২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

নুসরাতের মৃত্যু নিয়ে ছাত্রশিবিরের বক্তব্য

নুসরাতের মৃত্যু নিয়ে ছাত্রশিবিরের বক্তব্য - নয়া দিগন্ত

ফেনী জেলার সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসায় নুসরাত জাহান রাফি নামের এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানি ও পুড়িয়ে হত্যার প্রতিবাদ ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের দাবি জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

এক যৌথ বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. মোবারক হোসাইন ও সেক্রেটারি জেনারেল মোঃ সিরাজুল ইসলাম বলেন, একজন মেধাবী ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির পর নির্মমভাবে পুড়িয়ে হত্যার যে বিভৎস চিত্র জাতিকে দেখতে হলো তার নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের জানা নেই। এ নিষ্ঠুরতা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। এটা কোনো সভ্য মানব সমাজের চিত্র হতে পারে না। এই নির্মম হত্যাকাণ্ডে সারাদেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, এ ঘটনার পর শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের মনে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। একজন শিক্ষার্থী যদি তার শিক্ষাঙ্গনে নিরাপদ না থাকে তাহলে সে যাবে কোথায়? আমরা আশা করি, বিচারের কাজ কেবল গ্রেফতার বা লোক দেখানো শাস্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। এ বর্বরতার কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে যাতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি কখনও না ঘটে।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, কোনো বাবা-মা প্রিয় সন্তানের শ্লীলতাহানির ঘটনা শুনতে বা পোড়াদেহ দেখতে প্রস্তুত নয়। আমরা বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করে করে ছাত্রী হত্যার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। সাথে সাথে সারাদেশে প্রতিটি শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তা ও জান-মাল ইজ্জত আব্রু রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।

একইসাথে ঘোষণা করতে চাই, ছাত্রশিবির নিহত ছাত্রীর পরিবারের পাশে আছে। এখানে বিচারহীনতার পুনরাবৃত্তি ঘটালে ছাত্রসমাজ তা বরদাশত করবে না। আমরা মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করি, আল্লাহ যেনো আমাদের মজলুম বোন নুসরাত জাহান রাফিকে জান্নাতের সর্বোচ্চ মাকাম দান করে। বিজ্ঞপ্তি

আরো পড়ুন : ছাত্রশিবির ছাত্রজনতার হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে : শিবির সভাপতি
নয়া দিগন্ত অনলাইন, (০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯)

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. মোবারক হোসাইন বলেছেন, ছাত্রশিবির তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ইসলামী আদর্শকে যথাযথভাবে ধারণ করে পথ চলছে। ছাত্রসমাজের মেধা-মননের বিকাশের লক্ষে সবসময় যুগোপযোগী ও গঠনমূলক কর্মসূচি নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। ৪২ বছরের পথ পরিক্রমায় ছাত্রশিবির তার গঠনমূলক, আদর্শিক ও একাডেমিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে এদেশের ছাত্রজনতার হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে।

তিনি রাজধানীর এক মিলনায়তনে ছাত্রশিবিরের শাখা দায়িত্বশীল সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। সেক্রেটারি জেনারেল সিরাজুল ইসলামের পরিচালনায় বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল জব্বার ও বিশেষ অতিথি ছিলেন মুহাম্মদ ইয়াছিন আরাফাত। এসময় সকল সেক্রেটারীয়েট সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

শিবির সভাপতি বলেন, ছাত্রশিবির একদিকে যেমন ছাত্রজনতার প্রিয় সংগঠনে পরিণত হয়েছে তেমনি পরিণত হয়েছে প্রতিপক্ষের চক্ষুশূলে। ফলে একটি ছাত্রসংগঠন হিসেবে ছাত্রশিবিরের উপর যে সর্বগ্রাসী জুলুম নির্যাতন চালানো হয়েছে তা নজীরবিহীন।

দীর্ঘ পথ চলার প্রতিটি বাকে বাকে আমরা খুন, গুম, নির্যাতন, ষড়যন্ত্র, অপপ্রচার, তথ্যসন্ত্রাসের শিকার হয়ে চলেছি। রাষ্ট্রশক্তি এ সংগঠনকে ধ্বংস করে দেয়ার জন্য নির্মমতার সর্বোচ্চ নিকৃষ্ট নজির স্থাপন করেছে। কিন্তু সকল জুলুম, নির্যাতন ও ষড়যন্ত্রকে ছাত্রশিবির ধৈর্য্য, বিচক্ষণতা এবং গঠনমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মোকাবেলা করে আসছে। বাতিলের অপকর্ম আমাদের লক্ষ্য উদ্দেশ্যে থেকে চুল পরিমান বিচ্যুত করতে পারেনি। বরং পথ চলাকে আরও শাণিত করেছে। ছাত্রশিবিরের গঠনমূলক কর্মকাণ্ডের প্রত্যক্ষ সাক্ষী এদেশের ছাত্রজনতা। ফলে রাষ্ট্রশক্তি যতই আমাদের নিয়ে ষড়যন্ত্র করুক না কেন জনগণের কাছে তা গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। বরং তাদের প্রতিটি আঘাত জনগণের কাছে ছাত্রশিবিরের গ্রহণযোগ্যতাকে বৃদ্ধি করেছে।

তিনি বলেন, গত ৪২ বছর সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের নজীর স্থাপন করেই ছাত্রশিবির তার লক্ষ্য এগিয়ে চলেছে। ইসলামের সুমহান আদর্শের আলোকে নেতৃত্ব গঠনের মাধ্যমে সমৃদ্ধ জাতি গঠনে ছাত্রশিবিরের গঠনমূলক আদর্শিক পথচলা অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ। আমরা অন্যায় অবিচারের কাছে কখনোই মাথা নত করব না বরং প্রতিটি প্রতিকূলতাকে সর্বোচ্চ ধৈর্য্য ও সাহসিকতা দিয়ে মোকাবেলা করে এগিয়ে যাব ইনশাআল্লাহ।

৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সেক্রেটারিয়েট বৈঠক থেকে সপ্তাহব্যাপি কর্মসূচি ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. মোবারক হোসাইন। ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ১০ ফ্রেব্রুয়ারি ২০১৯ পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে।
কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, সারাদেশে শাখা ও থানা পর্যায়ে আলোচনা সভা এবং বর্ণাঢ্য র‌্যালি; মেধাবী ও দরিদ্র ছাত্রদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ; মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের সংবর্ধনা ও শিক্ষাবৃত্তি প্রদান; অদম্য মেধাবীদের সহযোগিতা প্রদান; অনাথ ও দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ; কৃতি শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান; ক্যাম্পাস পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান; সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও দেয়ালিকা প্রকাশ; রচনা, কুইজ, বিতর্ক, বক্তৃতা ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা; ফ্রি চিকিৎসা ক্যাম্প; ব্লাড গ্রুপিং ও স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি; বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময়।

শিবির সভাপতি কর্মসূচি সফল করার জন্য সর্বস্তরের নেতা কর্মীদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।


আরো সংবাদ



premium cement