২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

এবার নিজ দল থেকেই বহিষ্কার হচ্ছেন বি.চৌধুরী!

সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিকল্পধারার প্রেসিডেন্ট এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। - ছবি: সংগৃহীত

বিকল্পধারার প্রেসিডেন্ট ও সাবেক রাষ্ট্রপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, মহাসচিব মেজর (অব:) আবদুল মান্নান ও তার ছেলে দলের যুগ্ম মহাসচিব মাহি বি চৌধুরীকে বহিষ্কার করা হতে পারে বলে বিকল্পধারার নেতারা আভাষ দিয়েছেন। সদ্য গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সংবাদ সম্মেলনে যোগ না দেয়ার প্রেক্ষিতে এ ভাঙন সুর বেজে উঠেছে বলে জানা গেছে। ফলে গত শনিবারের পর থেকে দলের বিভিন্নপর্যায়ে দফায় দফায় বৈঠক হয়। এসব বৈঠকে বেশির ভাগ নেতা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যুক্ত থেকে আন্দোলন-সংগ্রাম করার পক্ষে রয়েছেন। ফলে দলের শীর্ষ নেতাদের বহিষ্কারের কোনো বিকল্প দেখছে না বিকল্পধারা বাংলাদেশ।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, যেকোনো সময় দলটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী ও মহাসচিব মেজর (অব:) আবদুল মান্নানকে দল থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা আসতে পারে। পরে দলটির ৭১ সদস্যের একটি কমিটি আত্মপ্রকাশ করবে। নতুন এ বিকল্পধারার সভাপতি হতে পারেন বর্তমান দলটির সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নূরুল আমীন বেপারি। মহাসচিব হচ্ছেন- আহমেদ বাদল ও যুগ্ম মহাসচিব হচ্ছেন জানে আলম। নূরুল আমীন বেপারি দলের প্রেসিডেন্ট বি চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ ও আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত।

আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেস কাবে এ বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনেরও আহ্বান জানানো হয়েছে। সূত্র জানায়, বিকল্পধারা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাথেই থাকবে। সারা দেশে দলটির নেতাকর্মীরা নতুন নেতৃত্বের বিকল্পধারার জন্য অপো করছে বলে কেন্দ্রীয় নেতারা মনে করেন। প্রসঙ্গত, নিজ দল বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত ডা এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী ও বিএনপির আরেক নেতা মেজর (অব:) আবদুল মান্নানকে নিয়ে গড়ে তোলেন বিকল্পধারা বাংলাদেশ। প্রতীক হিসেবে বেছে নেয় কুলা। প্রতিষ্ঠার এই ১৪ বছরে দলটিতে কোনো কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়নি।

 

আরো পড়ুন: পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে কূটনীতিকদের যা বললেন ড. কামাল 
নয়া দিগন্ত অনলাইন, ১৮ অক্টোবর ২০১৮, ১৮:৪২


ঢাকায় অবস্থানরত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন বিএনপি ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সমন্বয়ে নব্গঠিত রাজনৈতিক জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। এই সাক্ষাতে কূটনীতিকরা ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের কাছে জানতে চেয়েছেন, জাতীয় নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্ট জয়ী হলে পরবর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী কে হবেন। এ প্রশ্নের উত্তরে ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা ড. কামাল হোসেন জানিয়েছেন, সংসদীয় সরকার ব্যবস্থায় নির্বাচিত সংসদ সদস্যরাই সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধানমন্ত্রী কে হবেন।

বৃহস্পতিবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে গুলশানে হোটেল লেকশোরে এই বৈঠকের পর বৈঠকে উপস্থিত ঐক্যফ্রন্টের একাধিক নেতা এসব কথা জানিয়েছেন। এদিন, বিকেল ৩টার দিকে কূটনীতিকদের সাথে বৈঠকে বসে ঐক্যফ্রন্ট। প্রায় ঘণ্টাখানেক চলে এই বৈঠক।


বৈঠকে শেষে ঐক্যফ্রন্টের একাধিক নেতা গণমাধ্যমকে বলেন, কূটনীতিকদের কাছে মূলত ঐক্যফ্রন্টের সাত দফা দাবি ও ১১ দফা লক্ষ্য তুলে ধরা হয়েছে। এসময় কূটনীতিকরা ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের কাছে কিছু কিছু বিষয় জানতে চান। সেসব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন ড. কামাল হোসেন।

ঐক্যফ্রন্টের নেতারা জানান, ঐক্যফ্রন্টের কাছে কূটনীতিকদের প্রধান প্রশ্ন ছিল, তারা আগামী সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আসতে পারলে তাদের সরকারের প্রধানমন্ত্রী কে হবেন? এ প্রশ্নের উত্তরে ড. কামাল হোসেন বলেন, আমাদের দেশে সংসদীয় পদ্ধতিতে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরাই সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন প্রধানমন্ত্রী কে হবেন। আমরা ক্ষমতায় এলেও সেভাবেই প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বভার দেওয়া হবে কাউকে।

বৈঠকে কূটনীতিকরা আরও জানতে জানতে চান, নবগঠিত এই জোটের মূল নেতা কে? এ প্রশ্নের উত্তরে ড. কামাল তাদের বলেন, এখানে কোনো একক নেতৃত্ব নেই। যৌথভাবেই এই জোট পরিচালিত হচ্ছে।

রাজপথের বিরোধী দল বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। তিনি কারাগারে থাকলে ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে যাবে কি না— সেটাও জানতে চান কূটনীতিকরা। এ প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল কূটনীতিকদের জানিয়েছেন, দেশে বর্তমানে সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই। সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হলে তারা অবশ্যই নির্বাচনে যাবেন।

বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটে থাকা জামায়াতে ইসলামী এবং ঐক্যফ্রন্টে স্থান না পাওয়া সাবেক রাষ্ট্রপতি ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন বিকল্পধারা নিয়েও ঐক্যফ্রন্টের স্পষ্ট অবস্থান জানতে চান কূটনীতিকরা। এ প্রসঙ্গে ড. কামালের উত্তর ছিল, এরই মধ্যে এ বিষয়ে গণমাধ্যমে ঐক্যফ্রন্টের বক্তব্য উঠে এসেছে। এর বাইরে তারা আর কোনো মন্তব্য করতে চান না।

জানা গেছে, প্রায় ৫৫ মিনিটের বৈঠকের পর ঐক্যফ্রন্টের লিয়াজোঁ কমিটির সঙ্গে একান্তে বৈঠক করেন কূটনীতিকরা। পরে কূটনীতিকদের সঙ্গে ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতাদের ব্যক্তি পর্যায়েও আলোচনা হয়। বৈঠক শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে বৈঠক নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। এখনই বলার সময় হয়নি।

পরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান বলেন, আমরা বিদেশিদের সঙ্গে ৭ দফা ও ১১ লক্ষ্য নিয়ে আলোচনা করেছি। এসব দাবি আমরা তাদের কাছে তুলে ধরেছি।

ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে কূটনীতিকরা কী বলেছেন— জানতে চাইলে বিএনপির ড. মঈন বলেন, তারা কী সিদ্ধান্ত নিয়েছে বা কী ভাবছে, সেটা তারাই বলতে পারেন। আপনারা তাদের কাছ থেকেই জেনে নিতে পারেন।

জানতে চাইলে গণফোরামের প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক বলেন, কূটনীতিকদের কাছে আমাদের সাত দফা ও ১১ লক্ষ্য তুলে ধরাই ছিল এই বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য। তাদের সঙ্গে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান বৈঠক শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় বলেন, আমাদের দাবি লক্ষ্য তাদের কাছে তুলে ধরেছি। আশা করি, ভালো ফিডব্যাক পাব। আমরা আশাবাদী। একই কথা বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরুও।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, কাতার, অস্ট্রেলিয়া, চীন, সুইজারল্যান্ড, তুরস্ক ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ ৩০টি দেশের কূটনীতিকরা এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম অংশীদার বিএনপির শীর্ষ অনেক নেতাকর্মীও উপস্থিত ছিলেন এই বৈঠকে। তাদের মধ্যে রয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর; দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান; ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, আব্দুল মান্নান; জমির উদ্দিন সরকার, সেলিমা রহমান, আব্দুল্লাহ আল নোমান, বরকত উল্লাহ বুলু, খন্দকার মাহবুব হোসেনসহ অন্যরা।

অন্যদিকে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, সহসভাপতি তানিয়া রব, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন; নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহসহ অন্যরা।


আরো সংবাদ



premium cement