১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

নির্বাচন বাতিলে আন্দোলন চালাবে ঐক্যফ্রন্ট

মতিঝিলে ঐক্যফ্রন্টের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলছেন আ স ম আবদুর রব - সংগৃহীত

একাদশ সংসদ নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে পুনর্নির্বাচন দাবিতে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংলাপ করবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।  গতকাল বৃহস্পতিবার ফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। 
বৈঠক শেষে জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, ৩০ ডিসেম্বর যে নির্বাচন হয়েছে তাতে জনগণের অংশগ্রহণ ছিল না। এই নির্বাচন বাতিলের দাবিতে ঐক্যফ্রন্ট আন্দোলন চালিয়ে যাবে। ৬ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংলাপে বসছি আমরা। জাতীয় সংলাপের এই অনুষ্ঠান কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স অথবা রমনা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে করার চিন্তা করছে ঐক্যফ্রন্ট। 
মতিঝিলে গণফোরামের সভাপতি ও ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনের চেম্বারে বিকেল ৪টা থেকে ৬টা পর্যন্ত ২ ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন ঐক্যফ্রন্ট নেতারা। বৈঠকে ঐক্যফ্রন্টের প্রধান শরিক বিএনপির পক্ষ থেকে কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বা দলটির কোনো প্রতিনিধি বৈঠকে কেন ছিলেন না প্রশ্ন করা হলে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু বলেন, আমি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবের সাথে কথা বলেছি। উনি অসুস্থ সে জন্য আসতে পারেননি। বৈঠকে আসার কথা ছিল ড. আবদুল মঈন খান ও গয়েশ্বর বাবুর (গয়েশ্বর চন্দ্র রায়)। উনারা একটা জায়গায় আটকা পড়েছেন। আগামী মিটিংয়ে আমরা একসাথে হবো। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও ঐক্যফ্রন্টের সাথে বিএনপির কোনো মনোমালিন্য চলছে কি না প্রশ্ন করা হলে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘না না। আমরা প্রথমে যে অবস্থায় শুরু করেছি এখনো ঐক্যফ্রন্ট একই জায়গায় আছি। আমাদের মধ্যে কোনো দ্বিমত নেই।

বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানিয়ে আ স ম আব্দুর রব আরো বলেন, আমরা নাগরিক সংলাপের কথা আগেই ঘোষণা করেছিলাম। আগামী ২৮ তারিখের জন্য হলও বুকিং করেছিলাম। এই তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে। আমাদের নেতা ড. কামাল হোসেন হেলথ চেকআপ করতে বিদেশ যাবেন। উনি ফিরে এলে আমরা আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি এই সংলাপ করব। সমাজের সব শ্রেণিপেশার মানুষ এবং জনগণকে সাথে নিয়ে আমরা ধাপে ধাপে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে জনগণ যাতে ভোটের অধিকার ফেরত পেতে পারে, গণতান্ত্রিক, মানবিক ও নাগরিক অধিকার ফেরত পেতে পারে তার জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম অব্যাহত রাখব। অস্থির হয়ে তাড়াহুড়া করে আমরা কোনো কর্মসূচি দিতে চাচ্ছি না। আমরা চিন্তাভাবনা করে জনগণকে সাথে নিয়ে পর্যায়ক্রমে কর্মসূচি দেবো।

জামায়াতে ইসলামী ইস্যুতে কোনো মতপার্থক্য হচ্ছে কি না জানতে চাইলে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, জামায়াত এখানে বড় ইস্যু হলো কী রকম করে? বড় ইস্যু এখন আমাদের কাছে ৩০ তারিখের ভোট ২৯ তারিখে যে ডাকাতি হয়ে গেল তার বিরুদ্ধে। জামায়াতের সাথে আমরা কখনো ছিলাম না, এখনো নাই। এটা আলোচ্য বিষয় হিসেবে আমাদের কাছে খুব প্রাধান্য পাচ্ছে না। সাথে রব যোগ করেন, এটা একটা পুরনো প্রশ্ন। আমরা তিনজন মুক্তিযোদ্ধা। মাঠে সরাসরি জীবন দিতে গিয়েছি আমি ও মন্টু। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর এই প্রশ্নের (জামায়াতে ইসলামী) সমাধান হয়ে গেছে পারমানেন্টলি। আমরা মুক্তিযোদ্ধা ছিলাম। মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে আ স ম আবদুর রব, মন্টু, মান্না যেতে পারে না।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় সংলাপে মহাজোটের কোনো দলকে আমন্ত্রণ জানানো হবে না। 

প্রধানমন্ত্রী যে সংলাপের আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন সে ব্যাপারে আপনাদের অবস্থান কী? জবাবে মন্টু বলেন, কোন প্রধানমন্ত্রী! আমরা তো নির্বাচনই স্বীকার করছি না।
মন্টু বলেন, ভোটারবিহীন একটা নির্বাচন। গভীর রাতের যে নির্বাচন জাতিকে হতবাক করে দিয়েছে। এই নির্বাচনের বিরুদ্ধে দেশের সর্বস্তরের মানুষ। আমরা মনে করি এর বিরুদ্ধে যারা আছেন, যারা মতপ্রকাশ করবেন এবং আমরা মনে করি, যারা একটা অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য পথ খুঁজে দেবেন আমাদের সেই ধরনের মানুষ ও বাংলাদেশের মানুষের সাথে আমরা আছি।

ড. কামাল হোসেন বিদেশে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে কবে যাচ্ছেন জানতে চাইলে মান্না বলেন, উনি শনিবার যাচ্ছেন।
স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকে জেএসডির আ স ম আবদুর রব, গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী, মোস্তফা মহসিন মন্টু, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ নেতা উপস্থিত ছিলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন ড. কামাল হোসেন।


আরো সংবাদ



premium cement