পাকা ধানের ক্ষেতে কৃষকদের অগ্নিসংযোগের ঘটনায় জামায়াতের উদ্বেগ

ধানের ন্যায্যমূল্য না পেয়ে পাকা ধানের ক্ষেতে কৃষকদের অগ্নিসংযোগের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান আজ বৃহস্পতিবার একটি বিবৃতি দিয়েছেন।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘পাকা ধানের ক্ষেতে কৃষকদের অগ্নিসংযোগ করার ঘটনায় আমি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। এ মর্মান্তিক ঘটনায় গোটা জাতি উদ্বিগ্ন।

চলতি বছর ধানের বাম্পার ফলন হলেও কৃষকদের মুখে হাসির পরিবর্তে তারা দুশ্চিন্তায় পড়েছে। তারা ধান বিক্রয় করতে পারছেন না। বাজারে ক্রেতা নেই। সরকার ধান ক্রয় এখনো শুরুই করেননি। প্রতিমণ ধানে কৃষককে ২/৩ শ’ টাকা লোকসান দিতে হচ্ছে। সার, পানি সেচ ও কৃষি শ্রমিকদের মজুরি অত্যধিক বেড়ে যাওয়ায় কৃষকগণ দিশেহারা হয়ে পড়েছে।

চালের দাম যে হারে বেড়েছে ধানের দাম সে অনুপাতে বাড়েনি। ভোক্তারা অধিক মূল্যে চাল ক্রয় করছে। অথচ কৃষক নায্যমূল্য পাচ্ছে না। প্রকারভেদে এক মণ চাল দুই হাজার থেকে তিন হাজার টাকায় বিক্রয় হচ্ছে। অপরপক্ষে এক মণ ধানের দাম প্রকারভেদে চার শ’ টাকা থেকে ৫ শ’ বা সাড়ে ৫ শ’ টাকা। চাল ও ধানের মূল্যের এ বিরাট ব্যবধানে রয়েছে চালের কলের মালিক ও মজুদদার বড় ব্যবসায়ীদের স্বার্থ। তাদের অত্যধিক মুনাফা অর্জনের কারণেই কৃষক তাদের পণ্যের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না। অপরপক্ষে ভোক্তা সাধারণ জনগণও কমমূল্যে খাদ্যদ্রব্য ক্রয় করে খেতে পারছে না। এ বিষয়টি সরকারকে গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনা করে দেখতে হবে।

সরকারের উপযুক্ত ব্যবস্থাপনার অভাবেই কৃষক তাদের পণ্যের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অথচ সরকারের সেদিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। বিশ্বের সকল গণতান্ত্রিক দেশেই সরকার কৃষক ও ভোক্তা সাধারণ জনগণের স্বার্থ রক্ষা করে কৃষিপণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে। দেশে যদি গণতান্ত্রিক সরকার থাকতো, তাহলে এ অবস্থা সৃষ্টি হতো না। ভর্তুকি দিয়ে হলেও সরকারের উচিত কৃষকদের ধানের ন্যাযমূল্য দেয়ার পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার কারণে যদি দেশে কৃষকসমাজ ক্ষুব্ধ হয়ে ধান উৎপাদন বন্ধ করে দেয় তাহলে দেশ অচিরেই খাদ্য ঘাটতির দেশে পরিণত হবে। বাংলাদেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড হলো কৃষি ও কৃষকসমাজ। তাদের স্বার্থের দিকে নজর দেয়া না হলে দেশের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যাবে।

কাজেই উদাসীনতা পরিহার করে কৃষকদের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে ধানসহ কৃষকদের উৎপাদিত সকল পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করে দেশের অর্থনীতিকে রক্ষা করার জন্য আমি সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’