২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

গাজীপুর সিটির ফল ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে : মির্জা ফখরুল

বিএনপি
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন মির্জা ফখরুল - ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফলাফল ‘ঘৃণাভরে’ প্রত্যাখান করে পুনরায় ভোট দাবি করেছে বিএনপি। গত মঙ্গলবার রাতে সিটি করপোরেশন নির্বাচনের বেসরকারি ফলাফল ঘোষণার পর আজ বুধবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, গাজীপুরের নির্বাচন নির্বাচনের নামে শুধু একটি তামাশা হয়েছে। ভোট ডাকাতির নতুন নতুন কৌশল আবিস্কার করে তা প্রয়োগ করেছে। আমরা গাজীপুর সিটি নির্বাচনের ফলাফল ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করছি। আমরা এই নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে পুনরায় নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানাচ্ছি। জনগনকে এই ভোট ডাকাতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে আহবান জানাচ্ছি।

গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, শওকত মাহমুদ, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন ও প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

দলের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে মির্জা ফখরুল অভিযোগ বলেন, খুলনায় নতুন কৌশলে ভোট ডাকাতি করে তারই ধারাবাহিকতায় গাজীপুর এই নির্বাচন হয়েছে। আওয়ামী লীগ সম্পূর্ণভাবে গণবিচ্ছিন্ন হয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনকে ব্যবহার করে নির্বাচনের ফলাফল নিজেদের পক্ষে নিয়েছে। জনগন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। নির্বাচন কমিশনের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় সরকার গাজীপুরের আমাদের বিজয় ছিনিয়ে নিয়েছে। তারা রাষ্ট্র যন্ত্রকে ব্যবহার করেছে। গণমাধ্যমকে হুমকি দিয়ে সত্য প্রকাশ থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করেছে।

স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, তারা আগের রাতেই অকে ভোট দিয়ে দিয়েছে। এটা ভোটের পারসেনটেইজ দেখলে বুঝা যায় যে, ভোটের টার্ণ আউটা কত আর টোটালটা কত? তার থেকেই বুঝা যায় যে আগের রাতে ভোট দিয়ে দেয়া হয়েছে। এটা দিনের মতো পরিস্কার হয়ে গেছে যে, এই সরকার গণতন্ত্রের বিশ্বাস করে না। আমাদের অনেকে এজেন্টেদের কেন্দ্রে যেতে দেয়া হয়নি, অনেকে বাসা থেকে বের হতেই দেয়নি, অনেককে পথেই বাঁধা দিয়ে রুখে দেয়া হয়েছে। এসব দৃশ্য গণমাধ্যমের কর্মীরা গতকাল নিজেরাই দেখেছেন। এভাবে ষড়যন্ত্র করে গাজীপুরের নির্বাচনের ফলাফল সরকার, নির্বাচন কমিশন ও স্থানীয় প্রশাসন এক হয়ে কাজ করেছে।

স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এটা পরিস্কার হয়ে গেছে সরকার একটি নির্বাচনী প্রকল্প করেছে, তার অংশ হিসেবে খুলনায় যা ঘটিয়েছিলো, গাজীপুরেও তারা একই কাজ করেছে। নীল নকশার অংশ হিসেবে পুলিশের একটি অংশ যারা দলীয় পুলিশ, নির্বাচন কমিশন সকলে মিলে একের পর এক নির্বাচনকে কবজা করছে তারা। গণতন্ত্র ফিরে পেতে হলে এই নির্বাচনী প্রকল্পকে ভেঙে দিতে হবে।

ভোট কারচুপির এরকম ঘটনার পরও রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ‘আন্দোলনের অংশ’ হিসেবে অংশ নেয়ার দলের সিদ্ধান্তের কথাও জানান বিএনপি মহাসচিব।

সরকারের নির্লজ্জ গণবিরোধী চরিত্র উন্মোচনের জন্য ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে অংশ নিচ্ছি আন্দোলনের অংশ হিসেবে। আসন্ন বরিশাল, রাজশাহী ও সিলেট সিটি নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি একই কারণে। এই জনবিচ্ছিন্ন সরকাররের প্রকৃত চেহারা উন্মোচন, নির্বাচন কমিশনের অযোগ্যতা ও পক্ষপাতিত্ব প্রমাণিত হচ্ছে এই নির্বাচনগুলোর মধ্য দিয়ে।

দলের কারাবন্দি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিও জানান মির্জা ফখরুল।

একই সঙ্গে দলের কেন্দ্রীয় নেতা অবসরপ্রাপ্ত মেজর মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে সরকার ‘নীল করশার গল্প’ সাজিয়ে গ্রেপ্তার করেছে অভিযোগ করে অবিলম্বে তার মুক্তির দাবি জানান তিনি।


আরো সংবাদ



premium cement