২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সংলাপে কী পেয়ে সন্তুষ্ট হলেন বি চৌধুরী

সংলাপে বি চৌধুরীর নেতৃত্বে যুক্তফ্রন্ট অংশ নেয়। - ছবি: সংগৃহীত

বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ও যুক্তফ্রন্ট চেয়ারম্যান, অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী (বি. চৌধুরী) বলেছেন, ‘আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। আমরা সন্তুষ্ট। আরো আলোচনা হবে।’

গতকাল শুক্রবার রাত ১১টায় সাড়ে তিন ঘণ্টাব্যাপী সংলাপ শেষে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় তিনি এ মন্তব্য করেন।

সংলাপে এমন কী পেলেন যে যুক্তফ্রন্ট সন্তুষ্ট হলো আর আওয়ামীলীগই বা এমন কী ছাড় দিল যুক্তফ্রন্টকে কে তারা হ্যাপী হলো।

সংলাপ শেষে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপ পজেটিভ হয়েছে। নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে তারা অত্যন্ত গঠনমূলক ও ইতিবাচক কথা বলেছেন। আমাদের কাছে মনে হয়েছে তারা হ্যাপি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, কিছু কিছু বিষয়ে তারা দাবি হিসেবে এনেছেন। সে দাবিগুলো আমরা মেনে নিয়েছি। সবতো আর মানা যায় না। এখানে সংবিধান সংশোধনের সঙ্গে কিছু দাবি জড়িত। তবে তাদের ধন্যবাদ দিতে হবে যে সংবিধানে সংশোধন কিংবা পরিবর্তন করতে হবে এমন কোনো মেজর দাবি করেননি। আলোচনা থেকে স্পষ্ট যে তারা সরকার পরিবর্তন কিংবা নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে জোর কোন দাবি উত্থাপন করেনি।

তবে বি চৌধুরীর দলের নেতারা স্পষ্ট করে কিছু বলেননি আসলে তারা প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে কী পেয়েছেন। তারা সাতটি দাবি উত্থাপন করেছেন।

এর আগে রাত ৮টায় সংলাপ শুরু হয়। আওয়ামী লীগের সভাপতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ক্ষমতাসীন জোট নেতাদের সাথে যুক্তফ্রন্টের ২১ সদস্যের প্রতিনিধিদলের এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। এতে যুক্তফ্রন্টের পক্ষে নেতৃত্ব দেন বি. চৌধুরী।

সংলাপ শেষে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, বৈঠকে ভালো আলোচনা হয়েছে। আমার ধারণা তারা (যুক্তফ্রন্ট) নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন।

জাসদের (একাংশ) কার্যকরী সভাপতি মইন উদ্দীন খান বাদল বলেন, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে কথা হয়েছে। তারা (যুক্তফ্রন্ট) বলেছে, এই সরকার থাকলেও নিষ্ক্রিয় থাকতে হবে। আমরা বলেছি, সংসদ শেষ হওয়ার পর থেকে এই সরকার নিষ্ক্রিয়। সরকার মেজর কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না। নির্বাচনী এলাকায় তারা (সরকার) কোনো প্রতিশ্রুতি দিতে পারবে না।

সংলাপে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু করতে যুক্তফ্রন্ট সাত দফা দাবি তুলে ধরেছে। দাবিগুলো হচ্ছে- ১. নির্বাচনে প্রার্থীদের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড অর্থাৎ সবার জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। সংসদ ভেঙে দিতে হবে, সম্ভব না হলে নিষ্ক্রিয় করতে হবে। এ জন্য তফসিল ঘোষণার পর এমপিরা সংশ্লিষ্ট এলাকায় কোনো প্রকল্প উদ্বোধন বা প্রতিশ্রুতি যাতে না দিতে পারেন সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। প্রয়োজনীয় আইন করে মন্ত্রী ও এমপিদের সরকারি সুযোগ-সুবিধা প্রত্যাহার করতে হবে এবং সরকারি দলের প্রার্থীদের বিল বোর্ড, ব্যানার, পোস্টার অপসারণ করতে হবে।

২. নির্বাচনের সাথে প্রত্য বা পরোভাবে জড়িত কর্মচারীদের নির্বাচন কমিশনের অধীনে ন্যস্ত করতে হবে। নির্বাচন কমিশন শতভাগ রাষ্ট্রপতির অধীনস্থ করতে হবে।

৩. নির্বাচনকালীন সরকার জাতীয় সরকার গঠন : প্রয়োজনে এক দিনের জন্য সংসদ ডেকে জাতীয় সরকার গঠন করা যেতে পারে অথবা মন্ত্রিপরিষদে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বা জোট থেকে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েও একটি সন্তোষজনক নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা যেতে পারে। নির্বাচনে সব ধরনের নিরপেতা বজায় রাখার উদ্দেশ্যে নিরপে নির্বাচনকালীন সরকার অথবা বর্তমান সরকারের নির্বাচন বিষয়ে সম্পূর্ণ মতা সীমিত করতে হবে।

৪. নির্বাচনের আগে ও পরে যাতে শান্তি-শৃঙ্খলার বিঘ্ন না ঘটে সেহেতু সেনাবাহিনীকে নির্বাচনের দুই সপ্তাহ আগে এবং নির্বাচনের দুই সপ্তাহ পর পর্যন্ত মোতায়েন করতে হবে এবং নির্বাচনের দিন সেনাবাহিনীকে সীমিত মতা দিতে হবে যেমন, আটক রাখার মতা ও তাদের ভোটকেন্দ্রে থাকতে দিতে হবে; যাতে করে ভোটের দিন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি না হয় এবং ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন।

৫. ইভিএম : আগামী নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার সঠিক হবে না।
৬. নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক কারণে আটক বন্দীদের মুক্তি দিতে হবে।
৭. নির্বাচন সম্পর্কিত মামলা নির্বাচনের পর এক মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে। সেই ল্েয প্রয়োজনীয় আইন অতি সত্বর প্রণয়ন করতে হবে।

সংলাপে অংশ নেয়া প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্যরা হচ্ছেন, বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব মেজর (অব:) আবদুল মান্নান, দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য শমসের মবিন চৌধুরী, গোলাম সারোয়ার মিলন, আবদুর রউফ মান্নান, ইঞ্জিনিয়ার মুহম্মদ ইউসুফ, ভাইস চেয়ারম্যান মাহমুদা চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার ওমর ফারুক, সাবেক সংসদ সদস্য এইচ এম গোলাম রেজা, বিএলডিপি সভাপতি নাজিম উদ্দিন আল আজাদ, বিএলডিপি সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি বাংলাদেশ ন্যাপের সভাপতি জেবেল রহমান গানি, মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া, ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি এনডিপির চেয়ারম্যান খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তুজা, বাংলাদেশ জনতা পার্টির সভাপতি শেখ আসাদুজ্জামান, বিকল্পধারা বাংলাদেশের সহসভাপতি মাহবুব আলী, বাংলাদেশ জন দলের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান জয় চৌধুরী, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ইউনাইটেড মাইনরিটি ফ্রন্টের চেয়ারম্যান দীলিপ কুমার দাস, লেবার পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হামদুল্লাহ আল মেহেদী, বিকল্পধারা বাংলাদেশের নির্বাহী সদস্য, সাবেক এমপি, মজহারুল হক শাহ চৌধুরী এবং এনডিপি মহাসচিব মো: মাযহারুল হোসেইন ঈসা। এই সংলাপে নৈশভোজে পাঁচ পদের খাবার খেতে চেয়েছেন বিকল্পধারার প্রেসিডেন্ট ডা: এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী।

গত ২৯ অক্টোবর সংলাপ চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি দিয়েছিলেন বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ও যুক্তফ্রন্ট চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী (বি. চৌধুরী)। পরের দিন ৩০ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই জোটকে সংলাপের আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি দেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement
চুয়েট শিক্ষার্থীদের সড়কে অবস্থান অব্যাহত, ঘাতক বাসচালক গ্রেফতার তামাক পণ্যে সুনির্দিষ্ট করারোপের দাবিতে এনবিআর চেয়ারম্যানের কাছে ২৫ সংসদ সদস্যের চিঠি প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনীতে মহিষের আক্রমণে বাবা-ছেলেসহ আহত ৪ গফরগাঁওয়ে গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার তীব্র মাত্রায় হিংস্র হয়ে উঠেছে সরকার : মির্জা ফখরুল মিরসরাইয়ে মৃত্যুর ১৫ দিন পর ব্যাংক কর্মকর্তার কবর থেকে লাশ উত্তোলন দেশে দেড় হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং, দুর্ভোগে মানুষ রংপুরে মহানবী সা:-কে নিয়ে কটূক্তি করায় ছাত্রলীগ কর্মী গ্রেফতার বাড়ছে না শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি, অনলাইনে ক্লাস চালুর চিন্তা বিশ্বের অন্যতম স্মার্ট হজ ব্যবস্থাপনা হবে বাংলাদেশে : ধর্মমন্ত্রী সিলেটে ৪৪ লাখ টাকার ভারতীয় চিনিসহ গ্রেফতার ৪

সকল