১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে দুদকের অভিযোগপত্র

সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী - সংগৃহীত

অনিয়ম করে আড়াই একর জমি বিক্রির দায়ে সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীসহ দুইজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে বগুড়া দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সোমবার বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের (আদমদিঘি) বিচারক মোঃ শহিদুল ইসলামের আদালতে এই অভিযোগপত্র জমা দেন দুদক সমন্বিত বগুড়া জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম।

বগুড়ার দুদক কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, বগুড়ার আদমদীঘির দারিয়াপুর মৌজায় বাংলাদেশ জুট কর্পোরেশনের ২ দশমিক ৩৮ একর জমি একসময় সরকারি ‘পাট ক্রয়কেন্দ্র’ হিসেবে ব্যবহার করা হতো। ২০১২ সালের ৩০ ডিসেম্বর কোনো দরপত্র ছাড়াই পরিত্যক্ত ওই সরকারি জমি দরপত্র (টেন্ডার) ছাড়াই বিক্রির উদ্যোগ নেন তৎকালীন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী।

মন্ত্রী তার পূর্ব পরিচিত বগুড়া শহরের কাটনারপাড়া এলাকার হারুন অর রশিদের স্ত্রী জাহানারা রশিদের কাছে মাত্র ২৩ লাখ টাকায় ওই জমি বিক্রি করেন। অথচ বাজারমূল্যে ওই জমির দাম প্রায় ৬৪ লাখ টাকা। এই অভিযোগে আদমদীঘি থানায় দায়ের করা মামলার তদন্তভার দেয়া হয় দুদকের কাছে।

দুদকের সহকারী পরিচালক আরো জানান, তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে এই জমি অবৈধপন্থায় বিক্রিতে সরকারের ৪০ লাখ ৭০ হাজার টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। তদন্ত শেষে সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী ও জমির ক্রেতা জাহানারা রশিদকে অভিযুক্ত করে সোমবার আদমদীঘি থানার আমলী আদালতে অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে।

কোনো বাড়ি নেই লতিফ সিদ্দিকীর
টাঙ্গাইল সংবাদদাতা, (০৮ ডিসেম্বর ২০১৮)

আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর কোনো বাড়ি নেই। এমনটিই জানা গেছে তার হলফনামা থেকে। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৪ কালিহাতী আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী নির্বাচন করবেন। ইতোমধ্যে তার মনোনয়নপত্রও বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্রের সাথে জমা দেয়া হলফনামায় তিনি উল্লেখ করেন, তার নিজের নামে ৩৯ শতাংশ জমি রয়েছে। যার মূল্য ৩২ হাজার টাকা (১৯৯০ সাল)। স্ত্রীর নামে পাঁচ দশমিক ২৮ একর জমি রয়েছে। যার মূল্য দুই কোটি টাকা।

অকৃষি জমি এবং অর্জনকালীন সময়ে এক একর ৮৭ শতাংশ জমি রয়েছে। যার মূল্য ৬৫ লাখ টাকা। তার স্ত্রীর নামে ছয় শতাংশ এবং সাত শতাংশ জমি রয়েছে। কিন্তু লতিফ সিদ্দিকীর কোনো বাড়ি, দালান, এপার্টমেন্ট, আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন নেই। তবে তার স্ত্রীর একটি বাড়ি রয়েছে এবং তার অপর একটি বাড়ি নির্মাণাধীন রয়েছে।

লতিফ সিদ্দিকীর হলফনামা থেকে জানা যায়, তার নামে কোনো বাড়ি, দোকান বা বাণিজ্যিক ভবন নেই। ব্যবসা থেকেও তার বাৎসরিক কোনো আয় নেই। তবে পেশা (শিক্ষকতা, লেখক সম্মানী) থেকে লতিফ সিদ্দিকীর বাৎসরিক আয় দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং অন্যান্য (ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত সুদ) ১৪ হাজার ৬৩৯ টাকা।

লতিফ সিদ্দিকীর নিজ নামে নগদ টাকা রয়েছে পাঁচ লাখ ৩৪ হাজার ৩৭৭ টাকা। তার স্ত্রী এবং ছেলের নামে কোনো নগদ টাকা নেই। ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থের পরিমাণ নয় লাখ ২৫ হাজার ৮৪৯ টাকা। এমপি কোটা থেকে তার একটি টয়োটা জীপ গাড়ি রয়েছে, যার মূল্য ৬৫ লাখ টাকা।

তার স্ত্রীর ২০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার রয়েছে। যার মূল্য ১০ হাজার টাকা ( ১৯৭৩ সালে বৈবাহিক সূত্রে প্রাপ্ত উপহার)। ইলেকট্রনিক সামগ্রীর মধ্যে ফ্রিজ এবং টিভি রয়েছে। যার মূল্য ৭৫ হাজার টাকা। আসবাবপত্রের মধ্যে রয়েছে একটি সোফা, দুইটি খাট, ড্রেসিং টেবিল ও ডাইনিং টেবিল। যার মূল্য ৫০ হাজার টাকা।

উল্লেখ্য, আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী কালিহাতী থেকে ১৯৭০ সালের ঐতিহাসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য, ১৯৭৩, ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়লাভ করেন। ২০০৮ সালে বিজয়ী হওয়ার পর মন্ত্রী হন। সর্বশেষ ২০১৪ সালের নির্বাচনেও তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় এমপি নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে টাঙ্গাইল সমিতি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে হজ, মহানবী (সা.) ও তাবলিগ জামায়াত এবং প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিয়ে কটূক্তি করে ফেঁসে যান।

দেশে ও দেশের বাইরে তাকে নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠে। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন ও ইসলামিক সংগঠনগুলো লতিফ সিদ্দিকীর বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করে। তার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন আদালতে মোট ২২টি মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে ১৭ মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

একপর্যায়ে তিনি দেশে এসে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিজন সেল থেকে জামিনে মুক্তি পান। দেশব্যাপী তুমুল আন্দোলনের মুখে তার মন্ত্রিত্ব কেড়ে নিয়ে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।

এরপর ২০১৭ সালের ৩১ জানুয়ারি তার আসনে উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হাছান ইমাম খান সোহেল হাজারী এমপি নির্বাচিত হন। ওই উপ-নির্বাচনে লতিফ সিদ্দিকীর ভাই কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি আব্দুল কাদের সিদ্দিকী নির্বাচন করার জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিলেও ঋণ খেলাপির কারণে তার প্রার্থীতা অযোগ্য ঘোষণা করেন উচ্চ আদালত।


আরো সংবাদ



premium cement
গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়াল শ্যালকের অপকর্মে দুঃখ প্রকাশ করলেন প্রতিমন্ত্রী পলক রাজশাহীতে ট্রাকচাপায় ৩ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত পাবনায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে হতাহত ২২ বিল দখলের চেষ্টা, জেলা ছাত্রলীগ নেতাকে গণপিটুনি ‘শাহাদাতের তামান্নায় উজ্জীবিত হয়ে কাজ করলে বিজয় অনিবার্য’ কারাগারে নারী হাজতিকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন, প্রধান কারারক্ষীসহ ৩ জনের বদলি প্যারিসে ইরানি কনস্যুলেটে ঢুকে আত্মঘাতী হামলার হুমকিদাতা গ্রেফতার প্রেম যমুনার ঘাটে বেড়াতে যেয়ে গণধর্ষণের শিকার, গ্রেফতার ৫ ‘ব্যাংকিং খাতের লুটপাটের সাথে সরকারের এমপি-মন্ত্রী-সুবিধাবাদী আমলারা জড়িত’ ইরানের সাথে ‘উঁচু দরের জুয়া খেলছে’ ইসরাইল!

সকল