২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

গণফোরামকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ ড. কামালের

ড. কামাল - সংগৃহীত

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক দল গণফোরামকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছেন ড. কামাল হোসেন। দলকে শক্তিশালী ভিতের ওপর দাঁড় করাতে চলছে সাংগঠনিক বিভিন্ন পর্যায়ে দফায় দফায় বৈঠক। দল শক্তিশালী করার পাশাপাশি একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি আদায় করতে মাঠে নিজেদের অবস্থান জানান দিতে চায় গণফোরাম।
এরই ধারাবাহিকতায় দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টুর অভিমান ভাঙানো হচ্ছে। 

গণফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোশতাক আহমদ নয়া দিগন্তকে জানান, আগামী ২২ জুন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক রয়েছে। বৈঠকে দলের অতীত সাংগঠনিক দুর্বলতাগুলো তুলে ধরার পাশপাশি সামনে কিভাবে এগুনো যায় তা নিয়ে আলোচনা হবে। তিনি বলেন, শুধু ঢাকা নয়, সারা দেশে গণফারামকে শক্তিশালী করার নির্দেশ দিয়েছেন দলের সভাপতি ড. কামাল হোসেন। এ জন্য দলের নতুন সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়াও মাঠে নেমেছেন। 

এ দিকে দলীয় একটি সূত্র জানায়, গণফোরামকে দেশের একটি গতিশীল ও অন্যতম প্রভাবশালী দল হিসেবে দেখতে চান ড. কামাল হোসেন। এ ক্ষেত্রে ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের দলের সাংগঠনিক ভিতকে শক্তিশালী করার দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে। দলের বিভিন্ন পর্যায়ের কমিটিতে দলের প্রভাবশালীদের সম্পৃক্ত করে কমিটিও গঠন করা হয়েছে। এবার গণফোরামের টার্গেট হচ্ছে রাজধানীসহ মহানগর কমিটিগুলো শক্তিশালী করা। 

ইতোমধ্যে ঢাকাকে দুই ভাগে ভাগ করে নতুন কমিটি গঠনের চেষ্টা হচ্ছে। এ জন্য ঢাকা উত্তরের মেজর জেনারেল (অব:) আমসা আমিন এবং দক্ষিণের অ্যাডভোকেট মহসিন রশিদকে আহবায়ক করে নতুন কমিটি গঠনের কাজ চলছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টুর মান ভাঙাতে বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। মন্টু দলের বিশেষ কাউন্সিলে অনুপস্থিত ছিলেন। যদিও বলা হয়েছিল তিনি ওই দিন অসুস্থ ছিলেন। তবে পরবর্তীতে তাকে নিয়ে গণমাধ্যমে বিভিন্ন সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পাশাপাশি সর্বশেষ তার (মন্টু) আলাদা ইফতার পার্টির বিষয়টি দলের প্রভাবশালীদের নজরে আসে। 
জানা গেছে, এটি আর বেশি দূর গড়াতে না দিয়ে মন্টুর মান ভাঙাতে বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে, যা শিগগিরই সবার দৃষ্টিগোচর হবে হবে দলের একটি সূত্র জানায়। তবে এবার ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য মোস্তফা মহসিন মন্টু ড. কামাল হোসেনের বেইলী রোডস্থ বাসভবনে হাজির হয়েছিলেন। জানা গেছে, দলের আরো সব কর্মসূচিতে এখন তাকে দেখা যাবে। দেয়া হবে বিশেষ কিছু বাড়তি দায়িত্ব। 

বিশিষ্ট আইনজীবী ড. কামাল হোসেন ১৯৯২ সালে আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে এসে ১৯৯৩ সালে গঠন করেন গণফোরাম। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ কয়েকটি দলের সাথে গণফোরাম জোটবদ্ধ হয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করে। 
আন্দোলনের মাধ্যমে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ফল আনতে হবে
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। তিনি বলেন, ‘এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ফল আনতে হবে।’ 

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর বেইলি রোডে গণফোরামের নেতাকর্মীদের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এ আহ্বান জানান।
এক প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল বলেন, কী ধরনের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ফল আসবে, তা নির্ধারণ করা হবে সরকারের আচরণের ওপর।
উল্লেখ্য, গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর নির্বাচনী ফল প্রত্যাখ্যান করার পাশাপাশি নতুন নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। 
গণফোরাম সভাপতি বলেন, জনগণ পরিবর্তনের অপেক্ষায় আছে। যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন দিতে হবে, এটা জনগণের জন্য মঙ্গল হবে। কিন্তু সরকার নির্বাচনকে ভয় পায়। সরকার নিজে থেকে নির্বাচন দেবে না, আন্দোলনের মাধ্যমে তা আদায় করতে হবে।

ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ওপর জোর দিয়ে ড. কামাল হোসেন বলেন, জনগণ ঐক্যবদ্ধ আছে, কিন্তু তাদের সঠিক পথে এগিয়ে নিতে হবে।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়া, কেন্দ্রীয় নেতা মহসিন রশিদ প্রমুখ।


আরো সংবাদ



premium cement