মইনুল হোসেনকে ‘রাজনৈতিকভাবে’ নিয়েছে আওয়ামী লীগ, বিবিসির জিজ্ঞাসা
- বিবিসি
- ২৩ অক্টোবর ২০১৮, ২১:৩২
আইনজীবী এবং সংবাদপত্র মালিক মইনুল হোসেনকে যখন আটক করা হয়, তার কয়েক ঘন্টা আগেই সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনের এক সংবাদ সম্মেলনে মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে নারী সাংবাদিকদের আরো মামলা করার পরামর্শ দিয়েছিলেন।
সম্প্রতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টে বেশ সক্রিয় ভূমিকায় দেখা গেছে মইনুল হোসেনকে। এই ফ্রন্ট মনে করছে, মইনুল হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে রাজনৈতিক কারণেই। তবে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করছেন।
সাবেক সেনা সমর্থিত তত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হোসেন সম্প্রতি বিভিন্ন টক-শোতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কড়া সমালোচনাও করেছেন। তবে তার নামে মামলা হয় একটি টিভি অনুষ্ঠানে সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে ‘চরিত্রহীন’ বলার পর।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেত্রী রুমিন ফারহানা মনে করেন, হোসেনের বিরুদ্ধে যেভাবে একের পর এক মামলা করা হয় - তার পেছনে রাজনৈতিক কারণ আছে। অবশ্য তিনি সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে ‘চরিত্রহীন’ বলার কারণে যারা প্রতিবাদ করেছেন - তাদের সাধুবাদও জানান।
‘এই একটি বিশেষ ঘটনায় আমরা সমস্ত রাষ্ট্র-যন্ত্রকে অত্যন্ত তৎপর দেখেছি। অবশ্যই বিষয়গুলো তো কিছুটা প্রশ্নের জন্ম দেয়।’ বলছিলেন রুমিন ফারহানা।
তিনিও মনে করেন, জাতীয় ঐক্য ফ্রণ্টের সাথে মইনুল হোসেন সম্পৃক্ত থাকার কারণেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একই সাথে ঐক্য ফ্রন্টের সাথে সম্পৃক্ত থাকার কারণে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে জমি দখল এবং চাঁদাবাজির মামলা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘হঠাৎ কেন এ মামলাগুলো একসাথে নড়ছে-চড়ছে? হঠাৎ কেন এ মানুষগুলোকে ব্যক্তিগতভাবে টার্গেট করা হচ্ছে? এটা তো প্রশ্নের জন্ম দেয়। তারা যদি ঐক্য প্রক্রিয়ায় না থাকতো তাহলে হয়তো ঘটনাগুলো এভাবে ঘটতো না।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং বেসরকারি সংস্থা উবিনীগ-এর ফরিদা আক্তার মনে করেন, আগামী নির্বাচনে জাতীয় ঐক্য ফ্রন্ট হয়তো ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে।
ঐক্য ফ্রন্টকে দূর্বল করার জন্য এর সাথে সম্পৃক্তদের প্রশ্নবোধক করার জন্য হয়তো আওয়ামী লীগ মইনুল হোসেনকে নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে, এমনটাই মনে করেন ফরিদা আক্তার। তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন জায়গায় মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে যারা মামলা দায়ের করেছেন তাদের অনেকেই ক্ষমতাসীন দলের সাথে সম্পৃক্ত এবং তাদের রাজনৈতিক পরিচয় আছে।
মইনুল হোসেনকে নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোভাব বুঝতে পেরে এসব মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের নেতারা বলছেন।
তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, মইনুল হোসেনকে রাজনৈতিক কারণে গ্রেফতার করা হয়নি কিংবা তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক কারণে মামলাও দায়ের করা হয়নি। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রাজ্জাক দাবি করেন, সমাজের 'সচেতন মানুষ' মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে।
এর সাথে আওয়ামী লীগের কোন সম্পৃক্ততা নেই বলে তিনি উল্লেখ করেন।
‘আমাদের দল থেকে কোন নির্দেশনা নেই। সেটা করলে ওবায়দুল কাদের করতো কিংবা কমিটিতে যারা আছে তারা করতো। আমি করতাম। আমরা কিন্তু এ ধরণের মামলা করতে যাইনি,’ বলেন আব্দুর রাজ্জাক।
ড. রাজ্জাক বলেন, ‘জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টকে’ আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে কোন গুরুত্ব দিচ্ছে না।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা