২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

শপথ গ্রহণকারী দুজনকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে

শপথ গ্রহণকারী দুজনকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল - ছবি : নয়া দিগন্ত

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, নারী ধর্ষণ মহামারী আকার ধারণ করেছে। এর প্রতিবাদে জনগণকে সক্রিয় করতে কর্মসূচির ঘোষণা দেন তিনি। গতকাল বিকেলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতাদের এক বৈঠকে এই কর্মসূচির সিদ্ধান্ত হয়। ড. কামাল হোসেন বলেন, দেশে অনেক ঘটনা ঘটে যাচ্ছে একটার পর একটা। নারী ধর্ষণ মহামারী আকার ধারণ করেছে, আইনশৃঙ্খলা অবনতি খুবই দৃশ্যমান। আমরা মনে করি যে, আন্দোলনকে জোরদার করতে হবে। আইনের শাসন, নারীদের অধিকার এসব রক্ষা করার জন্য জনগণকে সক্রিয়ভাবে মাঠে নামতে হবে। আমরা ঐকমত্যে পৌঁছেছি যে, আমরা সক্রিয়ভাবে মাঠে নামব। কারণ মানুষ চায় সভ্যতা ফিরে আসুক, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হোক। আমরা এ লক্ষ্যে আজকের বৈঠকে কর্মসূচি গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা মনে করি ঐক্যবদ্ধ একটা উদ্যোগ নিয়ে দেশের মানুষের অধিকার রক্ষা করা, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা এখন জরুরি ভিত্তিতে করা প্রয়োজন বলে কর্মসূচি নিয়েছি।

ড. কামাল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার যারা আইন ভঙ্গ করছে তাদের ব্যাপারে সরকার নিষ্ক্রিয়। তারা বিভিন্ন ধরনের অ্যাকশনে যাচ্ছে যারা মানবাধিকারের পক্ষে দাঁড়াচ্ছে, পুলিশ তাদের ব্যাপারে তৎপরতা দেখাচ্ছে। কিন্তু যারা মানুষের বিরুদ্ধে, নাগরিকদের অধিকারের বিরুদ্ধে দাঁড়াচ্ছে তাদের ব্যাপারে নিষ্ক্রিয়তা লক্ষ করছি।

মতিঝিলে ড. কামাল হোসেনের চেম্বারে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এই বৈঠক হয়। ড. কামালের সভাপতিত্বে বৈঠকে জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব ছাড়াও বিএনপির ড. আবদুল মঈন খান, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, ইকবাল সিদ্দিকী, গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী, আলতাফ হোসেন, মফিজুল ইসলাম খান কামাল, আবু সাইয়িদ, রেজা কিবরিয়া, আমসা আমিন, জগলুল হায়দার আফ্রিক, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, গণস্বাস্থ্য সংস্থার ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

পরে ঐক্যফ্রন্টের নেতা জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব সোনাগাজীর মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিসহ নারী ধর্ষণ বন্ধের দাবিতে আগামী ৩০ এপ্রিল ঢাকায় জমায়েতের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, নুসরাত হত্যাসহ নারী ও শিশু ধর্ষণ-নির্যাতন বন্ধের দাবিতে আগামী ৩০ এপ্রিল আমরা ঢাকার শাহবাগে বিকেল ৪টায় জমায়েত করব। এ ছাড়া গণজমায়েতের অংশ হিসেবে আমরা বিভিন্ন জেলা শহরে যাবো। নোয়াখালী ও রাজশাহী দিয়ে এই কর্মসূচি শুরু হবে। এর দিনক্ষণ আমরা পরে জানাব। একই সাথে রমজানে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ঢাকায় একটি নাগরিক সমাবেশও করবে বলে জানান রব।

বিএসএমএমইউতে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আজকে হয়রানিমূলক মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। আমরা ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে নিঃশর্তভাবে তার মুক্তি চাই। বেগম জিয়া ছাড়াও বিএনপিসহ ফ্রন্টের হাজার হাজার নেতাকর্মী কারাগারে আছেন তাদের মুক্তি দিতে হবে, নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নতুন করে সব মিথ্যা মামলায় হয়রানি ও গায়েবি মামলা দায়ের বন্ধ করতে হবে এবং গ্রেফতারকৃতদের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে তাদের জামিনে মুক্তি দিতে হবে।

শ্রীলঙ্কায় বোমা হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে রব বলেন, এই বোমা হামলায় আমাদের একজন শিশু জায়ান চৌধুরী মারা গেছে। আমরা তার রূহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। পাশাপাশি ওই ঘটনায় জায়ানের বাবা আহত অবস্থায় জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। আমরা তার সুস্থতা কামনা করছি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে কেউ সংসদে শপথ নেবে না। আমাদের এই সিদ্ধান্ত অব্যাহত আছে। দুইজন শপথ নিয়েছেন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, যারা শপথ নিয়েছেন তাদের নিজ দলের পক্ষে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement