১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪২৯, ০৮ রমজান ১৪৪৫
`

রমজান সামনে রেখে ব্যবসায়ীরা নজরদারীতে : বাণিজ্যমন্ত্রী

রমজানকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়িরা সুযোগ নিচ্ছে কীনা নজরে রাখা হচ্ছে : বাণিজ্যমন্ত্রী - সংগৃহীত

রোজায় নিত্যয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়বে না বলে মনে করে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন, চাহিদার তুলনায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য অনেক বেশি মজুদ রয়েছে। তাই আসন্ন রমজান মাসে পণ্যের দাম বাড়বে না। তবে পণ্য আনা নেয়ায় সময় রাস্তায় যেনো কোনো ধরণের চাঁদাবাজি না হয় সে জন্য সংশ্লিষ্টদের শিগগির চিঠি দেয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। তবে রমজানকে কেন্দ্র করে কোনো ব্যবসায়ি সুযোগ নিচ্ছে কীনা তা সরকারকে নজরে আছে বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী । জনগণকে চাঁদাবাজি প্রতিহত করার আহবান জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়েরর সম্মেলন কক্ষে আসন্ন রমজান নিয়ে প্রস্তুতির বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেছেন, ব্যবসায়িরা বিদেশে চাল রফতানি সুযোগ চেয়েছেন। রফতানি এ বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাজারদর নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভোজ্যতেল, চিনি, ডাল, ছোলা, পেঁয়াজ ও খেজুর টিসিবির মাধ্যমে খুব শিগগির বিক্রি করা শুরু করে দেয়া হবে। আমাদের ধারণা যে রমজানে পণ্যের দাম তেমন বাড়বে না। কারণ মজুদসহ সব ধরনের প্রস্তুতি আমাদের আছে। আমাদের নিকট যা রিপোর্ট আছে তাতে করে প্রয়োজনের তুলনায় নিত্যপণ্যের মজুদ অনেক বেশি আছে। তবে চিনিতে হয়তো এক-দু টাকা বাড়তে পারে। কারণ চিনির উৎপাদন খরচ বেড়েছে।

বাজার মনিটরিং এর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মনিটরিং সব ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পাশাপশি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ও বাজার মনিটর করবে। কোনো ব্যবসায়ী রমজানকে কেন্দ্র করে সুযোগ নিচ্ছে কিনা সে বিষয়টি আমরা নজরে রাখছি। সার্বিকভাবে আমরা পণ্যমুল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছি।’

তিনি বলেন, ‘পণ্য আনা-নেয়ায় যেনো পথে চাঁদাবাজী না হয় সে বিষয়টি আমরা শক্তহাতে দমন করবো। দুএক দিনের মধ্যেই আমার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিভিগে চিঠি দিয়ে দিবো। যাতে করে পথে চাঁদাবাজী কোনোভাবেই না হয়। চাঁদাবাজিটা হয়তো শতভাগ বন্ধ করা যাবে না। তবে এ বিষয়টি আমারা শক্তভাবে নিয়ন্ত্রণ করবো।

পুলিশের চাঁদাবাজীর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘চাদাবাজিতো চাঁদাবাজি। বন্ধ করতে চাচ্ছি তখন সবই বন্ধ করবো। এ বিষয়টি তিনি জনগণকেও সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানান। বলেন, যেখানে চাঁদাবাজি হবে সেখানে জনগণকেও প্রতিহত করতে হবে। তাহলে এমনিতেই অনেকাংশে চাঁদাবাজি কমে যাবে।’

টিপু মুনশি বলেন, আজকে চালকল মালিকরা আমার সাথে দেখা করতে এসেছিলেন। তারা একটা পরিসংখ্যান নিয়ে এসে বলেছে আমাদের দেশে যে পারিমাণ চালের প্রয়োজন, বর্তমানে তার চেয়ে অনেক বেশি রয়েছে। এ অবস্থায় চাল যদি আমরা রফতানি না করি তাহলে চালের দাম আরও কমে যাবে। কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ হবে। এ প্রেক্ষিতে আমি তাদের বললাম যে, কয়েকদিন আগেইতো চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। তবে তারা বলেন, তখন চালের দাম বাড়ানোটা ঠিক হয়নি, চাল তখনও ছিলো এখনো আছে।’

বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আপনারা সব রকম তথ্য নিয়ে আসেন। তাছাড়া আমি নিজেও খাদ্যমন্ত্রী ও কৃষিমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলি। তারপর সত্যি যদি চাল রফতানি করার মতো থাকে তাহলে বিদেশে পাঠানো যেতেই পারে।’

তিনি বলেন, চাল রফতানির সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে আরও আলাপ-আলোচনা করবো। আসলে আমদের চাহিদা কত সেটাও নির্ধারণ করবো তারপরই সিদ্ধান্ত নিবো। চাল কলমালিকরা একটা ডেটা দিয়েছে যে, আমাদের এত এত আছে। তবে এটা সঠিক কিনা আমি জানি না। তারা বললেইতো হবে না। আমরা নিজেরা আরও স্টাডি করেই সিদ্ধান্ত নিবো। চাল রফতানি করতে দিলাম, আর কয়েকদিন পরই দাম বেড়ে গেলো এটা হতে দেয়া হবে না।’

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘চালকল মালিকরা বলেছেন দেশে নাকি এখন মোটা চালের চেয়ে চিকন চাল বেশি উৎপাদন হচ্ছে। তাছাড়া মিনিকেট নামের চিকন চালের চাহিদা বিদেশে বেশি রয়েছে। তাই তারা চিকন চালটাই রফতানি করতে চায়।’ এর আগে ২০১৬ সালে মাত্র ৫০ হাজার টন চাল রফতানি করেছিলো বাংলাদেশে। তার কিচুদিন পরই দেশে চালের মজুদ একেবারে তলানিতে নেমে আসে। তাই মজুদ বাড়াতে তড়িঘড়ি করে বিভিন্ন দেশ থেকে চাল আমদানি করে বাংলাদেশ।


আরো সংবাদ



premium cement