২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`
খালেদা জিয়ার মুক্তি প্রসঙ্গ

লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিন : নজরুল ইসলাম খান

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান - ফাইল ছবি

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন কারাবন্দী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি প্রসঙ্গে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া জেলখানায় তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে চলে যাবেন, আর আমরা বসে বসে আলোচনা করবো আর মুক্তির দাবি করবো, এটা হতে পারে না। আমাদের সিদ্ধান্ত হোক, হয় আমরা লড়াই করে আমাদের মাকে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে আনবো, না হয় আমরা সবাই আমাদের মায়ের কাছে চলে যাবো। আগামী দিনে শক্তিশালী লড়াইয়ের আহ্বান জানাই।

বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের তৃতীয় তলার কনফারেন্স লাউঞ্জে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী কৃষক দল।

নজরুল ইসলাম খান সরকারের তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সমালোচনা করে বলেন, তিনি আসলে ‘তথ্যমন্ত্রী নয়, জিয়া পরিবারের সমালোচনাকারী’। জিয়াউর রহমান বুদ্ধিমান হিসেবে এই যুদ্ধটা (মুক্তিযুদ্ধ) যাতে জনযুদ্ধে রূপান্তরিত হয়, সবাই যাতে এই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে সেজন্য তিনি (জিয়াউর রহমান) তার প্রথম ঘোষণার পরিবর্তন করে ‘আওয়ার গ্রেট লিডার’ আমাদের মহান নেতা বলে তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের নাম উল্লেখ করে স্বাধীনতার ঘোষণাটা পরিপূর্ণ করেছিলেন। কিন্তু আজকে নানাভাবে তার সম্পর্কে অপবাদ দেয়া হয়। এখন যিনি তথ্যমন্ত্রী হয়েছেন।

নজরুল ইসলাম খান আরো বলেন, এর আগে যিনি তথ্যমন্ত্রী ছিলেন, আমি এক বাক্যে বলেছিলাম, তিনি তথ্যমন্ত্রী নন তিনি জিয়া পরিবারের সমালোচনাকারী। এখন যিনি হয়েছেন উনিও প্রায় ওরকমই দেখছি। প্রায় প্রতিদিনই তিনি আজে-বাজে কথা বলেন। সেসব কথার অর্থ হয় না। তার কথা কেউ বিশ্বাস করে না। আমি বুঝি না তারা নিজেরা নিজের কথা ভালো বুঝেন কিনা।

কৃষক দলের আহবায়ক শামসুজ্জামান দুদুর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব হাসান জাফির তুহিনের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন, ওলামা দলের সাধারণ সম্পাদক শাহ নেছারুল হকসহ কৃষক দলের আহবায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, যে দেশের গণতন্ত্রের জন্য দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ৯টি বছর লড়াই করেছেন, সেই দেশের কারাগারে আজ তিনি বন্দি আছেন একটি মিথ্যা ভিত্তিহীন অভিযোগে। শুধু তাই নয়, তিনি দারুণভাবে অসুস্থ। হাত নাড়াতে পারেন না, পায়ে বল পান না। উনি কিছু ধরে রাখতে পারেন না। ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে তাকে।

বেগম জিয়ার চিকিৎসা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ডাক্তাররা তাকে দেখতে যাবেন এটাও অনুরোধ করে হয় না। আদালতের নির্দেশে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়, তারপর তারা দেখতে যায়। গত সাড়ে ৩ মাসে কেউ তাকে দেখতে যাননি। যিনি নানা রোগে আক্রান্ত তাকে এভাবে জেলে ফেলে রাখার অর্থটা কী? উদ্দেশ্যটা কী? আমরা ও আমাদের চিকিৎসকরা চেষ্টা করে যাচ্ছি তার ন্যূনতম চিকিৎসা করার জন্য।

নজরুল ইসলাম খান প্রশ্ন রেখে বলেন, তারা যখন জিয়াউর রহমানকে পাকিস্তানি চর বলেন, তখন তারা এটা মনে রাখতে ভুলে যান যে, মানুষটিকে জীবন্ত মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ খেতাব বীর উত্তম উপাধিতে ভূষিত করেছিলেন তাদেরই নেতা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান। জিয়াউর রহমান যদি পাকিস্তানি চর হয় তাহলে তাকে বীর উত্তম খেতাব যিনি দিলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে তার সম্পর্ক কেমন ছিলো? পাকিস্তানের একজন চরকে কে এরকম খেতাব দিতে পারে? এইটুকু বুদ্ধি আমাদের মন্ত্রীদের নাই। জিয়াউর রহমানকে অসম্মান করতে যেয়ে তারা যে তাদের নেতাকে অসম্মান করছেন এটাও তারা বুঝেন না।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ রণাঙ্গনে ছিলো না বলে তারা মুক্তিযুদ্ধে বীর যোদ্ধাদের নিয়ে নানারকম কটুক্তি করে। তিনি আওয়ামী লীগের এই মনোভাবের কঠোর সমালোচনা করেন।

জিয়াউর রহমানের মুক্তিযুদ্ধের অবদানের পাশাপাশি বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠাসহ আধুনিক বাংলাদেশের অর্থনীতির বিনির্মাণে নানা পদক্ষেপ তুলে ধরেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য।


আরো সংবাদ



premium cement