মইনুল হোসেনকে গ্রেফতারের কারণ বললেন আইনমন্ত্রী
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২৩ অক্টোবর ২০১৮, ১৭:২৮
মানহানীর মামলায় জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে। কিন্তু এই ধরনের একজন ব্যাক্তিকের শুধুমাত্র অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানোর বিষয়টি নিয়ে নানা আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সেমিনার শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কথা বলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপি। সেখানে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা মইনুল হোসেনকে গ্রেপ্তার করার প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, মানহানি মামলায় মইনুল হোসেনকে গ্রেপ্তার করা নজিরবিহীন ঘটনা। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনকে ব্যাহত করতেই এই গ্রেপ্তার। এ বিষয়ে আইনমন্ত্রীকে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকেরা।
আইনমন্ত্রী বলেছেন, ‘প্রথম কথা হচ্ছে যে, আগে সরকারের বিরুদ্ধে টক শো করলেও তাঁকে আমরা গ্রেপ্তার করিনি। তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে কারণ—তার সাথে এক ইন্টারভিউতে সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে তিনি যা বলেছেন তাতে শুধু সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টি ক্ষুণ্ন হয়েছেন, এবং তাঁর মানহানি হয়েছে তা না। বাংলাদেশের নারী জনগোষ্ঠী মনে করেন, এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য নারী সমাজকে অপমানিত করেছে এবং সেখান থেকেই মামলা হয়েছে।’
আইনমন্ত্রী আরও বলেছেন, এই মন্তব্যের জন্য আদালতের পরোয়ানা অনুসারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পদক্ষেপ না নিলে বাংলাদেশের নারী সমাজ ক্ষুব্ধ হতো বলে আমার ধারণা। সে জন্যই পরোয়ানা দেওয়ার পর তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের মোজ্জাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে ‘উন্নয়নের রোল মডেল বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন আনিসুল হক। রাষ্ট্রবিজ্ঞান সমিতি এ সেমিনারের আয়োজন করে।
আরো পড়ুন : মইনুল হোসেনের জামিন আবেদন নামঞ্জুর, কারাগারে প্রেরণ
আদালত প্রতিবেদক ২৩ অক্টোবর ২০১৮, ১৪:০৮
রংপুরে দায়ের হওয়া একটি মানহানি মামলায় গ্রেফতার সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট আইনজ্ঞ ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার অতিরিক্ত মহানগর হাকিম (এসিএমএম) কায়সারুল ইসলামের আদালত এ আদেশ দেন।
আদালতে মইনুলের পক্ষে আইনজীবী হিসেবে ছিলেন খন্দকার মাহবুব হোসেন, অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া ও ঢাকা বারের সভাপতি গোলাম মোস্তফা খান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রায় পাঁচ শতাধিক আইনজীবী।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন মহানগর পিপি আব্দুল্লাহ আবু।
সোমবার দিবাগত রাতে রংপুরে দায়ের করা মানহানির এক মামলায় জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রবের উত্তরার বাসা থেকে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ।
গ্রেফতারের পর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়। সেখান থেকেই আজ মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা মহানগর মুখ্য হাকিমের আদালতে নেয়া হয়।
রংপুরে সোমবার ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে ১০ কোটি টাকার মানহানির মামলা করেন মানবাধিকারকর্মী মিলি মায়া। তিনি রংপুর নগরীর মুলাটোল মহল্লার বাসিন্দা।
মামলাটি তার পক্ষে রংপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দাখিল করেন সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আইনুল হোসেন। আদালতের বিচারক আরিফা ইয়াসমিন মুক্তা মামলাটি গ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য, সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে ‘চরিত্রহীন’ বলায় ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে ঢাকাসহ দেশের বেশ কয়েকটি এলাকায় মানহানির মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটিতে তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন।
গত ১৬ অক্টোবর একাত্তর টেলিভিশনের টক শো ‘একাত্তরের জার্নাল’-এ সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টির এক প্রশ্নে রেগে গিয়ে মইনুল হোসেন বলেন, ‘আপনার দুঃসাহসের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ দিচ্ছি। আপনি চরিত্রহীন বলে আমি মনে করতে চাই। আমার সঙ্গে জামায়াতের কানেকশনের কোনো প্রশ্নই নেই। আপনি যে প্রশ্ন করেছেন তা আমার জন্য অত্যন্ত বিব্রতকর।’