২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সংলাপ নিয়ে এখন যা ভাবছে আওয়ামী লীগ

সংলাপ নিয়ে এখন যা ভাবছে আওয়ামী লীগ - সংগৃহীত

বাংলাদেশে নির্বাচন নিয়ে নানান প্রশ্ন বা অভিযোগের ব্যাপারে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, প্রতিপক্ষ বিএনপি বা অন্য কোনো দলের সাথে সংলাপ বা আলোচনা করবে না।

তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জামায়াত ছাড়া অন্য সব দলকে চায়ের দাওয়াতে ডেকে 'সরকার পরিচালনায় তাকে সহযোগিতার প্রশ্নে' কথাবার্তা বলতে পারেন বলে দলটির নেতারা জানিয়েছেন।

কিন্তু নির্বাচনে কারচুপি, অনিয়মের অভিযোগ বা এ নিয়ে কোনো প্রশ্নই আমলে নিচ্ছে না সরকার বা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রথমে সংলাপের উদ্যোগ নেয়ার কথা বলেছিলেন, কিন্তু পরে তিনিই আবার তা অস্বীকার করেছেন।

"এখন সরকার বা আওয়ামী লীগ কোনো সংলাপ করবে না" - বলছেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম।

তিনি উল্লেখ করেন, নির্বাচনের আগে যে দলগুলো প্রধানমন্ত্রীর সংলাপে অংশ নিয়েছিল - তাদের সাথে সরকারের কাজে সহযোগিতার বিষয়ে কথাবার্তা হতে পারে।

দলটির অন্য নেতারাও মনে করছেন, এখন দেশে বিরোধী বিএনপি বা অন্য দলগুলোর সাথে সংলাপ করার জন্য কোনো ইস্যু নেই বা সেরকম কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি।

এইচ টি ইমাম বলেন, "আমাদের যে ইশতেহার, সেখানে আমাদের যে কর্মসূচি, আমরা কি করব, সবকিছু দেয়া আছে। সেগুলো জনগণ অনুমোদন করেছে। এখন তা বাস্তবায়ন করতে হবে। আর তা বাস্তবায়ন করতে হলে, সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। আমরাও সকলকে নিয়েই কাজ করতে চাই। সেজন্য সবাইকে আহবান করছি যে আসুন, চা চক্রে আসুন। আমরা কথাবার্তা বলি।"

আওয়ামী লীগের নেতাদের অনেকে মনে করেন, সংলাপে এলেও বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো নির্বাচন নিয়েই তাদের বক্তব্য তুলে ধরার চেষ্টা করবে। তার জবাবের জন্যও আওয়ামী লীগ প্রস্তুত থাকবে।

অবশ্য আলোচনার সুযোগ না থাকলে চায়ের দাওয়াতকে রাজনৈতিক দলগুলো কতটা গুরুত্ব দেবে, সরকার বা আওয়ামী লীগে সেই প্রশ্নও এসেছে।

দলটির নীতিনির্ধারণী ফোরাম প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং মন্ত্রী ড: আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, চায়ের দাওয়াতে কথাবার্তা হতেই পারে এবং তাতে সহযোগিতার ইস্যুতেই তাদের অগ্রাধিকার থাকবে।

"নির্বাচন তো হয়ে গেছে। নির্বাচন নিয়ে তো আলোচনা করার কিছু নেই। তাহলে উনি কি নিয়ে আলোচনা করবেন। চা খাবেন, শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। বিএনপি বা অন্য কোন দলের নেতারা চা খাওয়ার জন্যই কি প্রধানমন্ত্রীর গণভবনে যাবেন। নিশ্চয়ই সেখানে দেশের উন্নয়নের কৌশল কি হবে, কি ধরণের কর্মসূচি আমরা নিচ্ছি, আমাদের বাস্তবায়নের কৌশল কি হবে, এগুলো নিয়েই তো মতবিনিময় করবেন" - বলেন মি. রাজ্জাক।

তবে বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচিত আটজন নেতা সংসদ সদস্য হিসেবেই শপথ না নেয়ার অবস্থানে এখনও রয়েছেন।

তাদের এই অবস্থানের কারণে রাজনীতিতে অস্থিতিশীলতার একটা আশংকা থেকে যায় বলে বিশ্লেষকদের অনেকে বলছেন।

অন্যদিকে, আওয়ামী লীগ এ মুহুর্তে তার শরিকদের বিরোধীদলের দলের ভূমিকায় রেখে সরকারে একলা চলার রাজনৈতিক কৌশল নিয়ে এগুতে চাইছে।

তাদের এমন অবস্থান নিয়ে ১৪ দলীয় জোটের শরিকদের মাঝে ক্ষোভও রয়েছে।

জেনারেল এরশাদের জাতীয় পার্টি আগেই এবার নির্ভেজাল বিরোধীদল হওয়ার কথা বলেছে।

আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ১৪ দলীয় জোটের শরিকদের থেকে এবার কোন মন্ত্রী না হওয়ায় তাদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে।

এছাড়া নির্বাচনের পর এই জোটের কোনো কোনো বৈঠকও হয়নি। ফলে তারা কি ভূমিকা নেবে, এনিয়ে তাদের মাঝে বিভ্রান্তি রয়েছে।

এরই মাঝে আওয়ামী লীগের নেতা ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ১৪দলের শরিকরাও সংসদে বিরোধীদলের ভূমিকা নিলে, সেটা দু'পক্ষের জন্যই ইতিবাচক হবে বলে তারা মনে করেন।

এই জোটের শরিক জাসদের একাংশের নেতা শরিফ নুরুল আম্বিয়া বলছেন, আওয়ামী লীগের অবস্থানে তারা আশ্চর্য হননি।

"নেতৃস্থানীয় পর্যায়ে তাদের একটা ভিন্নমত ছিল, তারা ১৪ দল গঠন করেছিল। তারা আলাপ আলোচনা করতো কিন্তু কখনও সেটা মাঠ পর্যায়ে সম্প্রসারিত হয়নি। কাজেই আজকের এই অবস্থাটা আমার কাছে খুব অপ্রত্যাশিত না।"

বিশ্লেষকরা বলছেন, গত সংসদ নিয়ে সমালোচনার কারণে সরকার এবার বিরোধীদলের ভূমিকা দৃশ্যমান করতে চাইছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রাশেদা রওনক খান বলেছেন, সরকার পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে কৌশল নিচ্ছে বলে তিনি মনে করেন।

"ঐতিহাসিকভাবেই আওয়ামী লীগ সব সময় তাদের কৌশল পরিবর্তন করে সময়ের সাথে সাথে। এটা বিভিন্ন সময় আমরা দেখেছি" - বলেন তিনি।

তিনি বলছিলেন, "এখন যেহেতু তাদের ওপর খুব বড় একটা চাপ আছে সুশাসন এবং গণতান্ত্রিক চর্চা ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে, তাই তারা যাদের প্রতি তার শতকরা ১০০ ভাগ আস্থা আছে, তাদেরকে দিয়ে সরকার পরিচালনা করে সামনের দিকে এগুতে চাইছে। "

"আর যেহেতু সংসদে বিরোধীদলের ভূমিকাটা খুব শক্তিশালী অবস্থানে নেই, বা জাতীয় পার্টি বিরোধীদলের ভূমিকায় শেষপর্যন্ত আদৌ কতটা থাকে, সে বিষয়টা বেশ জটিল বা তা নিয়ে সংশয় আছে। সেজন্য হয়তো আগ বাড়িয়েই ১৪ দলের শরিক দলগুলোকে চাচ্ছে বিরোধীদলের ভূমিকায় নিয়ে যেতে।"

আওয়ামী লীগ নেতারা এটাও বলছেন, নির্বাচনে তাদের দলের নেতা কর্মিরা যে সক্রিয় হয়েছেন, সেটাকে ধরে রাখার জন্য সাংগঠনিক কর্মসূচির দিকেও তারা এখন নজর দেবেন।

সেজন্য ১৯ জানুয়ারি ঢাকায় বিজয় সমাবেশ করা হচ্ছে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণে কিছু দিকনির্দেশনা থাকতে পারে বলে বলা হচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement
সাটুরিয়ায় প্রশান্তির বৃষ্টি চেয়ে সালাতুল ইসতিসকা আদায় ইরান নিয়ে মার্কিন হুঁশিয়ারি পাকিস্তানকে গাজায় গণকবরের বিষয়ে ইসরাইলের কাছে ‘জবাব’ চেয়েছে হোয়াইট হাউস দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান বাস্তবায়ন করা হলে হামাস অস্ত্র ছাড়তে রাজি শনিবার থেকে শুরু গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা, প্রস্তত জবি ক্যাম্পাসগুলোতে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সমর্থন করেন বাইডেন: মুখপাত্র নোয়াখালীতে ইসতিসকার নামাজ আদায় জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব থাকবে বান্দরবানে বৃষ্টির চেয়ে চোখের পানি ফেলে বিশেষ নামাজ চকরিয়ায় যুবককে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা, গ্রেফতার ৭ উপজেলা নির্বাচনে ব্যর্থ হলে গণতন্ত্র ক্ষুণ্ন হবে: সিইসি

সকল