২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

মনোনয়নপ্রত্যাশীদের কাছে যে সব বিষয় চাইছেন তারেক রহমান

ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মনোনয়ন বোর্ডে যুক্ত হয়েছেন তারেক রহমান। - বিএনপির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া।

একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের দ্বিতীয়দিনের মতো সাক্ষাৎকার শুরু হয়েছে। সোমবার সকাল থেকে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বরিশাল বিভাগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার শুরু হয়। বেলা আড়াইটার পর খুলনা বিভাগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার হবে।

দ্বিতীয় দিনের মনোনয়ন বোর্ডেও লন্ডন থেকে স্কাইপিতে সংযুক্ত আছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

বরিশাল বিভাগের ছয় জেলার ২১টি সংসদীয় আসন এবং খুলনা বিভাগের ১০ জেলার ৩৬টি আসনের জন্য প্রায় পাঁচ শতাধিক প্রার্থী এদিন সাক্ষাৎকারে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।

এদিকে গতকাল রোববার সকাল ৯ টা ৪০ মিনিটে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ সাক্ষাৎকার শুরু হয়। মধ্যাহ্ন বিরতি দিয়ে সাক্ষাতকার চলে রাত অবধি। প্রথম ধাপে রংপুর বিভাগের ৩৩ টি আসনে ১৫৮ জন এবং দ্বিতীয় ধাপে রাজশাহী বিভাগের ৩৯টি আসনে ৩৬৮ জন মনোনয়ন প্রত্যাশীর সাক্ষাতকার নেয়া হয়।


জানা গেছে, আসনভিত্তিক মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ডেকে একসাথে সাক্ষাতকার নেয়া হয়েছে। মনোনয়ন বোর্ডের তিনটি প্রশ্ন ছিল কমন। এগুলো হচ্ছে- কেন দল থেকে আপনাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে। আন্দোলন সংগ্রামে আপনার অবদান কী ছিল এবং মনোনয়ন দিলে আপনার জয়লাভ করার সম্ভাবনা কতটুকু। তারেক রহমান নিজেও মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নানা বিষয়ে প্রশ্ন করেছেন।

মনোনয়ন বোর্ডে ছিলেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, লে. জে. (অব) মাহবুবুর রহমান, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, রফিকুল ইসলাম মিয়া, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ও আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

প্রথম দিনের সাক্ষাতকার শেষে প্রার্থীরা বলেছেন, বোর্ড কারো প্রার্থীতাই চূড়ান্তভাবে জানিয়ে দেয়নি। সবাইকে এলাকায় গিয়ে নির্বাচনী গণসংযোগ করতে বলা হয়েছে। কেউ কেউ বলেছেন, সব প্রার্থীকেই নির্বাচন কমিশনে মনোনয়ন জমা দিতে বলেছেন বোর্ডের সদস্যরা। যাতে করে দলের প্রথম পছন্দের কেউ বাদ গেলে, সহজেই বিকল্প খুঁজে পাওয়া যায়।

সাক্ষাতকার শেষে দিনাজপুর-৪ আসনের প্রার্থী অ্যাডভোকেট আব্দুল হালিম, এই আসনে আমরা ৪ জন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছি। আমার কাছে তারেক রহমান জানতে চেয়েছেন কেন দল আমাকে মনোনয়ন দেবে? মনোনয়ন দিলে আমার জয়ের সম্ভাবনা কতটুকু? এ সময় দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার পক্ষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করারও পরামর্শ দিয়েছেন তারেক রহমান।

পঞ্চগড়-২ আসনে প্রার্থীতার লড়াইয়ে আছেন ফরহাদ হোসেন ফরহাদ। সাক্ষাৎকার দিয়ে এসে তিনি বলেন, আমার কাছে বিএনপি মহাসচিব জানতে চেয়েছেন কেন আমি নির্বাচন করতে চাই? অন্য কাউকে মনোনয়ন দিলে আমি কাজ করবো কিনা। এছাড়া তারেক রহমান জানতে চেয়েছেন, নির্বাচনি এলাকার নেতাকর্মীদের সঙ্গে আমার কেমন সম্পর্ক রয়েছে।
ঠাকুরগাঁও-৩ আসন থেকে ধানের শীষের প্রার্থী পীরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাহিদুর রহমান জাহিদ বলেন, এই আসনে বিএনপি থেকে ১০ জন নেতা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। মনোনয়ন প্রত্যাশী সবাইকে এলাকায় গিয়ে গণসংযোগ চালাতে বলেছেন তারেক রহমান। পরে জানিয়ে দেওয়া হবে কাকে দল নির্বাচনের জন্য দলীয় মনোনয়ন দিয়েছে।

সাক্ষাৎকার শেষে বেরিয়ে আসা একাধিক প্রার্থীর মনোনয়ন ফরমে দেখা গেছে, এতে স্বাক্ষর রয়েছে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের। চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে থাকায় দলীয় মনোনয়ন ফরমে স্বাক্ষর করছেন দলটির মহাসচিব।

নীলফামারী-৪ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী বিলকিস ইসলাম বলেন, দলের মনোনয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে সব প্রার্থীকে মনোনয়ন ফরম নির্বাচন কমিশনে জমা দিতে বলা হয়েছে। দল যাকে মনোনয়ন দেবে, তিনি ছাড়া অন্য সব প্রার্থীকে নিজেদের মনোনয়ন ফরম প্রত্যাহার করে নিতেও বলা হয়েছে।

সিরাজগঞ্জ -১ আসন থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী কণ্ঠশিল্পী রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা সাক্ষাতকার দিতে এসে বলেন, আমার রাজনীতিতে আসার একটাই কারণ, আমি মানুষের সেবায় থাকতে চাই। রাজনীতির মাঠ থেকে আপামর জনগণের সেবা করা যায়।

নীলফামারী-৪ আসন থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী বেবী নাজনীন বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই দলের জন্য কাজ করছি। আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া অন্যায়ভাবে কারাগারে বন্দি। তাঁর মুক্তি ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে যাওয়া। দল যাকেই মনোনয়ন দেবে আমরা তার পক্ষেই কাজ করবো।

মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাতকারকে কেন্দ্র করে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সামনের ৮৬নং সড়কে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা ছিল চোখে পরার মতো। কোন ধরনের যানবাহন পুলিশের তল্লাশি ছাড়া প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।

মনোনয়ন প্রত্যাশী, মহানগর, জেলা, উপজেলা দলের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতিকে তল্লাশির মাধ্যমে ঢুকতে দেওয়া হলেও সাধারণ মানুষকে অন্য রাস্তায় চলাচল করতে বলছে পুলিশ।

 


আরো সংবাদ



premium cement