২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

হামলার শিকার ছাত্রলীগ নেত্রীদের কান্না ও ক্ষোভের ভিডিও ভাইরাল

হামলায় আহত নেত্রীরা কান্না ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন - ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গভীর রাতে নিজ সংগঠনের নেতাকর্মীদের হামলার শিকার হয়েছেন পদবঞ্চিত নারী নেত্রীরা। হামলার শিকার নারী নেত্রীদের কান্না ও ক্ষোভের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের জেরে শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে টিএসসিতে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর সমর্থক সংগঠনের কর্মীরা এ হামলার সাথে জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে, হামলার পর রাত ৩টার দিকে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বৃষ্টিতে ভিজেই অনশন শুরু করেন ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা। এ সময় হামলার শিকার সংগঠনটির নারী নেত্রীরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।

হামলার শিকার নারী নেত্রী বিএম লিপি আক্তার রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বসে কান্না করছিলেন। এ সময় মাথায় হাত বুলিয়ে তাকে সান্ত্বনা দিতে দেখা যায় ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদককে।

এ সময় পদবঞ্চিতরা গোলাম রাব্বানীর উপস্থিতিতে আরো ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। গোলাম রাব্বানীকে উদ্দেশ করে নারী নেত্রীরা চিৎকার করে বলতে থাকেন- আপনার উপস্থিতিতে ছাত্রলীগের ছেলেরা কেমনে মেয়েদের শরীরে হাত দেয়। আপনারা দৃষ্টান্ত রাখছেন।

একপর্যায়ে লিপি সেখান থেকে উঠে দৌড় দিয়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করলে সতীর্থরা তাকে আবার নিয়ে আসেন। এ সময় লিপিকে আবার হাউমাউ করে কান্না করতে দেখা যায়। তাকে অন্যরা সান্ত্বনা দিয়ে বলতে থাকেন- ভয় নেই, তোর জন্য আমরা জীবন দিয়ে দেব।

এ সময় গোলাম রাব্বানীকে ঘিরে আবার পদবঞ্চিতরা হামলার বিষয়ে নানা প্রশ্ন করতে থাকেন। অনেককেই বলতে শোনা যায়, ‘গোলাম রাব্বানী নিজে লিপিকে মারছে’।

আবার অনেকেই তাকে প্রশ্ন করছেন, কেন আপনার সামনে মেয়েদের গায়ে হাত তোলা হলো। একপর্যায়ে অন্য নারী নেত্রীরাও হাউমাউ করে কান্না করতে থাকেন।

এ সময় ছাত্রলীগ নেত্রী তিলোত্তমা শিকদারকে বলতে শোনা যায়, কোনোদিন ছাত্রলীগের ইতিহাসে এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটে নাই। আর কোনো দিন কোনো মেয়ের বাবা বলবে না তার মেয়ে ছাত্রলীগ করবে।

তবে ৫ মিনিট ৩৯ সেকেন্ডের ভিডিওতে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের কোনো প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে পুরো সময়টা নীরব ছিলেন গোলাম রাব্বানী।

অন্য পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন। তার সামনে গিয়েও নারী নেত্রীরা চিৎকার করে ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকেন। শোভনের কাছে তারা হামলার বিষয়ে জানতে চান।

ভিডিওতে পদবঞ্চিত ছাত্রলীগের এক নেতাকেও কান্না করতে দেখা গেছে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তাকে বলতে শোনা যায়, ‘সেক্রেটারির সামনে জুনিয়ররা আমার গায়ে হাত তোলে। ওদেরকে ডাকো আমাকে আবার মারতে।’

পদবঞ্চিতদের দাবি অনুযায়ী, মারধরের শিকার হয়েছেন নতুন কমিটির সংস্কৃতিবিষয়ক উপসম্পাদক নিপু ইসলাম তন্বী, তিলোত্তমা শিকদার, বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফরিদা পারভীন ও সাধারণ সম্পাদক শ্রাবণী শায়লা, শামসুন্নাহার হল শাখার সাধারণ সম্পাদক জিয়াসমিন শান্তা, সাবেক কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপসম্পাদক এমদাদ হোসেন সোহাগ, সাবেক কেন্দ্রীয় সহসম্পাদক আজমীর শেখ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক উপপ্রচার সম্পাদক শেখ আব্দুল্লাহসহ কয়েকজন।


আরো সংবাদ



premium cement