২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

খালেদা জিয়ার বিচারের বিষয়টি দেখবেন প্রধান বিচারপতি

খালেদা জিয়ার বিচারের বিষয়টি দেখবেন প্রধান বিচারপতি - ছবি : সংগৃহীত

সুপ্রিম কোর্টের অনুমতি ছাড়ার কারাগারে অসুস্থ বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিচার করার বিষয়টি প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন দেখবেন বলে সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতিসহ সিনিয়র আইনজীবীদের জানিয়েছেন। আজ রোববার সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি জয়নুল আবেদীনে নেতৃত্বে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা প্রধান বিচারপতির সাথে দেখা করে সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে আলোচনা না করে কারাগারের ভেতরে আদালত স্থাপনের সরকার জারি করা প্রজ্ঞাপনে বিষয়টি তুলে ধরেন।

জবাবে প্রধান বিচারপতি আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমি বিষয়টি জুডিসিয়ারি দেখব না প্রশাসনিকভাবে দেখব। জবাবে আইনজীবীরা বলেন, আপনি যেহেতু বিচার বিভাগের প্রধান তাই বিষয়টি প্রসাসনিকভাবে দেখতে পারেন। তখন প্রধান বিচারপতি বিষয়টি বিশেষভাবে দেখার আশ্বাস দেন বলে জয়নুল আবেদীন জানান।

খালেদা জিয়ার আইনজীবী সিনিয়র অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, এজে মোহাম্মদ আলী, মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, মাহবুবউদ্দিন খোকন, নিতায় রায় চৌধুরী, বদরুদ্দোজা বাদল প্রমুখ প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা করেন। আইনজীবীরা কারাগারের ভেতরে বিশেষ আদালত স্থাপনের বিষয়ে নিজেদের আপত্তির কথা প্রধান বিচারপতিকে জানান।

রোববার দুপুর ১টা থেকে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আইনজীবীরা কথা বলেন। আলোচনা কলে তিনি (প্রধান বিচারপতি) তার ক্ষমতাবলে এ বিষয়টি বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছেন বলে জয়নুল আবেদীন জানিয়েছেন।

প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে জয়নুল আবেদীন সাংবাদিকদের বলেন, আমরা মনে করেছি দেশের সর্বোচ্চ আদালত ও সংবিধানের অভিভাবক সুপ্রিম কোর্ট। আর সুপ্রিম কোর্টের অভিভাবক হলেন প্রধান বিচারপতি। তাই কারাগারের ভেতরে আদালত স্থাপনের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে আলোচনা না করে এ ধরনের কোনো প্রজ্ঞাপন সরকার জারি করতে পারে না। তাই এ বিষয়ে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাত করে আমরা বলেছি, প্রধান বিচারপতি আপনি বিচার বিভাগের অভিভাবক। আমরা মনে করি, মাসদার হোসেন মামলার মধ্য দিয়ে আপনার সুপ্রিমেসি ও সুপ্রিম কোর্টের সুপ্রিমেসি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাই আপনার সঙ্গে আলোচনা ছাড়া রাতের অন্ধকারে গেজেট করে এ ধরনের আদালত স্থাপন হতে পারে না।

জয়নুল আবেদীন বলেন, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে পরামর্শ না করেই এ আদালত স্থানান্তর করা হয়েছে। তাই বিষয়টি দেখার জন্য প্রধান বিচারপতির কাছে লিখিতভাবে আবেদন করেছি। তিনি বলেন, দেশের সংবিধানের গার্ডিয়ান হচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট। আর সুপ্রিম কোর্টের অভিভাবক প্রধান বিচারপতি। এটা সুপ্রিম কোর্টের পাওয়ার। এটা সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে কনসাল্ট না করে এ ধরণের কোনো কোর্ট প্রজ্ঞাপন জারি করতে পারে না। এটা আমরা বলেছি।

জয়নুল আবেদীন বলেন, আমরা প্রধান বিচারপতির সামনে আইনগত দিকগুলো তুলে ধরেছি। আমরা বলেছি সরকারের এই গেজেট, আইন ও মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পরিপন্থী। সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শ না করে রাতারাতি এই প্রজ্ঞাপন করা বেআইনী হয়েছে। জেলখানার মধ্যে সরকার আদালত বসাতে পারে না। সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে প্রধান বিচারপতির সাথে পরামর্শ না করে এটা করা যায় না।

আরো পড়ুন :

বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা সুবিধা চেয়ে খালেদা জিয়ার রিট
নয়া দিগন্ত অনলাইন 

বিশেষায়িত বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সুবিধা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেছেন কারাবন্দি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। আজ রোববার তার আইনজীবী কায়সার কামাল হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই রিট দায়ের করেন। আগামীকাল সোমবার রিটের ওপর শুনানি হবে।


রিটকারী আইনজীবী কায়সার কামাল সাংবাদিকদের বলেন, খালেদা জিয়ার পছন্দমতো কোনো হাসপাতালে সুচিকিৎসার নির্দেশনা চেয়ে আজ দুপুরে রিট করা হয়েছে। আগামীকাল বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি শেখ আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

কায়সাল কামাল বলেন, ‘গত ৫ সেপ্টেম্বর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল দাবি করেন, খালেদা জিয়া অসুস্থ। এ জন্য আদালত কারাগারে বসানো হয়েছে। এতে সরকার কর্তৃক স্বীকৃত হয় যে খালেদা জিয়া অসুস্থ। খালেদা জিয়া নিজেও ৫ সেপ্টেম্বর আদালতে বলেছেন, তাঁর হাত-পা প্যারালাইজড হয়ে যাচ্ছে। তিনি গুরুতর অসুস্থ। এ কারণে ওনার পছন্দমতো হাসপাতালে চিকিৎসার নির্দেশনা দিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আমাকে রিট করার দায়িত্ব দিয়েছেন।’

গত ৫ সেপ্টেম্বর পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর হওয়া অস্থায়ী বিশেষ জজ আদালতে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার শুনানি হয়। এ জন্য সেদিন দুপুর ১২টা ১২ মিনিটে খালেদা জিয়াকে একটি হুইল চেয়ারে করে আদালতে নেয়া হয়।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি দুদকের দায়ের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক ড. আখতারুজ্জামান। রায়ের পর খালেদা জিয়া রাজধানীর নাজিমুদ্দিন রোডের পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে সাজা ভোগ করছেন।


আরো সংবাদ



premium cement