১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`
সংসদে চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের প্রতিবেদন

রাজস্ব আহরণ কমেছে, বেড়েছে সরকারি ব্যয়

রাজস্ব আহরণ কমেছে, বেড়েছে সরকারি ব্যয় - ছবি : নয়া দিগন্ত

চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে আদায় হয়েছে ৫৫ হাজার ৪৯৩ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছরের চেয়ে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ কম। অন্যদিকে এই প্রান্তিকে সরকারের সরকারি ব্যয় বেড়েছে ১৫ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ।

সংসদে উত্থাপিত বৃহস্প্রতিবার ২০১৯-২০অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রথম প্রান্তিকে সমষ্টিক অর্থনীতির গতি-প্রকৃতি বিশ্লেষণ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানান অর্থমন্ত্রী আ হম মুস্তফা কামাল।

প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৮১১ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রথম প্রান্তিকে আদায় হয়েছে ৫৫ হাজার ৪৯৩ কোটি টাকা। প্রথম প্রান্তিকে রাজস্ব আহরণের পরিমাণ বিগত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৭ দশমিক ৫ শতাংশ কম। এ সময়ে কর রাজস্ব আহরণের পরিমাণ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে এবং কর বহির্ভূত রাজস্ব আহরণের পরিমাণ ৪৫ দশমিক ১ শতাংশ কমেছে।

প্রতিবেদন অর্থমন্ত্রী বলেন, রাজস্ব আহরণ বাড়ানোর লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। রাজস্ব আহরণ বাড়াতে সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণের ফলে চলতি অর্থবছরে অবশিষ্ট সময় রাজস্ব আহরণের গতি আনবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

এতে বলায় হয়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে মোট সরকারি ব্যয় বেড়েছে ১৫ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) তথ্য অনুযায়ী চলতি অর্থবছরের জুলাই- সেপ্টেম্বর সময়ে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি ব্যয়ের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৩.৩ শতাংশ এবং বাস্তবায়নের হার দাঁড়িয়েছে মোট বরাদ্দের ৮.৩ শতাংশ, যা বিগত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ছিল ৭.৯ শতাংশ।

চলতি অর্থবছরের নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর করা হয়েছে জানিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, এর বাস্তবায়নের প্রস্ততিজনিত কারণে এনবিআরের তথ্যমতে প্রথম প্রান্তিকে এনবিআর কর রাজস্ব আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১.৬২ শতাংশ। প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৬.৫৯ শতাংশ, যা বিগত একই সময়ে ছিল ১৪.০৯ শতাংশ। সরকারের ২ শতাংশ প্রণোদনার সিদ্ধান্তের কারণে প্রবাসী আয় বিপুলভাবে বেড়েছে।

আমদানি ব্যয় ২.৫৫ শতাংশ হ্রাস পেয়ে ১৪.৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হয়েছে। রফতানিমুখী খাতের পণ্য আমদানি কিছুটা কম হওয়ায় এ সাময়িক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী।

আমদানি ঋণপত্রখোলা হ্রাস পেয়েছে ৪ দশমিক ৭৩ শতাংশ। বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরের থেকে কমে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর সময়ে ৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ হয়েছে। অন্যদিকে পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরের ৫.৪৩ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর সময়ে ৫.৫৪ শতাংশ বলে জানান তিনি। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল রয়েছে জানিয়ে তিনি উল্লেখ করেন, ৩০ সেপ্টেম্বর,২০১৯ তারিখে যা ছিল ৩১.৮৩ বিলিয়ন ডলার।

অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যকর ও গতিশীল নির্দেশনায় চলতিঅর্থবছরের বাজেট বাস্তবায়ন, সামস্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা ও উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়নে সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্থনৈতিক অগ্রগতি ত্বরান্বিত করেছে। বর্তমান সরকারের টানা তৃতীয় মেয়াদের ধারাবাহিকতায় দেশের অব্যাহত সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা একদিকে যেমন অভ্যন্তরীণ ভীতকে মজবুত করেছে, অন্যদিকে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জল করেছে। বছরের প্রথম প্রান্তিকের অগ্রগতির চিত্র দেখে নির্দ্বিধায় বলা যায়, আমরা সঠিক পথে রয়েছি। বর্তমান অর্থবছরেও অর্থনৈতিক উন্নয়নের চলমান ধারা অব্যাহত থাকবে।


আরো সংবাদ



premium cement