২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

এক সপ্তাহের মধ্যে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আসবে : সংসদীয় কমিটির বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী

এক সপ্তাহের মধ্যে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আসবে : সংসদীয় কমিটির বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী - ফাইল ছবি

দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। কমিটি সারাদেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে আতংক না ছড়িয়ে সচেতনতা সৃষ্টির উপর গুরুত্বারোপ করে ডেঙ্গু রোগীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সকল প্রস্তুতি গ্রহণের সুপারিশ করেছে। কমিটির বৈঠকে উপস্থিত স্বাস্থ্যমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেছেন, এক সপ্তাহের মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে।

মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে সংসদীয় কমিটির সভাপতি শেখ ফজলুল করিম সেলিমে সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন, তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসান, ডা. আ ফ ম রুহুল হক, মো. মনসুর রহমান ও মো. আব্দুল আজিজ অংশ গ্রহণ করেন। এসময় মন্ত্রণালয় ও সংসদের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

কমিটি সূত্র জানায়, বৈঠকে কমিটির সদস্যরা দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারা সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চান। এ সময় স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, গোটা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে ব্যতিব্য¯Í রয়েছে। এখনো তো ওষুধ এসে পৌছেনি। স্প্রেও করা হয়নি। সিটি করপোরশেন জানিয়েছে সপ্তাহ খানেকের মধ্যে ওষুধ চলে আসবে তারপর স্প্রে করা হবে। এজন্য একটু সময় লাগবে।

বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি শেখ ফজলুল করিম সেলিম সাংবাদিকদের বলেন, মহামারি বলে আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে। মহামারি কাকে বলে? দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ মারা গেলে মহামারী হয়? আমাদের এখানে ডেঙ্গুতে কত লোক মারা গেছে? প্রত্যেক দিন তো হার্ট এ্যাটাকে ৩৫০ জন মারা যাচ্ছে। তাহলে এটাকে কী মহামারী? এভাবে টিভিতে লাইভ দেখিয়ে আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে। তিনি বলেন, বিশ্বের কোন দেশে আছে রোগীর রুমে গিয়ে লাইভ টেলিকাস্ট করে। এটাকে কী সাংবাদিকতা বলে? আমি নিজেও তো সাংবাদিকতা করেছি। স্বাধীনতা মানে আমি যা খুশি তাই করতে পারি না। এতে জনমনে আতঙ্ক হয়।

শেখ সেলিম বলেন, এডিস মশা মারার দায়িত্ব তো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের। তবে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ্য হয়ে পড়লে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পড়ে যায়। এ বিষয়ে চিকিৎসা সেবা দিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় খুব সুন্দরভাবে দেখবাল করছে। উপজেলা থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্তদের স্বাস্থ্য সেবা অব্যাহত রয়েছে। সপ্তাহ খানেরে মধ্যে পুরোটাই নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী বৃদ্ধির অভিযোগ বিষয়ে কমিটির সভাপতি বলেন, ডেঙ্গু রোগী বাড়ার ঘটনা সত্য নয়। এখানে সমস্যা হচ্ছে, যেকোন জ্বর এলেই ডেঙ্গু বানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সাধারণ জ্বর নিয়ে হাসপাতালে এসেছে বলা হচ্ছে ডেঙ্গু জ্বর। বৈঠকে আলোচিত একটি ঘটনার উদ্বৃতি দিয়ে তিনি বলেন, একটি হাসপাতালে ৮জন রোগী এসেছে। পরীক্ষা করে দেখা গেছে তার মধ্যে মাত্র একজন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত। কিন্তু ওই ৮ জনকেই ডেঙ্গু জ্বর বানিয়ে দেওয়া হলো। এ ধরণের সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য তিনি সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান।

স্বাস্থ্য মন্ত্রী বিদেশ সফর সম্পর্কে জানতে চাইলে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী শেখ সেলিম বলেন, বিদেশ সফর নিয়ে কমিটিতে কোন আলোচনা হয়নি। উনি কেন গেছেন, সেটা আমাদের আলোচনার বিষয় নয়। প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি ছাড়া কোন মন্ত্রী দেশ ত্যাগ করতে পারেন না। উনি নিশ্চয় প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি নিয়ে গেছেন। ব্যক্তিগত সফরে গেছেন না কী জন্য গেছেন এটা উনার আর প্রধানমন্ত্রীর বিষয়। প্রধানমন্ত্রী চাইলে যেকোন মন্ত্রীকে বিদেশ পাঠাতে পারেন। আর বিদেশ সফরে গেলে অপরাধটা বা কী? আমি স্বাস্থ্যমন্ত্রী থাকতে বাংলাদেশে প্রথম ডেঙ্গু সনাক্ত হয়েছিলো। ওই সময় একটি বিদেশ সফর ছিলো, আমার যাওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু আমি যাইনি আমার স্টেট মিনিস্টারকে পাঠিয়ে ছিলাম।

এদিকে সংসদ সচিবালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বৈঠকে ডেঙ্গুর বিস্তার প্রতিরোধে ব্যাপকভাবে জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও গণমাধ্যমে সম্প্রচারের সুপারিশ করা হয়। কমিটি মশক নিধনে কার্যকর ঔষধ আনতে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে মশক নিধনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে। 

 


আরো সংবাদ



premium cement