১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ঐক্যফ্রন্টকে নির্বাচন থেকে সরাতে সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে সরকার : রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী - ফাইল ছবি

বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে নির্বাচনের মাঠ থেকে সরাতে সরকার সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, সারাদেশে ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপিসহ বিরোধী জোটের প্রার্থী এবং নেতাকর্মীদের ওপর হামলা হলেও মিথ্যা গল্প সাজিয়ে নির্যাতিতদের ওপর দায় চাপিয়ে দেয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। আওয়ামী প্রধান শেখ হাসিনা ও তার দলের নেতারা এখন শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছেন।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, গতকাল প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তৃতাকালে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের কঠোর সমালোচনা করে বলেছেন,‘তাদের (ঐক্যফ্রন্ট) দুর্ব্যবহার থেকে কেহই রেহাই পাচ্ছে না। আওয়ামী লীগের নেতাদের ওপর হামলা করছে, সহিংসতা চালাচ্ছে। তারা নির্বাচন কমিশনে গিয়ে ঝগড়া করছে এবং পুলিশের বিরুদ্ধে বাজে ভাষা ব্যবহার করছে...’। প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য বাংলাদেশের মানুষের সাথে সেরা প্রহসন। সরকারের নির্যাতনে শত শত ধানের শীষের প্রার্থী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা রক্তাক্ত-ক্ষতবিক্ষত। হাজার হাজার নেতাকর্মী আটক হয়ে কারাবন্দী। এরমধ্যেও বিএনপির অনেক নেতাকর্মী গুম-খুন ও বিচার বহির্ভূত হত্যার শিকার হচ্ছেন। শত শত বিএনপি, ঐক্যফ্রন্ট ও জোটের নেতাকর্মীদের বাড়িঘর আগুন দিয়ে জালিয়ে দেয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, আওয়ামী সন্ত্রাসী ও কিছু সংখ্যক রাষ্ট্রীয় বাহিনীর তাণ্ডবে বাংলাদেশের প্রতিটি জনপদ এখন আতঙ্কের নগরীতে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ এবং বিশ্ব মিডিয়ায় এসব খবর প্রচার হচ্ছে ফলাও করে। এখন আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা ও তার দলের নেতারা শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছেন। নিজেরা আক্রমণ করে এখন মিথ্যা গল্প সাজিয়ে নির্যাতিতদের ওপর দায় চাপিয়ে দেয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন।

তিনি অভিযোগ করেন, বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে নির্বাচনের মাঠ থেকে সরাতে সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে সরকার। নৌকা মার্কার পক্ষে প্রকাশ্যে পুলিশের ভোট চাওয়া, নৌকার মঞ্চে বক্তৃতা করা, গোয়েন্দা পুলিশের ধাওয়া খেয়ে উঁচু তলা ভবন থেকে লাফ দিয়ে পড়ে ধানের শীষের কর্মীর জীবন চলে যাওয়া, ধানের শীষের প্রচারণা মিছিলের ছবি তুলে সেখান থেকে বেছে বেছে নেতাকর্মীদের বাসা, বাজার, দোকান, এমনকি আত্মীয়স্বজনদের বাসা থেকে আটক করছে পুলিশ।

রিজভী বলেন, ধানের শীষের প্রচারণায় আওয়ামী সশস্ত্র কর্মীরা প্রতিদিন হামলা করছে। নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে গিয়ে হামলা শিকার হয়েছে বিএনপি মহাসচিবের স্ত্রী-কন্যা। বুধবার ঈশ্বরদীতে ধানের শীষের প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিবের প্রাণনাশের উদ্দেশ্যে ছুরি হমলা করা হয়েছে। এর আগের দিন বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে আক্রমণ করে রক্তাক্ত করা হয়েছে। ড. আব্দুল মঈন খান এবং শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর ওপর হামলা করা হয়েছে। ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনকে গুলি করে আহত করা হয়েছে।

তিনি অভিযোগ করেন, এসব হামলার ঘটনার কোনোটির পরেই নির্বাচন কমিশন কোনো পদক্ষেপই গ্রহণ করেনি। সিরাজগঞ্জের ধানের শীষের প্রার্থী রোমানা মাহমুদকে যেভাবে গুলি করা হয়েছে তা কাপুরুষোচিত। শরীয়তপুরের ধানের শীষের প্রাথী নুর উদ্দিন অপু পুলিশের উপস্থিতিতে হামলার শিকার হয়ে এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। এই সংবাদ কি নির্বাচন কমিশনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা জানেন না?

শেরপুরের ধানের শীষের প্রার্থী ডাঃ সানসিলা প্রিয়াংকার ওপর হামলায় তার আর্তচিৎকার নির্বাচন কমিশন না শুনলেও সারা দেশবাসী শুনেছে। এ সমস্ত ঘটনা তো অভিযোগ আকারে কমিশনে জানানো হয়েছে।

তিনি বলেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, সুব্রত চৌধুরী, আফরোজা আব্বাস, শরীফুল আলমের ওপর দফায় দফায় হামলার অভিযোগ কমিশনে জানানো হলেও তাতে কোনো প্রতিকার হয়নি।


আরো সংবাদ



premium cement