কওমী আলেমদের ‘শোকরানা মাহফিলে’ যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০৪ নভেম্বর ২০১৮, ০৯:১৩, আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৮, ১২:২৫
হেফাজতে ইসলাম ও কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি’আতিল কওমিয়া বাংলাদেশের উদ্যোগে আজ রোববার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘শোকরানা মাহফিল’ এর আয়োজন করা হয়।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
‘শোকরানা মাহফিলে’ সভাপতিত্ব করবেন হেফাজতে ইসলামের আমীর ও চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক মাওলানা শাহ আহমাদ শফী। সকাল ১০টা থেকে এই মাহফিলের কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
ঢাকাসহ সারা দেশের কওমি মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বাস, ট্রেন, লঞ্চে করে ভোর থেকেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে রওনা দিয়েছেন। রাজধানীর মিরপুর, ফার্মগেট, মোহাম্মদপুর, গুলিস্তান ও শাহবাগসহ বিভিন্ন জায়গায় মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদেরকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শোকরানা মাহফিলে অংশ নিতে যেতে দেখা গেছে।
এ নিয়ে গতকাল শনিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে নগরবাসীকে যানজটের বিষয়টি উল্লেখ করে সতর্ক করা হয়েছে। বিপুল পরিমাণ জনসমাগমের কথা উল্লেখ করে বিশেষ যান চলাচল নির্দেশনা দিয়েছে ডিএমপি।
কওমি মাদরাসার দাওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্সের (ইসলামিক স্টাডিজ ও আরবি) সমমানের স্বীকৃতির জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাতে এই শোকরানা মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। যদিও কওমি আলেমদের কেউ কেউ এই শোকরানা মাহফিলেন বিরোধীতা করেছেন।
আরো পড়ুন :
শোকরানা মাহফিলের 'রাজনৈতিক বার্তা'
বিবিসি
০৪ নভেম্বর ২০১৮, ০৮:১২
বাংলাদেশে কওমি মাদরাসার দাওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্সের সমমানের করে আইন পাস হয়েছে - ছবি : সংগ্রহ
কওমি মাদরাসার দাওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্সের সমমানের স্বীকৃতির জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাতে আজ ঢাকায় মাদরাসাগুলোর শিক্ষক শিক্ষার্থীদের যে সমাবেশ ডাকা হয়েছে - তার অন্যতম উদ্যোক্তা মাওলানা ফরিদউদ্দীন মাসউদ বলছেন, কোনো রাজনৈতিক বার্তা দেয়া এ সমাবেশের উদ্দেশ্য নয়।
বিবিসি বাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ফরিদউদ্দীন মাসউদ বলেন, এর মধ্যে কেউ রাজনৈতিক বার্তা দেখতেই পারেন - তবে তা এ সমাবেশের মূল উদ্দেশ্য নয়।
তার কথায়, কওমি মাদরাসার দাওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্সের সমমানের স্বীকৃতির জন্য প্রধানমন্ত্রীকে শুকরিয়া ও কৃতজ্ঞতা জানাতেই এ সমাবেশ।
"এ সমাবেশের সাধারণ বার্তাটা এটাই যে প্রধানমন্ত্রী আলেমদের সাথে, মুসলমানদের সাথে - যে ওয়াদা করেছিলেন, সেই ওয়াদা তিনি রক্ষা করেছেন, বাস্তবায়ন করেছেন।"
"তাই তার ওপর আস্থা রাখা যায় যে ভবিষ্যতেও তার ওয়াদার বাস্তবায়ন তিনি করবেন" - বলেন মাসউদ।
এ অনুষ্ঠানে কওমি মাদ্রাসাগুলোর কয়েক লাখ শিক্ষক ও শিক্ষার্থী যোগ দেবেন। এ সংবর্ধনা দেবে কওমী মাদ্রাসাগুলোর একটি সংগঠন হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতুল কাওমিয়া বাংলাদেশ।
এতে দশ লাখের বেশি মানুষ জমায়েত হবেন বলে জানিয়েছেন আয়োজকেরা। এই সংবর্ধনার কারণে রোববার জেএসসি-জিডিসি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
এর অন্যতম উদ্যোক্তা মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদের কাছে বিবিসি বাংলার সাইয়েদা আক্তার জানতে চেয়েছিলেন, দাওরায়ে হাদিসকে স্নাতকোত্তরের সমমানের স্বীকৃতি তো অনেক আগেই দেয়া হয়েছে, সেজন্য প্রধানমন্ত্রীকে এখন কেন সংবর্ধনা দেয়া হচ্ছে?
জবাবে তিনি বলেন, কওমী মাদ্রাসার একটা বিরাট অংশের জন্য এটা ছিল দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা। তারা দীর্ঘদিন এ স্বীকৃতি থেকে বঞ্চিত ছিল। নজিরবিহীনভাবে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এ স্বীকৃতি দিয়েছেন সেজন্যই তাকে এ কৃতজ্ঞতা । "হাদিসে আছে যে মানুষের প্রতি শুকরিয়া জ্ঞাপন করে না সে আল্লাহরও শুকরিয়া জ্ঞাপন করে না। এজন্য এ অনুষ্ঠানের নামকরণ হয়েছে শোকরানা মাহফিল।"
নির্বাচনের আগে ১০ লাখ লোকের এত বড় সমাবেশ করে তারা কি কোন বার্তা দিতে চাইছেন?
এ প্রশ্নের জবাবে মাসউদ বলেন, আলেমদের এত বড় জমায়েত তো দেশবাসীকে বার্তা দেবেই। এটা তো স্বাভাবিক।
সেই বার্তাটা কি তা ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, সেটা হলো ব্যক্তি শেখ হাসিনার ওপর আস্থা। যে তিনি যা ওয়াদা করে ন তা রক্ষা করেন।
তাহলে কি তারা আওয়ামী লীগের প্রতি এক ধরণের সমর্থন জ্ঞাপন করবেন এ সমাবেশে?
জবাবে মাওলানা ফরীদউদ্দীন মাসউদ বলেন, এটা পার্টি বা রাজনীতির হিসেবে সমর্থন নয়, সেটা হলো ব্যক্তি শেখ হাসিনার ওপর আস্থা। যে তিনি যা ওয়াদা করেন তা রক্ষা করেন।
এত বিশাল সংখ্যক মানুষের একটি সমাবেশ সরকার হতে দিচ্ছে যা অনেক রাজনৈতিক দলকেই দেয়া হয়নি, এর মাধ্যমে আওয়ামী লীগের সঙ্গে তাদের ঘনিষ্ঠতার একটি বার্তা লোকে পাবে। এর অর্থ কি এই যে নির্বাচন পর্যন্ত এ ঘনিষ্ঠতা দীর্ঘায়িত হবে?
এ প্রশ্নের জবাবে মাসউদ বলেন, এটা মৌলিকভাবে কোন রাজনৈতিক সভা নয়, রাজনৈতিক মঞ্চের পক্ষ থেকে এ সভা করা হচ্ছে না। সুতরাং অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলিকে কি কারণে প্রশাসন অনুমতি দেয়নি বা দিয়েছে- সেটা এখানে ভিন্ন কথা। কারণ এটা একটা ধর্মীয় সমাবেশ - স্বাভাবিক ভাবেই এর অনুমোদন হতেই পারে। কোন রাজনৈতিক স্বার্থের সাথে এটাকে সংশ্লিষ্ট করাটা মনে হয় ঠিক হবে না।
তবে তিনি বলেন, "মানুষ যেহেতু সামাজিক জীব, রাজনীতি তার জীবনের অঙ্গ - তাই কেউ হয়তো রাজনৈতিক বার্তা পেতেও পারে। কিন্তু এটা তার উদ্দেশ্য নয়।"
নির্বাচনের আগে ধর্মপ্রাণ মানুষের ভোট আকর্ষণের ক্ষেত্রে এ সমাবেশ কি একটা ভুমিকা রাখবে?
"এটা প্ল্যাটফর্ম হিসেবে নয়, জনগণ হয়তো এরকম ইঙ্গিত পেতেও পারে। কিন্তু এটা এই সমাবেশের উদ্দেশ্য নয়।"
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা