১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সংলাপ নিয়ে কী ভাবছেন মওদুদ?

বিএনপি
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ - ফাইল ছবি

আগামীকাল বৃহস্পতিবার গণভবনে আওয়ামী লীগের সাথে সংলাপে বসতে যাচ্ছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। যদিও মঙ্গলবার জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা বৃদ্ধির পর এ সংলাপের ফলাফল নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এর মধ্যেই সংলাপ নিয়ে নিজেদের মধ্যে বৈঠক করেছেন ঐক্যফ্রন্টের নেতারা।

তবে বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদ বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, সংলাপের ফলাফল নিয়ে আগে থেকে সন্দেহ পোষণ করা ঠিক হবে না।

তিনি বলেন, ‘আমাদেরকে ধরে নিতে হবে যে সরকারের একটা সদিচ্ছা আছে আলোচনার মাধ্যমে সংকটের সমাধান করার জন্য। সেজন্য আগে থেকে যদি আমরা সন্দেহ করা শুরু করি বা অবিশ্বাস করা শুরু করি, তাহলে তো আমরা ফলপ্রসূ কিছু অর্জন করতে পারবো না।’

মি. আহমদ বলেন, সংলাপে তারা খোলা মনে অংশগ্রহণ করবেন এবং সেখানে তাদের বক্তব্য তুলে ধরবেন।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সবচেয়ে বড় দল হচ্ছে বিএনপি। বিএনপির কয়েকজন নেতা এরই মধ্যে সংলাপের ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন।

যারা সংশয় প্রকাশ করেছেন সেটা তাদের ব্যক্তিগত মত হতে পারে। এমনটাই মনে করছেন মওদুদ আহমদ।

‘সবার যে একই মত হবে তাতো না। অনেকে মনে করেন, অনেকে বিশ্বাস করতে চাচ্ছেন না। অনেকে মনে করেন সরকার এটাকে ধুম্রজাল সৃষ্টি করার জন্য করেছেন। এ ধরণের মতামত থাকতে পারে’, বলেন মি. আহমদ।

‘এখনই আমি যদি বলে নিই যে তারা এটা মানবেন না, তাহলে তো আর এ সংলাপের কোনো প্রয়োজনই পড়ে না। আমরাই তো সংলাপ আহবান করেছি।’

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং বিএনপির প্রধান দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে খালেদা জিয়ার মুক্তি।

বিএনপি নেতারা এখনো বলছেন যে, খালেদা জিয়াকে ছাড়া তারা নির্বাচনে যাবেন না।

কিন্তু দুর্নীতির দুটি মামলার দণ্ডিত হওয়ার কারণে নির্বাচনে খালেদা জিয়া অংশ নিতে পারবেন কি না সেটি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

সংলাপের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে কোনো সুরাহা হবে? - এ প্রশ্নে মওদুদ আহমদ মনে করেন, সেটি অসম্ভব কোনো বিষয় নয়।

‘সরকার যদি মনে করেন যে বেগম জিয়াকে মুক্তি দেয়া দরকার, জামিনের যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে রেখেছেন.. এখানে অ্যাটর্নি জেনারেল হাইকোর্টে বা সুপ্রিম কোর্টে জামিনের প্রশ্ন আসলে উনি ওটাকে আপত্তি না করলেই তো হয়ে গেল।’

বিএনপির এই সিনিয়র নেতা মনে করেন, সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে নির্বাচন পরিচালনার জন্য নির্দলীয় সরকার ফিরিয়ে আনা সম্ভব। কারণ, সংসদের অধিবেশন শেষ হলেও গেলেও ১০তম সংসদ এখনো জীবিত আছে। যে কোনো সময় সংসদের অধিবেশন আহবান করতে কোনো আইনগত বাধা নেই বলে উল্লেখ করেন মওদুদ আহমদ।

আরো পড়ুন :
সংলাপের জন্য ১৬ জনকে চূড়ান্ত করেছে ঐক্যফ্রন্ট
নয়া দিগন্ত অনলাইন, ৩০ অক্টোবর ২০১৮
প্রধানমন্ত্রীর সাথে গণভবনে সংলাপে অংশ নেয়ার জন্য ১৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের তালিকা চূড়ান্ত করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। মঙ্গলবার বিকেলে মতিঝিলে ড. কামাল হোসেনের চেম্বারে অনুষ্ঠিত বৈঠকে নেতৃবৃন্দ এই তালিকা চূড়ান্ত করে।

ঐক্যফ্রন্টের নেতা আ স ম আব্দুর রব গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ১৬ জনের একটি দল যাবে গণভবনের সংলাপে অংশ নিতে। ১ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সংলাপের জন্য ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের নৈশভোজের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে।

ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য জগলুল হায়দার আফ্রিক, জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, সহ-সভাপতি তানিয়া রব, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, সাবেক ছাত্রনেতা সুলতান মুহাম্মদ মনসুর, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ।

সংলাপের প্রেক্ষাপট
গত বেশ কয়েকদিন ধরেই জাতীয় রাজনীতিতে সংলাপের বিষয়টি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। গত রোববার জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে সংলাপের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে একটি চিঠি দেয়া হয়। পরদিন সোমবার প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে মন্ত্রীদের এক অনির্ধারিত বৈঠক থেকে সেই সংলাপের আহ্বানে সাড়া দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় সরকারের পক্ষ থেকে।

ওই দিন বিকেলে আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সংবাদ সম্মেলন করে তাদের সংলাপের আহবানে সাড়া দেয়ার কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের জানান, তফসিলের আগেই ঐক্যফ্রন্টের সাথে সংলাপে রাজি আছে সরকার। সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আজ আমি আপনাদের ও পুরো জাতিকে সারপ্রাইজ দেবো। আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনার সম্মতিক্রমে একটি সুখবর জানাবো। এ খবরে রাজনীতির মাঠে শান্তির বাতাস বইবে বলে মনে করি।’

পরে তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ড. কামাল হোসেন একটি চিঠি দিয়েছেন। আজ মন্ত্রিসভা বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী ও সভাপতি শেখ হাসিনা উপস্থিত নেতাদের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করেন। অনির্ধারিত এ বৈঠকে আলোচনা শেষে সর্বসম্মতি সিদ্ধান্ত হয়েছে যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সংলাপে বসবে। কারণ শেখ হাসিনার দরজা কারও জন্য বন্ধ থাকে না।’

ঐক্যফ্রন্টের নেতারা এত দ্রুত সরকারের সাড়া পেয়ে বিস্মিত হলেও তারা বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে নিয়েছেন। তারা সরকারের এই সংলাপের আগ্রহকে স্বাগত জানান। সোমবারই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে ফোন করেন ওবায়দুল কাদের। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা ও গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টুকে ফোন করে তিনি সংলাপের আমন্ত্রণ জানান। সংলাপের আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের জানতে চান ঐক্যফ্রন্টের কতজন সদস্য সংলাপে অংশ নেবে।

ওই দিন রাত ৮টার দিকে এই দু’নেতার মধ্যে ফোনে কথা হয়। এ সময় ঐক্যফ্রন্টকে গণভবনে নৈশভোজের আমন্ত্রণ জানান ওবায়দুল কাদের। জবাবে মহসিন মন্টু তার জোটের নেতাদের সাথে আলোচনা করে সময় দিবেন বলে জানান। পরদিন মঙ্গলবার সংলাপের বিষয়ে ঐক্যফ্রন্টকে আনুষ্ঠানিক চিঠি দেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর চিঠি পৌঁছে দিতে মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর বেইলি রোডে ড. কামাল হোসেনের বাসায় যান আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ। ড. কামাল তার চিঠি গ্রহণ করে কিছুক্ষণ কথাবার্তা বলেন। এ সময় সেখানে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য ও গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টুও উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার চিঠির শুরুতেই ড. কামাল হোসেনকে সালাম ও শুভেচ্ছা জানান। তিনি লিখেন, ‘জনাব, সালাম ও শুভেচ্ছা নিবেন। আপনার ২৮ অক্টোবর ২০১৮ তারিখের পত্রের জন্য ধন্যবাদ। অনেক সংগ্রাম ও ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে সংবিধানসম্মত সকল বিষয়ে আলোচনার জন্য আমার দ্বার সর্বদা উন্মুক্ত। তাই, আলোচনার জন্য আপনি যে সময় চেয়েছেন, সে পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ০১ নভেম্বর ২০১৮ তারিখ সন্ধ্যা ০৭-০০ টায়, আপনাদের আমি গণভবনে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।’

সংলাপে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ কারা এ অংশ নেবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বুধবার বিকেলে আবারো বৈঠকে বসেন ঐক্যফ্রন্ট নেতারা। মতিঝিলে গণফোরাম অফিসে ড. কামাল হোসেনের চেম্বারে ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য জগলুল হায়দার আফ্রিক, জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, সহ-সভাপতি তানিয়া রব, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, সাবেক ছাত্রনেতা সুলতান মুহাম্মদ মনসুর, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ।

বৈঠক শেষে আ স ম আব্দুর রব জানান, তারা সংলাপে অংশ নেয়ার জন্য ১৬ সদস্যের একেটি প্রতিনিধি দলের তালিকা চূড়ান্ত করেছেন।


আরো সংবাদ



premium cement
সাদিক এগ্রোর ব্রাহামা জাতের গরু দেখলেন প্রধানমন্ত্রী ভারতে লোকসভা নির্বাচনে প্রথম ধাপে ভোট পড়েছে ৬০ শতাংশ সারা বিশ্ব আজ জুলুমবাজদের নির্যাতনের শিকার : ডা. শফিকুর রহমান মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশী : পররাষ্ট্রমন্ত্রী চন্দনাইশ, বাঁশখালী ও বোয়ালখালীতে ৩ জনের মৃত্যু গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়াল শ্যালকের অপকর্মে দুঃখ প্রকাশ করলেন প্রতিমন্ত্রী পলক রাজশাহীতে ট্রাকচাপায় ৩ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত পাবনায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে হতাহত ২২ বিল দখলের চেষ্টা, জেলা ছাত্রলীগ নেতাকে গণপিটুনি ‘শাহাদাতের তামান্নায় উজ্জীবিত হয়ে কাজ করলে বিজয় অনিবার্য’

সকল