২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ধনী-গরীবের বৈষম্য দূর করার আহ্বান রওশন এরশাদের

- ছবি : সংগৃহীত

জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেটের উপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদের বিরোধী দলের উপনেতা ও জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান বেগম রওশন এরশাদ বলেছেন, দেশে কর্মসংস্থান না হল বিনিয়োগ হবে না, বৈষম্যও কমবে না। তাই ধনী-গরীবের বৈষম্য দূর করতে কর্মসংস্থানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। টাকার অবমূল্যায়ন করা হলে মূল্যস্ফীতি বাড়বে ও দেশে অস্থিতিশীলতার সৃষ্টি করবে বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।

শনিবার স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে প্রস্তাবিত বাজেটের অর্থবিল পাসের আগে দেয়া বক্তৃতায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

প্রসঙ্গত, সংসদের বিরোধী দলের নেতা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ অসুস্থ হয়ে সিএমএইচ-এ ভর্তি থাকায় তার অনুপস্থিতিতে বিরোধী দলের উপনেতা বেগম রওশন এরশাদ বক্তব্য রাখেন।

বিরোধী দলের উপনেতা বলেন, আমরা সমৃদ্ধি সোপানের সিঁড়ি বেয়ে আরো উপরে উঠতে চাই। বাজেটে গরীব-ধনীদের বৈষ্যম যাতে হ্রাস পায় সেদিকে বিশেষ লক্ষ্য রাখতে হবে। শিক্ষার মান উন্নয়ন করতে হবে।
এডিপিতে ঘন ঘন প্রকল্প পরিচালক বন্দী, ঠিকাদারদের হাতে বন্দী থাকায় প্রকল্পে খরচ বাড়ছে। এডিপিতে গৃহীত প্রকল্পগুলো ঠিকভাবে বাস্তবায়ন হতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। তাই অর্থবছরের সময় পরিবর্তন করা উচিত, কারণ বর্ষা মৌসুমে অর্থবছর শুরু হয়। সে কথা মাথায় রেখে প্রয়োজন অর্থ বছর শীতকালে শুরু হলে উন্নয়ন আরো বাড়বে।

রওশন এরশাদ বলেন, রাজস্ব আদায় বাজেটের বড় চ্যালেঞ্জ। কিন্তু রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য অর্জনে সংস্কারের পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বাজেটের ঘাটতি পূরণে ব্যাংক থেকে টাকা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু ব্যাংকে নগদ টাকা নেই। সেখান থেকে টাকা নিয়ে ঘাটতি পূরণ করলে বেসরকারি খাত বিনিয়োগের জন্য টাকা পাবে না। ফলে বিনিয়োগ নির্ভর কর্মসংস্থান করতে ঋণ প্রবাহে সমস্যা হবে।

ভ্যাট আদায় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নতুন যে ভ্যাট আইনের প্রস্তাব করা হয়েছে তা বাস্তবায়িত হলে জটিলতা দেখা দেবে। ফলে রাজস্ব আদায়ে অন্থিরতা সৃষ্টি হবে। নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়নের আগে তিনি বিশেষজ্ঞ মতামত নেওয়ার প্রস্তাব করেন।

স্বাস্থ্য খাত প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তিনি মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ ও সরকারি হাসপাতালের সেবার মান নিয়ে উদ্বোগ প্রকাশ করে রওশন এরশাদ বলেন, স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ না বাড়লে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার প্রবণতা বাড়বে। তাই স্বাস্থ্য খাতে বেশি নজর দিতে হবে। এখাতে দুর্নীতি কঠোরভাবে দমন করতে হবে।

পুঁজিবাজার প্রসঙ্গে রওশন এরশাদ বলেন, ছোট ছোট বিনিয়োগকারীরা নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এদের প্রণোদনা দিতে হবে। বড় বড় কোম্পানীগুলোকে পুঁজিবাজারে আনতে হলে উদ্যোগ নিতে হবে। অনলাইনে কেনাবেচায় ক্ষেত্রে ভ্যাট প্রয়োগ করা হলে অনেক তরুণ-তরুণী জড়িত রয়েছে, তারা নিরুৎসায়িত হবে। এখাত ক্ষতিগ্রস্থ হবে। এডিপি বাস্তবায়নে কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে। কর্মসংস্থান না হলে বিনিয়োগ হবে না, বৈষম্য কমবে না। বেকারের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়বে।

বিরোধী দলের উপনেতা বলেন, কালো টাকা সাদা করার সুযোগ প্রদান বিশ্বের অনেক দেশেই হয়। এই সুযোগ না দিলে কালো টাকার মালিকরা দেশে বিনিয়োগ না করে বিদেশে অর্থ পাচার করবে।

নারীদের জন্য পৃথক ব্যাংক সৃষ্টির দাবী জানিয়ে রওশন এরশাদ বলেন, এই ব্যাংক থেকে নারী উদ্যোক্তারা ঋণ নিয়ে নিজেরা স্বাবলম্বী হবে, অন্যদের স্বাবলম্বী করবে।

তিনি বলেন, কৃষকরা ধান উৎপাদন করে মাথায় হাত দিয়েছে। কৃষকরা শস্য ফলিয়ে উৎপাদিত পণ্যের দাম পাচ্ছে না। ক্ষুব্ধ কৃষকরা ধান পুড়িয়ে দিচ্ছে। কৃষকরা ধান না ফলায় তবে আমরা খাবো কী?


আরো সংবাদ



premium cement