২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে সরানোর চেষ্টা চলছে : রিজভী

খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে সরানোর চেষ্টা চলছে : রিজভী - সংগৃহীত

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নি:শর্ত মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল। শুক্রবার বেলা ২টায় স্বেচ্ছাসেবক দল ঢাকা মহানগরের উদ্যোগে একটি বিক্ষোভ মিছিল নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়। যা কাকরাইল নাইটিঙ্গেল মোড় ঘুরে আবারো বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের কাছে এসে শেষ হয়। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে মিছিলে কয়েকশো নেতাকর্মীর অংশগ্রহণ করেন।

মিছিলে স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি শফিউল বারী বাবু, সাধাারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভুইয়া জুয়েল, সহ-সভাপতি গোলাম সারোয়ার, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ ইয়াসিন আলী, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদরেজ জামান, উত্তরের সভাপতি ফখরুল ইসলাম রবিন, সাধারণ সম্পাদক কাজী রেজওয়ান হোসেন রিয়াজ, দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নেতা রফিক হাওলাদার, হারুন অর রশীদ, আনু মোঃ শামীম, ওয়াহিদ বিন ইমতিয়াজ বকুল, জাকির হোসেন মিজান, শফিউদ্দিন সেন্টু, সাইদুর রহমান সাইদুল, রফিকুল ইসলাম মাসুম, এ কে এম আবুল কালাম আজাদ, মহিউদ্দিন লোবান, ফরহাদ উদ্দিন, অমিত হাসান হাফিজ, মাহমুদুল বারী, তোফাজ্জল হোসেন, এ বি এম মুকুল, আলাউদ্দিন জুয়েল, জসিম উদ্দিন, এইচ এম জাফর আলী খান, জেড আই কামাল, ইঞ্জিঃ আতিক, বাবুল সারেং, মোকসেদ আলম আবীর, আনোয়ার হোসেন, ডাঃ মোঃ জাহেদুল কবির জাহিদ, হাজী নুরুল্লাহ, সরদার নুরুজ্জামান, ইউসুফ পাটোয়ারী, গোলাম মোর্শেদ রাসেল, মোঃ মোর্শেদ আলম, ডালিম, শাহে আলম, মোহা: আবু জাফর বাদল প্রমুখ।

মিছিল শেষে এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে রুহুল কবির রিজভী বলেন, চারবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিপুল জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিথ্যা মামলায় বেগম জিয়াকে কারাবন্দী করে রেখেছেন। ভীষণ অসুস্থ বেগম জিয়াকে কারাগারে পোকা-মাকড়ে ভরা স্যাঁতস্যাঁতে কক্ষে রেখে অসুস্থতার মাত্রাকে তীব্রতর করে জীবন বিপন্ন করার মাধ্যমে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দিতে চান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এটি নি:সন্দেহে শেখ হাসিনার গভীর মাস্টারপ্ল্যান। যে দেশনেত্রী বাকশালের গুহা থেকে গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন সেই নেত্রীকে কারাগারে আটকিয়ে রাখা যাবে না, জনগণ কারাগারের লৌহ কপাট ভেঙ্গে বেগম জিয়াকে মুক্ত করবেই।

তিনি বলেন, ৩০ ডিসেম্বর আগের রাতে ভোট চুরির মাধ্যমে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী জুলুম-নির্যাতন ও লুটতরাজের রাজত্ব দীর্ঘমেয়াদে চালিয়ে যেতে শেখ হাসিনা তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি বেগম খালেদা জিয়াকে কারা প্রকোষ্ঠে অন্যায়ভাবে বন্দী রেখে চিকিৎসা না দিয়ে যে ঘৃন্য অমানবিক আচরণের নজির স্থাপন করলেন তা জাতি কোনোদিন ক্ষমা করবে না। শেখ হাসিনার একটাই চিন্তা বেগম জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে সরাতে না পারলে, বেগম জিয়াকে তিলে তিলে নি:শেষ করতে না পারলে গদি রক্ষা করা যাবে না। কিন্তু জনগণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সেই স্বপ্ন কোনোদিনই বাস্তবায়িত হতে দেবে না।

রিজভী বলেন, একদিকে বিএনপি খালেদা জিয়াকে কারাবন্দী রেখে এবং অন্যদিকে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর নেতাকর্মীদের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতন চালিয়ে দেশকে আবারো বাকশালের নির্মম কষাঘাতে জর্জরিত করে একদলীয় শাসনের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে জনসমর্থনশুন্য আওয়ামী সরকার। আওয়ামী লীগের এক নেতা বলছেন-বিএনপি স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না বলেই মুজিব নগর দিবস পালন করে না এবং সেজন্যই বিএনপি নেতারা কোনদিন মেহেরপুরে মুজিব নগরে যায়নি।

তিনি আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশে বলেন, ‘৭২ থেকে ৭৫ সালে আওয়ামী লীগের কোনো নেতাই মুজিবনগরে যায়নি, কারণ সেদিন মেহেরপুরে যে সরকার গঠিত হয়েছিল তার প্রধান ছিলেন তাজউদ্দিন আহমেদ, সেই দিবসে বিশ্বাস করলে তো আওয়ামী লীগের অস্তিত্ব থাকে না। আর এজন্যই বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মেহেরপুরের মুজিবনগরে কোনোদিনও যাননি। দেশব্যাপী ভয়াবহ দু:শাসনের অংশ হিসেবে এখন নারী-শিশু হত্যা ও নির্যাতনের মাত্রা ভয়াবহ রুপ ধারণ করেছে। রক্ত ঝরিয়ে দেশ স্বাধীন করার গৌরবোজ্জল ইতিহাস মুছে ফেলে দেশের সার্বভৌমত্বকে জলাঞ্জলি দিয়ে এখন বর্তমান নিষ্ঠুর সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে মিথ্যার বেস্যাতি করে জনগণের ওপর বাকশালী চেতনা চাপিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা শুরু করেছে। কিন্তু বাংলাদেশের সাহসী জনতা আওয়ামী সরকারের স্বপ্নকে দু:স্বপ্নে পরিণত করতে বদ্ধপরিকর।

যেকোন মূল্যে বর্বর শাসনের মুলোৎপাটন ঘটাতে দলমত নির্বিশেষে আপামর জনগোষ্ঠী এখন আরো বেশি ঐক্যবদ্ধ। অবিলম্বে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে তার পছন্দের হাসপাতালে সুচিকিৎসার সুযোগসহ নি:শর্ত মুক্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।

এছাড়া স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও নি:শর্ত মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। মিছিল শেষে গাজী রেজওয়ান হোসেন রিয়াজের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভুইয়া জুয়েল, উত্তরের সভাপতি ফখরুল ইসলাম রবিন প্রমুখ।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত দুর্নীতি অভিযোগে এক মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছর কারাদ- দেন। সেদিন থেকেই পুরনো ঢাকার সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারে একমাত্র বন্দি তিনি। তার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে বিভিন্ন ধরনের অহিংস কর্মসূচী পালন করে আসছে বিএনপি সহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠন। এরইমধ্যে গত ১ এপ্রিল চিকিৎসার জন্য তাকে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।


আরো সংবাদ



premium cement