২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

কারাগারে যাওয়ার আগেই জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়ে গেছেন খালেদা জিয়া

কারাগারে যাওয়ার আগেই জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়ে গেছেন খালেদা জিয়া - ছবি : সংগৃহীত

বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার আগেই জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়ে গেছেন জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাইরের কোনো শক্তি আমাদের ক্ষমতায় নিয়ে যেতে পারবে না। এজন্য ২০ দলসহ সব দল-মতের রাজনৈতিক শক্তি নিয়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলতে বলেছেন খালেদা জিয়া। বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে সরকার নেতকর্মীদের নামে গায়েবি মামলা দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ আয়োজিত ‘আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি’ শীর্ষক এক মতবিনিয়ম সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা নূর হোছাইন কাসেমীর সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তৃতা করেন, জাতীয় পার্টির (জাফর) মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আব্দুল কাদের, এনপিপি চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বাংলাদেশ লেবারপার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মাওলানা আব্দুর রকিব, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সহ-সভাপতি মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ফারুক ও মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব, মুসলিমলীগের মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের, জাগপার সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, জাতীয় পার্টির (জাফর) প্রেসিডিয়াম সদস্য আহসান হাবীব লিংকন প্রমুখ। জমিয়তের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দীর পরিচালনায় স্বাগত বক্তৃতা করেন, সংগঠনের সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী।

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশে মানুষের নির্বিঘ্নে ভোট দেয়ার কোন পরিবেশ নেই। যে নির্বাচন কমিশন পুলিশকে ভয় পায় তাদের দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করা যায় না। সরকার ক্ষমতা দখল করে রাখতে গায়েবী মামলা দিচ্ছে। গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে এ পর্যন্ত সাড়ে চার হাজার মামলা দিয়েছে। যাতে আসামী করা হয়েছে দুই লাখ ৩৩ হাজার নেতাকর্মীকে। যার মধ্যে দলের স্থায়ী কমিটি থেকে ওয়ার্ডের নেতকর্মীরাও রয়েছে।

তিনি বলেন, এভাবে মামলা দিয়ে বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে চায়। কিন্তু অতীতের কোন স্বৈরাচার এভাবে মামলা দিয়ে টিকে থাকতে পারেনি। বর্তমান সরকারও পারবে না। জনগন অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবেই।

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ওই ঘটনার পর বিএনপি সরকার নিন্দা জানিয়েছিল। সাথে সাথে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এফবিআই এবং ইন্টারপোলকে তদন্তের জন্য আনা হয়। কিন্তু বর্তমান প্রধানমন্ত্রী সে সময় তদন্ত কমিটিকে কোন প্রকার সহযোগিতা করেননি। এমনকি যে গাড়িতে গুলি লেগেছিল সেটিও তদন্ত কমিটিকে দেখতে দেয়নি। মামলার ২ নং স্বাক্ষী কখনো আদালতে স্বাক্ষী দিতে যাননি। মির্জা ফখরুল বলেন, ঘটনার পর মামলায় তারেক রহমানের নাম ছিলনা। মঈন-ফখরুদ্দিনের দুই বছরের শাসনের সময়ও তার নাম আসেনি। অথচ আওয়ামীলীগ সরকার একজন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা যিনি আওয়ামীলীগের এমপি মনোনয়ন চেয়েছিলেন সেই আব্দুল কাহার আখন্দকে এনে তারেক রহমানের নাম অর্ন্তভুক্ত করেছে। মুফতি হান্নানকে ২৪৩ দিন রিমান্ডে নিয়ে তার নামে স্বীকারোক্তি নেয়া হয়েছে। যে স্বীকারোক্তি মুফতি হান্নান পরে নিজেই মিথ্যা বলে জানিয়েছিলেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, মিথ্যাচার, অন্যায় আল্লাহও সহ্য করেন না। পৃথিবীর আদালত তারা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে, কিন্তু আল্লাহ এর সঠিক বিচার করবেন।

খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, অবিলম্বে সংসদ ভেঙ্গে পদত্যাগ করুন। নিদর্লীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করার ব্যবস্থা করুন। ইসি পুন:গঠন করুন এবং ইভিএম কেনার চিন্তা বাদ দিন।

নূর হোছাইন কাসেমী বলেন, জাতি জেগে উঠেছে। জালেম সরকারের পতন হবেই। তিনি সরকারকে আলোচনায় বসার আহবান জানিয়ে বলেন, শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমাধান না হলে জনগণ আন্দোলন করতে বাধ্য হবে। তিনি অবিলম্বে সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে নিদর্লীয় নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা, নির্বাচন কমিশন পুনঃগঠন, নির্বাচনের আগে ও পরে বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে সেনাবাহিনী মোতায়েন, ইভিএম বাতিল এবং বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়ার দাবি জানান।


আরো সংবাদ



premium cement