১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

খালেদা জিয়ার সাথে সাক্ষাত করতে পারলেন না বিএনপি নেতারা

খালেদা জিয়ার সাথে সাক্ষাত করতে পারলেন না বিএনপি নেতারা - সংগৃহীত

ঈদের দিনে আজ শনিবার কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপরসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করতে গিয়ে বিফল হয়ে ফিরেছন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতারা। পুলিশের বাধার কারণে কারাগারের সামনেই পৌঁছতে পারেননি বলে জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা।

এই বিষয়ে ডিএমপির লালবাগ বিভাগের উপ-কমিশনার ইব্রাহিম খান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “যাদের যাওয়ার অনুমতি আছে তারা যাবেন, যাদের অনুমতি নেই, তারা যাবেন না।”

তিনি বলেন, আমরা কাউকে আটকাইনি, তবে সেখানে যাতে গ্যাদারিং না হয়, সেজন্য নিরাপত্তার স্বার্থে আমাদের ব্যবস্থা নিতে হয়।
অনুমতির বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষের কোনো বক্তব্য তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি।

চার মাস ধরে কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে ঈদের দিন দেখা করতে যাবেন বলে আগেই জানিয়েছিলেন দলটির নেতারা।

সেই অনুযায়ী, শনিবার দুপুর ১২টার দিকে মহাসচিব ফখরুলসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা নাজিম উদ্দিন সড়কের পুরনো কারাগারের সামনে উপস্থিত হন। তবে কারাগারের মূল ফটক থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে পুলিশ ব্যারিকেডে তারা আটকা পড়েন।
নেতাদের সঙ্গে প্রায় দুই শ' বিএনপি কর্মীও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। পুলিশের বাধার মুখে তারা সেখানে অবস্থান নিয়ে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। পরে তারা ফিরে আসেন।

বিএনপি মহাসচিব সাক্ষাতের আবেদনের অনুলিপি দেখিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “তিন দিন আগে আমরা সাক্ষাতের জন্য আবেদন করেছিলাম। নিয়ম আছে, ঈদের দিন বন্দির সঙ্গে দেখা করার। কিন্তু পুলিশ আমাদেরকে এখানে আটকিয়ে রেখেছে। জেল গেইটের কাছেও যেতে দিচ্ছে না। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।”

দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, “পুলিশ আমাদের যেতে দিল না। এটা তাদের কাজ নয়। পুলিশের দায়িত্ব ছিল আমাদেরকে জেল কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছিয়ে দেওয়া।”

স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, “আমরা অনেকবার জেল খেটেছি, অনেক বছর জেলে থেকেছি। দেখেছি ঈদের দিন আত্মীয়-স্বজন, কাছের মানুষদের দেখা-সাক্ষাৎ করার সুযোগ থাকে। এবার যে অমানবিক আচরণ করা হয়েছে, এরকম অতীতে আর কখনও দেখিনি।”
সেখানে বিএনপি নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, বরকতউল্লাহ বুলু, আবদুল আউয়াল মিন্টু, এজেডএম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আজম খান, জয়নুল আবদিন ফারুক, শিরীন সুলতানা, আফরোজা আব্বাস, সুলতানা আহমেদ প্রমুখ।

বিএনপি নেতারা এর আগে কারাবন্দি চেয়ারপারসনের সাক্ষাৎ পেলেও বিফল হওয়ার ঘটনাও রয়েছে।

খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে আলোচনার মধ্যে কারা মহাপরিদর্শক সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন সম্প্রতি বলেছিলেন, ঈদের দিন স্বজনরা বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাবেন, খাবারও নিতে পারবেন।

‘আন্দোলন জোরদার হবে’

খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আন্দোলনে ‘পর্যায়ক্রমে’ জোরদার করা হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল।

সকালে শেরে বাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা জানান তিনি।

কারাগারে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার আগে জিয়ার সমাধিতে যান তারা।

ফখরুল বলেন, “আমাদের দেশনেত্রীকে সরকার মিথ্যা মামলায় অন্যায়ভাবে কারাগারে বন্দি করে রেখেছে। আমরা আজকে ভরাক্রান্ত হৃদয়ে ঈদ উদযাপন করছি।

“আমরা আন্দোলনের মধ্যে আছি। আমাদের নেত্রী যে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের কথা বলে গেছেন, সেই নিয়মতান্ত্রিক শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে আমরা প্রত্যেকটি স্তরে জোরদার করছি। আমরা মনে করি, আন্দোলনের মাধ্যমে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে আমরা মুক্ত করতে পারব।”

ফখরুল বলেন, “বিএনপির কাছে এখন মূল চ্যালেঞ্জ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা। আমরা দেশনেত্রীকে মুক্ত করে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগনের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারব।”


আরো সংবাদ



premium cement