সংসদে ‘বিরোধী দল’ নিয়ে বিএনপি-জাপা বিতর্ক
- সংসদ প্রতিবেদক
- ৩০ জুন ২০১৯, ১৬:৫৪
সংসদে ‘বিরোধী দল’ কে তা নিয়ে বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য এবং জাতীয় পার্টির সদস্যদের মধ্যে বিতর্ক হয়েছে। বিএনপির সদস্যদের প্রশ্নের জবাব জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরা দেয়াকে কেন্দ্র করে এই বিতর্ক হয়। এ নিয়ে বিএনপির রুমিন ফারাহানা প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘এমন এক সংসদে রয়েছি কে সরকারি দলের, আর কে বিরোধী দলের, তা বোঝার উপায় নেই।’
সংসদে আজ রোববার ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটের মঞ্জুরি দাবির ওপর ছাটাই প্রস্তাবের ওপর আলোচনাকালে এই বিতর্কের অবতারণা হয়। সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পাটির সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু তার ছাটাই প্রস্তাবের আলোচনার সময় ‘আমরা ক্ষমতায় আছি’ বলেও মন্তব্য করেন। এক পর্যায়ে বিরোধী দলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিএনপির রুমিন ফারাহানা।
দশম সংসদে জাতীয় পার্টি বিরোধী দলের পাশাপাশি ও মন্ত্রিসভায় অংশ নিয়েছিলেন। মজিবুল হক চুন্নু ওই মন্ত্রিসভায় শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তবে এবারের নির্বাচনও জোটগতভাবে করার পর জাতীয় পার্টিকে আগের সংসদের মতোই বিরোধী দলের আসনে বসার সুযোগ দিলেও সরকারের মন্ত্রিসভায় কাউকে নেয়া হয়নি।
২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটের ৫৯টি মঞ্জুরির দাবির মধ্যে মাত্র শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ও ত্রাণ এই চার মন্ত্রণালয়ের ওপর আনীত বিরোধী দলের সদস্যদের ছাটাই প্রস্তাবের ওপর আলোচনার সুযোগ দেন স্পিকার। বাকি দাবিগুলো সরাসরি কণ্ঠভোটে পাস হয়।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ছাটাই প্রস্তাবের এক মিনিটের আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপি দলীয় সদস্য হারুনুর রশীদ বলেন, জেলা হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসক নেই। জেলা ও উপজেলায় স্বাস্থ্যসেবা বলতে কিছুই নেই। চিকিৎসা খাত এখন ভারতীয় বাজারে পরিণত হয়েছে। এখানে উপস্থিত এমপিরা কেউই বাংলাদেশে চিকিৎসা নেন না। সবাই ভারত অথবা সিঙ্গাপুর গিয়ে চিকিৎসা নেন। ডাক্তাররা নিজের পেশার চেয়ে রাজনীতির সাথে বেশি জড়িয়ে গেছেন।
তার এই বক্তব্যের জবাব দেয়ার কথা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর। কিন্তু তার এই বক্তব্যের পরপরই জাতীয় পাটির ডা: রুস্তম আলী ফরাজী জবাব দেন। তিনি বলেন, সব দোষ ডাক্তারদের দিলে চলবে না। দুয়েকটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে সবাইকে দোষ দেয়া ঠিক না। টাকা থাকলে মানুষ বিদেশে যায়। অনেকে ইচ্ছা করে যায়, দেশকে অপমান করার জন্য।
এভাবে জাতীয় পার্টির সদস্যরা ছাটাই প্রস্তাবের আলোচনার সুযোগ নিয়ে পরামর্শমূলক কথা বলেন ছাটাইয়ের কথা এড়িয়ে। মঞ্জুরি বরাদ্দের পক্ষে সমর্থনও ব্যক্ত করেন কেউ কেউ।
বিএনপির সদস্যদের প্রশ্নের জবাব দেন জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ। তিনি মোবাইল ফোনের স্ক্রিনে একটি ছবি দেখিয়ে বলেন, ‘চোখ লাগাচ্ছে আজ আমাদের ডাক্তাররা। চিকিৎসা হয় না, এটা ঠিক নয়।’
চিকিৎসকদের দলীয় রাজনীতির সাথে জড়িত হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, এ সংস্কৃতি দেশে চালু করেছে বিএনপি। সাবেক রাষ্ট্রপতি ডা: এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী ড্যাব গঠন করে ডাক্তারদের মধ্যে দলীয় রাজনীতি ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। বিএনপি দলীয়করণ করেছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন। অবশ্য তিনি শিক্ষক ও ডাক্তারদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করলে সব ঠিক হয়ে যাবে বলেও মন্তব্য করেন।
এক পর্যায়ে বিএনপির সংরক্ষিত আসনের সদস্য রুমিন ফারাহানা জাতীয় পার্টির সদস্যদের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, এমন পার্লামেন্টে আছি, কোনটা সরকারি দল, আর কোনটা বিরোধী দল কিছুই বুঝি না। অবশ্য তিনি পরবর্তীতে তার ছাটাই প্রস্তাবের আলোচনায় চলে যান।
এরপর মুজিবুল হক চুন্নু তার বক্তব্যে বলেন, সরকার ভুল-ত্রুটি করলে বিরোধী দল ধরিয়ে দেবে। ভালো কাজ করলে প্রশংসা করবে। বিগত সংসদে ৪০০ দিনে মাত্র ১০ দিন উপস্থিত হওয়া বিরোধী দলের কাছ থেকে জাতীয় পার্টির বিরোধী দলের আচরণ শিখতে হবে না। জাতীয় পার্টি ওই বিরোধী দল হতেও চায় না।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে মুজিবুল হক চুন্নু প্রসঙ্গক্রমে বলেন, ‘যেহেতু আমরা ক্ষমতায় আছি, তাই কাজটি করা উচিত’। যদিও জাতীয় পার্টি এই সংসদের প্রধান বিরোধী দল। তার এই বক্তব্য অনেকের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা