২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

খালেদা জিয়াকে বিশেষায়িত হাসপাতালে ভর্তির সুপারিশ মেডিকেল বোর্ডের

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া - সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন কারাবন্দী খালেদা জিয়াকে বিশেষায়িত হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা করানোর পরামর্শ দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) গঠিত মেডিকেল বোর্ড।
বিএসএমএমইউয়ের পরিচালক অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল হারুন আজ রোববার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান। তিনি বলেন, কয়েকটি সুপারিশসহ মেডিকেল বোর্ড তাদের প্রতিবেদন কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছে।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহ আল হারুন বলেন, ‘পূর্বে যে সমস্ত রোগ উনার (খালেদা জিয়া) ছিল, সেই রোগগুলোই পেয়েছেন। আর উনার শারীরিক অবস্থা এ মুহূর্তে ঝুঁকিপূর্ণ নয় এবং উনারা (মেডিকেল বোর্ড) উনাকে আরো সুচিকিৎসার জন্য অন্য একটা হাসপাতালে ভর্তি করার জন্য অ্যাডভাইস করেছেন।’ তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়কেই রেফারেল হসপিটাল হিসেবে উনারা সর্বোচ্চ পর্যায়ের বলে মতামত ব্যক্ত করেছেন।’

অধ্যাপক হারুন বলেন, মেডিকেল বোর্ডের পর্যবেক্ষণ হলো বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অসুস্থ। তবে এই অসুস্থতা কারাগারে থাকার কারণে নয়। কারাবন্দী হওয়ার আগে থেকে খালেদা জিয়ার বেশ কিছু সমস্যা ছিল। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার অসুস্থতা গুরুতর নয়।

বিএসএমএমইউয়ের এই পরিচালক বলেন, বোর্ড সুপারিশ করেছে, যে হাসপাতালে সব রোগের চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে, সেখানে খালেদা জিয়াকে ভর্তি করাতে। তারা বিএসএমএমইউয়ের নামও সুপারিশ করেছে। খালেদা জিয়ার কিছু স্বাস্থ্যগত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতেও সুপারিশ করা হয়েছে।

৯ সেপ্টেম্বর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে দেখা করে খালেদা জিয়ার পছন্দ অনুযায়ী রাজধানীর কোনো বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর অনুরোধ জানায়। এরপরই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান সংবাদ সম্মেলনে জানান, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড হবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আশ্বাস অনুযায়ী খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। বোর্ডের সদস্যরা গতকাল শনিবার বিকেল পৌনে চারটার দিকে কারাগারে গিয়ে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান।

খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডে আছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আব্দুল জলিল চৌধুরী (ইন্টারনাল মেডিসিন), অধ্যাপক হারিসুল হক (কার্ডিওলজি), অধ্যাপক আবু জাফর চৌধুরী (অর্থোপেডিক সার্জারি), সহযোগী অধ্যাপক তারেক রেজা আলী (চক্ষু) ও সহযোগী অধ্যাপক বদরুন্নেসা আহমেদ (ফিজিক্যাল মেডিসিন)।

এদিকে এই মেডিকেল বোর্ডে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত কোনো চিকিৎসক না রাখায় এর সমালোচনা করেছে বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন আজ বলেছেন, তাঁরা এই মেডিকেল বোর্ড নিয়ে সন্তুষ্ট নন। তিনি আরও বলেন, সরকারের গঠিত মেডিকেল বোর্ডে উপযুক্ত ও সঠিক চিকিৎসা হবে না। আগে যাঁরা খালেদা জিয়ার চিকিৎসা করতেন, তাঁদের অন্তর্ভুক্ত করে নতুন করে মেডিকেল বোর্ড করার দাবিও জানান তিনি।

 

কারাগারে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা
কারাগারে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছেন মেডিকেল বোর্ডের পাঁচ সদস্য। শনিবার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে তাঁরা পুরান ঢাকার পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রবেশ করেন। এরপর পৌনে ৫টার দিকে কারাগার থেকে বের হন তাঁরা। তবে সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি তাঁরা।

এর আগে বিকেল ৩টার দিকে মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. আবদুল জলিল চৌধুরী বলেন, ‘আমরা মেডিকেল বোর্ডের পাঁচ সদস্যই কারা অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিনের কক্ষে বসে আছি। কারা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এখনো যাওয়ার জন্য অনুমতি পাইনি। খালেদা জিয়া বোধ হয় এখনো প্রস্তুতি নেননি। অনুমতি পেলেই আমরা সেখানে যাব।’

খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গত বৃহস্পতিবার পাঁচ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করে সরকার। আবদুল জলিল চৌধুরী ছাড়া বোর্ডের অন্য সদস্যরা হলেন- বিএসএমএমইউর কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. হারিসুল হক, অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক আবু জাফর চৌধুরী, চক্ষু বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তারিক রেজা আলী এবং ফিজিক্যাল মেডিসিন ও রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. বদরুন্নেসা আহমেদ।


আরো সংবাদ



premium cement