২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ধানের শীষের জোয়ার উঠেছে : মওদুদ

মওদুদ আহমদ - ফাইল ছবি

ভোট কেন্দ্রে ভোটার আনার আন্দোলন শুরু করার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, ‘সারাদেশে ধানের শীষের জোয়ার উঠেছে। তারা (ক্ষমতাসীন দল) এটা সামলাতে পারবে না যদি মানুষ তাদের ভোট দিতে পারে। সেজন্য ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে ভোটারদের বুঝাতে হবে যত অসুবিধা হোক না কেনো, যত হুমকি-ধামকি থাকুক না কেনো আপনাদের ভোট কেন্দ্রে যেতে হবে। সেখানে যদি বাধা দেয় তা প্রতিরোধ করতে হবে। মনে রাখতে হব, আমাদের জন্য এটা শেষ পরীক্ষা। বাংলাদেশের মানুষের জন্য, বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য, বাংলাদেশে আইনের শাসনের জন্য, বিচার বিভাগের স্বাধীনতার জন্য, গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য, একটি সুস্থ একটি ভদ্র একটি সভ্য সমাজ গড়ার জন্য একমাত্র পথ হলো- যাদের জন্য আমরা এতো সংগ্রাম করছি, আন্দোলন করছি তাদেরকেই এগিয়ে আনতে হবে। ভোটের মাধ্যমে এই সরকারের সব অপকর্মের উত্তর দিতে হবে।’

আজ শুক্রবার দুপুরে এক সভায় বলেন, ‘গত দুইদিনে তিনজন প্রার্থীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতার আরো বাড়বে এবং গায়েবী মামলা চলতেই থাকবে। গতকাল আমার এলাকায় শুনলাম ট্রাকে করে অন্য এলাকা থেকে পুলিশ বাহিনী আনা হয়েছে। তারা রাতে বাড়িতে বাড়িতে অভিযান চালাবে যাতে কোনো নেতা-কর্মী-সমর্থক এলাকায় না থাকতে পারে। এই সরকার জানে তারা যতই কলা-কৌশল করুক, যত নীল-নকশা, পরিকল্পনা করুক না কেনো মাঠ পর্যায়ে তাদের ভোট নাই। আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার এই সিদ্ধান্তে ধানের শীষের জোয়ার উঠেছে। এটা তারা সমলাতে পারবে না।’

তিনি বলেন, ‘আমার এলাকার এক মহিলার কথা- এইবার আমরা ভোট আই দিমু, লড়াই কইরা ভোট দিমু।’ মওদুদ বলেন, যেখানেই তারা বাধা দেবে সেখানেই প্রতিরোধ করতে হবে। তাহলেই ভোট প্রয়োগ করা সম্ভবপর হবে। এছাড়া অন্য কোনো বিকল্প নেই আমাদের। অন্য কোনো বিকল্প নেই ভোট ছাড়া।

নোয়খালী-১ আসনে নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের মনোনয়নপত্র দাখিলের দিনে বিশাল মোটর শোভাযাত্রা, মঞ্চ নির্মাণ করে মাইক ব্যবহার করে বক্তব্য রাখাসহ নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ এবং নির্বাচন কমিশনের ‘নির্বিকার’ ভূমিকার কথাও তুলে ধরেন সাবেক আইনমন্ত্রী।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে ‘আদর্শ নাগরিক আন্দোলন’ ও ‘জাতীয় মানবাধিকার আন্দোলন’-এর যৌথ উদ্যোগে ‘গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড এবং নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।

আলোচনা সভায় নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমি এলাকায় (বগুড়া) গেছি, সমস্ত মানুষ বলছে এবার সুযোগ পেলে দেখিয়ে দেবো। সারা বাংলাদেশ একই কথা বলছে যত খারাপ অবস্থা হোক। জনগণকে বলছি, দিস টাইম ইজ ইউর টাইম, এটা আপনাদের সময়। আপনার ভোট আপনি দেবেন- এই শপথ নিন। লড়াইটা বিএনপি কিংবা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের একার নয়, ১০ কোটি ভোটারদের লড়াই। ১০ কোটি ভোটারের কাছে আমাদের পৌঁছাতে হবে যত বড় বিপদ হোক, গ্রেফতার হন, মার খান, নির্যাতিত হন- মানুষকে একবার গিয়ে বলতে হবে- এটাই একবার সুযোগ। যদি ভোট দিতে পারেন- এই ভোট দিলেই বেগম জিয়া জীবনে বাঁচবেন, কারাগার থেকে মুক্ত হবেন, এই ভোট যদি দিতে পারেন তাহলেই কেবলমাত্র এই অত্যাচারের হাত থেকে মুক্তি পাবেন- তার বাইরে কিছু নাই।’

নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘কোনো হতাশা ছড়ানো আমাদের কোনো কাজ নয়। আমি জানি, খুবই কঠিন লড়াই, প্রায় অসম্ভব লড়াই। কিন্তু সেটাকে সম্ভব করে তুলতে হবে। সেই লড়াই করবার জন্য আমরা আসছি, তার কোনো বিকল্প নাই। আমি বলি মানুষের শক্তিকে বিশ্বাস করেন এবং চেষ্টা করেন এরমধ্যেও মানুষকে সংবদ্ধ করেন। এছাড়া আপনাদের কাছে অন্য কোনো বিকল্প নাই। এই লড়াই জিতে যান তাহলে সমস্ত বাংলাদেশ আপনাদের সমস্ত পৃথিবী আপনাদের। তাই হারবার কোনো সুযোগ নেই আমাদের। কারণ মানুষ যে আমাদের পক্ষে আছে সে ব্যাপারে অন্তত আমার কোনো সন্দেহ নেই।’

গণস্বাস্থ্য সংস্থার ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘জনগণ আপনাদের পক্ষে আছে। যেখানে যাই এটা আমি দেখতে পাই। বাতাস আপনাদের পক্ষে আছে। এই সরকার টিকতে পারবে না। নৌকা ডুবে গেছে। তারা যত কিছুই করুক তাদের দুর্নীতির ভারে, অন্যায়-আচরণের কর্মে এটা ডুবে গেছে। এই নৌকাকে আর উঠানো যাবে না। নৌকা ডুবে গেলে তো লাভ নেই। সংস্কারগুলো করতে হবে, পরিবর্তনগুলো করতে হবে।’

সংগঠনের সভাপতি মাহমুদুল হাসানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।


আরো সংবাদ



premium cement