১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

‘মাইন্ড ইউর ল্যাঙ্গুয়েজ’ সিইসিকে মান্নার হুঁশিয়ারি

ইসির সাথে বৈঠকে মান্না ও সিইসি নুরুল হুদার সাথে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। - ছবি: সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রীর সাথে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপ শেষ না হওয়া পর্যন্ত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ জানিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।

ইতঃপূর্বে চিঠি দিয়ে অনুরোধের পর গতকাল সোমবার ঐক্যফ্রন্টের একটি প্রতিনিধিদল নির্বাচন কমিশনের সাথে সাক্ষাৎ করে একই অনুরোধ জানায়। এ সময় ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের সাথে নির্বাচন কমিশনের বাগি¦তণ্ডা হয়। একজন নেতা নির্বাচন কমিশনকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ৫ জানুয়ারির মতো নির্বাচন আর করা যাবে না। তবে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ দাবি করেন, কোনো বাগবিতণ্ডা নয়, ভেতরে গলার আওয়াজ এমনই ছিল।

নির্বাচন ভবনে গতকাল ঐক্যফ্রন্টের একটি প্রতিনিধিদল ইসির সাথে এ বৈঠক করে। জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রবের নেতত্বে প্রতিনিধিদলের অপর সদস্যরা হলেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বরকত উল্লাহ বুলু, ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

অপর দিকে ইসির পক্ষে বৈঠকে নেতৃত্ব দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা। এ সময় অপর চার কমিশনার মাহবুব তালুকদার, রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, শাহাদত হোসেন চৌধুরী ও কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে সরকারের সাথে সংলাপের ফল দেখে তফসিল ঘোষণার দাবি জানান ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। এ ছাড়া নির্বাচনে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সেনা মোতায়েন ও ইভিএম ব্যবহার থেকে বিরত থাকার দাবি জানানো হয়। ঐক্যফ্রন্টের এসব দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সুস্পষ্ট কোনো আশ্বাস দেয়নি ইসি। প্রতিটি ক্ষেত্রেই ইসি জানিয়েছে, পরে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় ঐক্যফ্রন্ট নেতারা জানান আলোচনা ভালো হলেও তাদের নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবি অব্যাহত রয়েছে।


বৈঠক সত্রে জানা গেছে, বৈঠকের একপর্যায়ে ইসির ওপর রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা থাকা না থাকা নিয়ে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়।

ইসির ওপর আস্থার বিষয়ে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, তারা ইসির ওপর অনাস্থা জানাতে আসেননি। তবে এই নির্বাচন কমিশনের ওপর মানুষের আস্থা নেই।

এ সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর নিজেদের মধ্যেই আস্থা নেই। নেতারা শুধু বড় বড় কথা বলেন...

সিইসির এমন বক্তব্য শেষ করতে না দিয়েই মান্না বলেন, মাইন্ড ইউর ল্যাঙ্গুয়েজ।

বৈঠকে তিন সিটি নির্বাচনে ইসির ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। ঐক্যফ্রন্টের নেতারা বলেন, দেশের মানুষ দেখেছে রাজশাহী সিটিতে কিভাবে নির্বাচন হয়েছে। একটি কেন্দ্রেও বিএনপির এজেন্টরা ঢুকতে পারেনি। নির্বাচন কমিশন এ ক্ষেত্রে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে বলে অভিযোগ উত্থাপন করেন ঐক্যফ্রন্ট নেতারা। সেনাবাহিনী মোতায়েন নিয়েও পাল্টাপাল্টি কথা হয় ইসি ও ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের মধ্যে।

নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) শাহাদত হোসেন চৌধুরী বলেন, আইনে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দিয়ে সেনা মোতায়েনের সুযোগ নেই। অতীতে যেভাবে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনা মোতায়েন হয়েছে, সেভাবে হয়তো হতে পারে। কিন্তু সেটা তফসিল ঘোষণার পর কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে। তার এ বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ঐক্যফ্রন্ট নেতারা বলেন, ভোটারদের আস্থা অর্জনের জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েনের প্রয়োজন রয়েছে। দুর্বৃত্ত দমনের জন্য সেনাবাহিনীকে গ্রেফতারের ক্ষমতাও দেয়া প্রয়োজন।

আরো পড়ুন : সংলাপে শেখ হাসিনাসরকারের সহযোগী হিসেবে কাজ করছে জাতীয় পার্টি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ০৬ নভেম্বর ২০১৮



প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি প্রদেশকে লড়াই-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে একটি স্বাধীন দেশে পরিণত করেছেন। স্বাধীনতার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশকে তিনি স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা এনে দিয়ে গেছেন। আজ আওয়ামী লীগ সরকারের নেতৃত্বে সেই অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জিত হয়েছে। দেশের এই উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় সরকারের সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে জাতীয় পার্টি।
জাতীয় পার্টির নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত জাতীয় জোটের সাথে গণভবনে সন্ধ্যায় শুরু হওয়া সংলাপের সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ১৪ দলীয় জোটের ২৩ সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং পাঁচটি দলের সমন্বয়ে গঠিত জাতীয় জোটের নেতৃত্ব দিচ্ছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসাইন মুহম্মদ এরশাদ।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, আগামী নির্বাচনে নাগরিকরা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে। এটা তাদের অধিকার। শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগই এ দেশের মানুষের ভাত ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য দীর্ঘ সংগ্রাম করেছে। তিনি বলেন, রাজনীতিবিদদের দায়িত্ব দেশের উন্নয়ন করা এবং জনগণের কল্যাণে কাজ করা। পরপর দুই মেয়াদে ক্ষমতায় থেকে আওয়ামী লীগ মানুষের প্রতি সেই দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে।

সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটের দিকে সংলাপ শুরু হয়। এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় এরশাদের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলের সদস্যরা গণভবনে প্রবেশ করেন। সংলাপ শেষে রাতে জাপা চেয়ারম্যানের বনানী অফিসে সংলাপ বিষয়ে ব্রিফ করবেন দলের শীর্ষ নেতারা।
গণভবনে সংলাপে আওয়ামী লীগের পক্ষে দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রয়েছেন আমির হোসেন আমুু, তোফায়েল আহমেদ, মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কর্নেল (অব:) ফারুক খান, ওবায়দুল কাদের, মাহবুবউল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবীর নানক, ড. হাছান মাহমুদ, দিলিপ বড়ুয়া, মহিউদ্দিন খান বাদল ও আবদুস সোবহান গোলাপ অংশগ্রহণ করেন।

এ দিকে, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নেতৃত্বে সংলাপে অংশ নিয়েছেন জাপার সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ, কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, এম এ ছাত্তার, কাজী ফিরোজ রশীদ, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমীন হাওলাদার, অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন খান, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সাহিদুর রহমান, শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, ফখরুল ইমাম, মজিবুল হক চুন্নু, সালমা ইসলাম, সুনীল শুভ রায়, এস এম ফয়সল চিশতী, মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, মসিউর রহমান রাঙা, তাজ রহমান, সোলায়মান আলম শেঠ, আতিকুর রহমান আতিক, মেজর (অব:) খালেদ আক্তার, সফিকুল ইসলাম সেন্টু, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, যুগ্ম মহাসচিব লিয়াকত হোসেন খোকা, নুরুল ইসলাম ওমর, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের চেয়ারম্যান মাওলানা এম এ মান্নান, মহাসচিব এম এ মতিন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাহফুজুল হক, যুগ্ম মহাসচিব জালাল আহমেদ, জাতীয় ইসলামী মহাজোটের চেয়ারম্যান আবু নাসের ওয়াহেদ ফারুক ও বিএনএ’র চেয়ারম্যান সেকেন্দার আলী মনি। 


আরো সংবাদ



premium cement