১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট’কে আন্দোলনের মাঠে চায় বাম নেতারা

‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট’কে আন্দোলনের মাঠে চায় বাম নেতারা - সংগৃহীত

এগারোটি লক্ষ্য অর্জনে সাত দফা দাবি নিয়ে গঠিত ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট’কে আন্দোলনের মাঠে, রাজপথে দেখতে চায় দেশের বাম প্রগতিশীল নেতারা। তাদের মতে, ঘোষিত দাবি নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যদি আন্দোলনের মাঠে আসতে পারে তবে জনসমর্থন পাবে।

নির্বাচন সামনে রেখে গঠিত ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে’র দাবিগুলোর সাথে বাম-প্রগতিশীল দলগুলোর নির্বাচন প্রশ্নে করা দাবির মিল আছে। কিন্তু তাদের সাথে কোনো ঐক্য হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন কোনো কোনো বাম নেতা। তবে আন্দোলনে মাঠে থাকলে ‘প্রত্যক্ষ ঐক্য’ তৈরি না হলেও ‘পরোক্ষ ঐক্য’ থাকে বলেও কেউ কেউ মনে করেন।

তাদের ভাষ্য মতে, ‘বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মতো দুঃশাসনের শক্তির সঙ্গে জোটবদ্ধ হবো না, বিকল্প শক্তি গড়ে তুলবো।’ তবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের রাজপথের কর্মসূচির ওপর ঐক্যের বিষয়টি নির্ভর করবে বলেও মত দেন কেউ কেউ।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে সুস্পষ্ট কিছু বলার সময় আসেনি বলে মনে করেন বাম নেতারা। নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কার চেয়ে রাজপথে আন্দোলনে আছেন জানিয়ে তারা বলেন, ‘দেশে এখন নির্বাচনের পরিবেশ নেই, নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হলে অংশগ্রহণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।’

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাত দফায় যা আছে :

১. অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে সরকারের পদত্যাগ, জাতীয় সংসদ বাতিল, সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার গঠন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার নিশ্চিত করতে হবে।

২. গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন ও নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে।

৩. বাক, ব্যক্তি, সংবাদপত্র, টেলিভিশন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সব রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশের স্বাধীনতা এবং নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে।

৪. কোটা সংস্কার আন্দোলন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, সাংবাদিকদের আন্দোলন এবং সামাজিক গণমাধ্যমে স্বাধীন মত প্রকাশের অভিযোগে ছাত্রছাত্রী, সাংবাদিকসহ সবার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মুক্তির নিশ্চয়তা দিতে হবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ সব কালো আইন বাতিল করতে হবে।

৫. নির্বাচনের ১০ দিন আগে থেকে নির্বাচনের পর সরকার গঠন পর্যন্ত ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত ও নিয়ন্ত্রণের পূর্ণ ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যস্ত করতে হবে।

৬. নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে দেশি ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং সম্পূর্ণ নির্বাচন প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণে ভোট কেন্দ্র, পোলিং বুথ, ভোট গণনাস্থল ও কন্ট্রোল রুমে তাদের প্রবেশে কোনো প্রকার বিধি-নিষেধ আরোপ না করা। নির্বাচনের সময়ে গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর যেকোনো ধরনের নিয়ন্ত্রণ বন্ধ করতে হবে।

৭. নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তারিখ থেকে নির্বাচনের ফলাফল চূড়ান্তভাবে প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত চলমান সব রাজনৈতিক মামলা স্থগিত রাখা ও কোনো ধরনের নতুন মামলা না দেওয়ার নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে।

 

জোটের বিষয়ে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধ হবো না, আওয়ামী লীগের সঙ্গেও জোটে যাবো না। কারণ, ওই দুই শক্তিই দুঃশাসনের শক্তি। আমরা দুঃশাসনের দুই শক্তির বাইরে বামপন্থী-গণতান্ত্রিক-প্রগতিশীল ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি নিয়ে একটা বিকল্প শক্তি গড়ে তুলবো।’

‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক হওয়ার সুযোগ নেই’ বলে মন্তব্য করেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম।


আরো সংবাদ



premium cement