১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪২৯, ০৮ রমজান ১৪৪৫
`

ইস্পাত কঠিন অবস্থান গ্রহণ করার আহবান শিবির সভাপতির

শিবির সভাপতি - ছবি : সংগ্রহ

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত বলেছেন, বিশ্বের নানা প্রান্তে মানবতা ডুকরে কাঁদছে। নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষের আহাজারিতে পৃথিবীর বাতাস প্রকম্পিত হচ্ছে। অথচ আল্লাহতায়ালা বিশ্ব মানবতার মুক্তির জন্যই রাসূল সা: কে দুনিয়াতে প্রেরণ করেছিলেন। তিনি জীবনের সর্বস্তরে ইনসাফ ন্যায় বিচার ও মানবতার সর্বোৱকৃষ্ট নজির স্থাপন স্থাপন করেছিলেন। তিনি ছিলেন ধর্ম, বর্ণ, গোত্র ও পেশা নির্বিশেষে সবার জন্যই অনুকরণীয় ও অনুসরণীয় আদর্শ। আজও মানবতার মুক্তির জন্য রাসূল সা. এর আদর্শের বিকল্প নেই।

তিনি বুধবার নরসিংদীর এক মিলনায়তনে ছাত্রশিবির নরসিংদী শহর আয়োজিত সিরাতুন্নবী সা. উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। শহর সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম এর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি আব্দুল্লাহ আল মামুনের পরিচালনায় আলোচনা সভায় কেন্দ্রীয় সাহিত্য সম্পাদক সালাউদ্দিন আইয়ুবি, ছাত্র কল্যাণ সম্পাদক সোহেল রানা মিঠু, পাঠাগার সম্পাদক জামিল মাহমুদ, ক্রীড়া সম্পাদক সোহেল রানাসহ শাখার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

শিবির সভাপতি বলেন, মানুষের শান্তি প্রতিষ্ঠায় যুগে যুগে বহু মত পথ সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু কোন মতবাদই মানুষকে প্রকৃত কল্যাণ দিতে পারেনি। এক্ষেত্রে রাসূল সা. এক্ষেত্রে শতভাগ সফল হয়েছেন। বিশ্ব মানবতার কল্যাণ ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় রাসূল সা. এর মত উদাহরণ আর নেই। তিনি ছিলেন সকল মানুষের জন্য ন্যায়-ইনসাফের প্রতীক। মানবজাতির জন্য সর্ব কালের সর্বোত্তম অনুসরণীয় আদর্শ। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘রাসূল সা. এর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ (সূরা আহযাব, আয়াত-২১)। তিনি তার মহানুভবতা, সহনশীলতা, অধ্যবসায়, দৃঢ়তা, ধৈর্য ও নিষ্ঠার সাথে আল কুরআনের আদর্শ প্রতিষ্ঠার মহান দায়িত্ব পালন করেছেন। আর এই জন্য তাকে অবর্ণনীয় জুলুম-নির্যাতনও ভোগ করতে হয়েছে। ইসলামকে প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে নির্মমভাবে নির্যাতিত ও রক্তাক্ত হতে হয়েছিল। মূলত রাসুল (সা.) আইয়ামে জাহেলিয়াতের অন্ধকার ও তমসার বিপরীতে সত্য এবং ন্যায়কে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন। সমাজে অবহেলিত-নির্যাতিত, সুবিধা বঞ্চিত ও দুঃখী মানুষের সেবা, মানবতাবোধ, পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন, পরমতসহিষ্ণুতা, দয়া, নারী জাতির মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় মহানবী (স)-এর আদর্শ অতুলনীয় ও অদ্বিতীয়। সে জন্যই তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব হিসেবে অভিষিক্ত। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে মুহাম্মদ! আমি তোমাকে পাঠিয়েছি দুনিয়াবাসীর রহমত স্বরুপ (সূরা আম্বিয়া, আয়াত-১০৭)।

তিনি বলেন, মানব রচিত মতবাদ দিয়ে মানবতার শান্তি সম্ভব নয়। যা প্রতিদিনই প্রমাণ হচ্ছে। মূলত রাসূল সা. আদর্শ থেকে বিচ্যুতির কারণেই বিশ্বে বিশেষ করে মুসলিম ওম্মাহ আজ নির্যাতিত নিপীড়িত। মানব সভ্যতা ও মূল্যবোধ এখন খাদের কিনারে এসে দাঁড়িয়েছে। সমাজের সকল স্তরেই এখন অবক্ষয়ের প্রলয় চলছে। নানা ধরনের অপরাধ প্রবণতা আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্রকে কুলুষিত করে ফেলেছে। চারদিকে অধিকার বঞ্চিত ও নিপীড়িত মানুষের আহাজারী প্রবল হয়ে উঠেছে। কিন্তু ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠিত না থাকায় এই ভয়াবহ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাচ্ছে না। তাই জীবনের সার্বিক ক্ষেত্রে কল্যাণ ও শান্তি ছড়িয়ে দিতে রাসূল সা.-এর আদর্শের ভিত্তিতে সমাজ ও রাষ্ট্র বিনির্মাণের কোনো বিকল্প নেই।

শিবির সভাপতি বলেন, মুসলিম বিশ্বসহ বিশ্ব সভ্যতা থেকে সকল অবিচার অনাচার বন্ধ ও শান্তি প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব এখন রাসূল সা. এর উম্মত তথা মুসলমানদের উপরই। আজকের প্রেক্ষাপটে ইসলামী আন্দোলনের ক্রান্তিকালে চরম ধৈর্য্য, সহনশীলতা, নিষ্ঠা, দূরদর্শিতা ও প্রজ্ঞার সাথে আমাদেরকে অগ্রসর হতে হবে। তিনি ইসলামী আন্দোলনের বিরুদ্ধে যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় সকলকে ইস্পাত কঠিন অবস্থান গ্রহণ করার আহবান জানান।


আরো সংবাদ



premium cement