২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

নতুন রাজনৈতিক জোটকে স্বাগত জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

নতুন রাজনৈতিক জোটকে স্বাগত জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী - সংগৃহীত

আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে উদ্ভূত নতুন রাজনৈতিক জোটকে স্বাগত জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকল দলের অংশগ্রহণেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে তো রাজনৈতিক দল দুইটি। একটি আওয়ামী লীগ অপরটি আওয়ামী লীগ বিরোধী। আওয়ামী লীগ বিরোধীদের তো একটা জায়গা লাগবে। এ জন্য তারা যে ঐক্য করেছে আমি তাদের সাধুবাদ জানাই যে, ঐক্যটা থাক।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বিকেলে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী, ড. কামাল হোসেন এবং অন্যদের নিয়ে নতুন জোট গঠন সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘তার দলও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য একটি ভালো বিরোধী জোট প্রত্যাশা করে।’

অতীতে জোটের নেতৃবৃন্দের কেউ কেউ সরকার বিরোধী ষড়যন্ত্রে যুক্ত ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি আশা করবো তাদের জোট নির্বাচন বানচালের জন্য নয় বরং সংঘবদ্ধভাবে নির্বাচনে অংশ গ্রহণের জন্যই হবে।’

বিমসটেক সম্মেলন শেষে দেশে ফেরার পর সেই বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন হলেও আগামী নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) ব্যবহার, খালেদা জিয়ার কারাবাস এবং রোহিঙ্গা সমস্যার মত বিষয় সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তর পর্বে স্থান করে নেয়।
শেখ হাসিনা আগামী নির্বাচনে ভোট গ্রহণের ক্ষেত্রে ইভিএম’র আংশিক ব্যবহারকে সমর্থন করে বলেন, জাতীয় নির্বাচনে এর ব্যাপক ব্যবহারের জন্য আরো পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘কিন্তু বিএনপি ইভিএম পদ্ধতির বিরোধিতা করছে। কারণ কি তাদের জাল ভোট প্রদানের নীল-নকশা বানচাল হয়ে যাবে, এই ভয়ে।’

তিনি বলেন, একটি রাজনৈতিক দল যারা অতীতে ভোট চুরি ও ভোটের কারসাজিতে অভ্যস্ত ছিল তারাই কিনা এখন নির্বাচনের অনিয়মের বড় বড় কথা বলছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হবে এতে কোন সন্দেহ নেই। কারণ, জনগণের ভোটাধিকার ছিনিয়ে নেয়ার রাজনীতি আমরা করি না। জনগণ যদি ভোট দেয় তবেই আমরা ক্ষমতায় থাকবো, না হলে নয়। আর আমার বিশ্বাস থেকেই আমি কথাগুলো বলছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কারো ক্ষমতা নেই এই নির্বাচনকে বানচাল করার। কারণ, এটাই দেশকে এগিয়ে নেয়ার একমাত্র পথ এবং জনগণও এটা জানে যে, দেশে কেবল গণতান্ত্রিক সরকার থাকলেই দেশ উন্নত হতে পারে।

তিনি বলেন, ষড়যন্ত্রই যেন দেশে এক সময় একটা প্রচলিত প্রথা হয়ে দাঁড়িয়েছিল ’৭৫-এ জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর। তাঁর নিজের ওপরও বেশ কয়েকবার প্রাণঘাতী হামলা হয়েছিল বলে উল্লেখ করেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, দেশে একটি সুবিধাবাদী মহল রয়েছে যাদের দেশে অগণতান্ত্রিক সরকার থাকলে বেশ সুবিধা হয়, তারা কদর পায়, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার ভাগ পায়।

২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বেশ কয়েকটি আসনে সাংসদরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় দেশের সেই স্বার্থান্বেষী মহল নির্বাচনের নিরপেক্ষতার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালায়। কিন্তু নির্বাচনে নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপনকারীদের মধ্যে ড. কামাল হোসেন নিজেও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েই জাতীয় সংসদ সদস্য হয়েছিলেন।

তিনি স্মরণ করেন বঙ্গবন্ধুর ছেড়ে দেয়া নির্বাচনী আসন থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন ড. কামাল হোসেন।

প্রধানমন্ত্রী ভবিষ্যতে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের ষড়যন্ত্রকারীদের বিচারের জন্য কমিশন গঠন হতে পারে বলে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, ‘এই হত্যাকান্ডের আত্মস্বীকৃত খুনীদের আমরা বিচার করেছি। কিন্তু এর ষড়যন্ত্রকারী যারা তাদের কোন তদন্ত হয়নি বা বিচার হয়নি এবং সেটা হওয়া উচিত এটা হলো বাস্তবতা। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অনেক রিপোর্ট আছে, অনেক গবেষণা হয়েছে। তাই একটা সময় আসবে যখন দেখা যাবে এগুলোও বেরিয়ে আসবে।’

সংবাদ সম্মেলনে মঞ্চে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এইচ মাহমুদ আলী এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের উপস্থিত ছিলেন।


আরো সংবাদ



premium cement