটা বলবো না। আমরা সেই জায়গাটিতে কাজ করছি।

অন্যদিকে ভারত ও মিয়ানমার সীমান্ত শক্তিশালী করা হয়েছে। সীমান্তে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া সীমান্তের কিছু জায়গা রয়েছে যেখানে হেলিকপ্টার ছাড়া যাওয়া যায়না। প্রধানমন্ত্রী দুটি হেলিকপ্টার কেনার অনুমতি দিয়েছেন। এই দুটি হেলিকপ্টার আসছে। মোটকথা আমরা সর্বাত্মক প্রতিষ্ঠা করবো যাতে সীমান্ত দিয়ে অবাধে মাদক না আসে।

রোহিঙ্গা সঙ্কট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের আমরা আমন্ত্রণ জানাইনি। মিয়ানমার সরকার তাদের বসত ঘর থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। মানবিক কারণে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা তাদের আসতে দিয়েছি। রোহিঙ্গাদের কারণে আমাদের বসতবাড়ি, ফসলি জমি ও বনভূমিসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং সামাজিকতা নষ্ট হয়েছে। তাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার সবসময় ভালো ভালো কথা বললেও কোনও কিছুই কার্যকর করেনি। তাদের কথায় আর কাজে কোনও মিল নেই।

রোহিঙ্গারা মাদকব্যবসা করছে এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা রোহিঙ্গাদের জীবন রক্ষার জন্য আশ্রয় দিয়েছি। এতে আমাদের দুর্ভোগ বাড়ছে। কিন্তু ইয়াবা মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসছে। তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ ব্যবসা করে থাকে। এই অবৈধ ব্যবসা পরিচালনার সময় বিজিবির সঙ্গে গুলির ঘটনা হলে বিভিন্ন দুর্ঘটনা ঘটে। কারণ সেলফডিফেন্স আইনের আওতায় নিরাপত্তা বাহিনী অস্ত্র চালায়।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বন্ধুকযুদ্ধে এ পর্যন্ত কতোজন মারা গেছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কাউকে হত্যা করেন না। বিভিন্ন উৎস থেকে আমরা যে তালিকা পাই, তা একত্রে করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে দেওয়া হয়। তখন তারা বিভিন্ন অভিযানে যান, অপরাধী চ্যালেঞ্জ করলে এই ধরনের দুঃখজনক ঘটনা ঘটে। এছাড়া যারা অবৈধ ব্যবসা করে তাদের পেশীশক্তির প্রয়োজন হয়। কিংবা তাদের অবৈধ অস্ত্রের প্রয়োজন হয়। যেখানে অবৈধ ব্যবসা আছে সেখানেই অবৈধ অস্ত্র থাকে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশের জেলখানায় ধারণ ক্ষমতা রয়েছে ৪০ হাজার হাজতির। এই মুহূর্তে হাজতি আছে ৮২ হাজার, যার অধিকাংশই মাদক ব্যবসায়ী।


আরো সংবাদ



premium cement
সখীপুরে সাংবাদিকের ওপর হামলাকারী সেই আ'লীগ নেতা কারাগারে ফরিদপুরে দুর্ঘটনায় মা-ছেলে নিহত, আহত বাবা-মেয়ে দিরাইয়ে বজ্রপাতে ২ জনের মৃত্যু বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বিশ্বমানের পাঠ্যক্রম গ্রহণের আহ্বান রাষ্ট্রপতির বগুড়ায় পুলিশ পরিচয়ে ট্রাকভর্তি কলা ছিনতাই : গ্রেফতার ৪ ওয়ালটনের আদর্শ ও নীতিমালার পরিপন্থী নাটক প্রচার করায় বিজ্ঞাপনী প্রতিষ্ঠানকে আইনি নোটিশ, চুক্তি বাতিল স্নান করতে গিয়ে দূর্গাসাগর দীঘিতে ডুবে একজনের মৃত্যু ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ককে লালন করে নতুন উদ্যমে এগিয়ে যেতে হবে : শ্রিংলা মানবতার কল্যাণে জীবন বাজি রেখে আন্দোলনে ভূমিকা রাখতে হবে : জামায়াত আমির আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধসহ আহত ৭ ফিট তামিমকে যেকোনো ফরম্যাটের দলে চান বাংলাদেশ অধিনায়ক

সকল