২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সংসদে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সংরক্ষণের দাবি

সংসদে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সংরক্ষণের দাবি - সংগৃহীত

বাংলাদেশের স্বাধীকার আন্দোলনের বহু আন্দোলন-সংগ্রামের সাক্ষী আর স্মৃতিবিজড়িত ঐতিহাসিক সোহরাওায়ার্দী উদ্যানের পুরোটাই সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছেন জাতীয় সংসদের সিনিয়র সদস্যরা।

সংসদে সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের যে স্থানটিতে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭ মার্চ ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন এবং যে স্থানটিতে পাকবাহিনী আত্মসমর্পণ করেছিল, সেই স্থান দুটিতে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের প্রস্তাব করেছেন। শাজাহান খানের বক্তব্যের রেশ ধরে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম ও দলটির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ পুরো সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকেই সংরক্ষণের দাবি জানান। রোববার সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে তারা এই দাবি জানান।

কার্যপ্রণালী বিধির ৭১ বিধিতে আনা জরুরি জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মনোযোগ আকর্ষণ সংক্রান্ত এক নোটিশের ওপর দেয়া বক্তব্যে সাবেক নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। ১৬ ডিসেম্বর পাকবাহিনী এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আত্মসমর্পণ করে। এই দুটি ঐতিহাসিক স্থানে আজও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ না হওয়ায় জাতি হতাশ।

তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের একাংশে শিশুপার্ক স্থাপন করেন। এ ব্যাপারে তিনি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর মনোযোগ আকর্ষণ করেন।

৭১ বিধিতে শাজাহান খানের দেয়া এই বক্তব্য ধরে সাবেক গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন পয়েন্ট অব অর্ডারে ফ্লোর নিয়ে বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান নিয়ে আমরা মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। এখানে অনেক ইতিহাস। এসব ইতিহাস মুছে ফেলতে জিয়া চেষ্টা করেছিলেন, সেজন্য তিনি শিশুপার্ক বানান। বঙ্গবন্ধু যেই স্থানটিতে দাঁড়িয়ে ৭ মার্চ ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন সেই স্থানটিকেও নিশ্চিহ্ন করে ফেলা হয়েছে। আমরা চাই এসব ঐতিহাসিক স্থানও থাকবে, শিশুপার্কও থাকবে। এখানে শিশুরা আসবে, তারা দেশের ইতিহাস জানবে। এখানে প্রায় ২৫০ থেকে ৩০০ কোটি টাকার প্রকল্প। ঐতিহাসিক স্থান হিসেবে এই উদ্যানকে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যার কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে।

ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফের বক্তব্য সম্পর্কে শেখ সেলিম বলেন, বক্তব্য দিয়ে তিনি চলে গেছেন। শুধু বলছেন হচ্ছে, হবে। হচ্ছে হচ্ছে বললে হবে না। কবে এই উদ্যান সংরক্ষণের কাজ শেষ হবে তা স্পষ্ট করে বলতে হবে।

শেখ সেলিম বলেন, এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনার স্বাক্ষী। শুধু ৭ মার্চের ভাষণ এবং পাকবাহিনীর আত্মসমর্পণই নয়, এই উদ্যানে বহু ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটেছে। সেই কারণে ঐতিহাসিক স্থান হিসেবে পুরো উদ্যানটিকেই সংরক্ষণ করতে হবে। এই উদ্যান থেকেই বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক ৬ দফা ঘোষণা করেন। ’৬৯ এর ২৩ ফেব্রুয়ারি এই উদ্যানে ছাত্রসমাজের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি দেয়া হয়। এই স্থানটিকেও সংরক্ষণ করতে হবে। ’৭০ এর নির্বাচনের পর ১০ জানুয়ারি এই উদ্যানেই বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ৬ দফার দাড়িকমাও বাদ দিলে বাংলার মানুষের মুক্তি আসবে না। এই উদ্যানেই বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। এই উদ্যানে দাঁড়িয়েই বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন ভারতীয় মিত্রবাহিনীকে ফেরত যেতে হবে। পরে সাড়ে ১৮ হাজার ভারতীয় সদস্য দেশে ফিরে যান।

তিনি বলেন, এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঐতিহাসিক জায়গা। সেজন্য পুরোটাই সংরক্ষণ করতে হবে, যাতে ভবিষ্যত বংশধররা দেশের ইতিহাস জানতে পারে।

এরপর তোফায়েল আহমেদ ফ্লোর নিয়ে বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান একটা ঐতিহাসিক জায়গা। অনেক স্মৃতিবিজড়িত এই উদ্যান। এটাকে সুন্দরভাবে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন। স্বৈরশাসক জিয়া এই ঐতিহাসিক উদ্যানকে নষ্ট করতেই শিশুপার্ক নির্মাণ করেন। এমনটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যেই বটতলা থেকে আমরা বহু আন্দোলন সংগ্রাম করেছি সেই বটগাছটি পর্যন্ত নিশ্চিহ্ন করা হয়েছে।

জাতির পিতার জন্ম না হলে আপনি বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ হতে পারতেন না: রাঙ্গাকে ডেপুটি স্পিকার

কার্যপ্রনালী বিধির ৭১ বিধিতে গৃহীত না হওয়া নোটিশের ওপর সংশ্লিষ্ট সংসদ সদস্যরা দুই মিনিট করে বক্তব্য রাখার সুযোগ পান। শাজাহান খান তার ৭১ বিধির নোটিশের ওপর বক্তব্য রাখার জন্য নির্ধারিত ২ মিনিটের বেশি সময় পেলে এতে হাত তুলে আপত্তি জানান বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা। তখন অধিবেশনে সভাপতিত্বকারী ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া তাকে (রাঙ্গাকে) উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘৭১ বিধিতে দুই মিনিটের বেশি বক্তব্য রাখার বিধান নেই। কিন্তু বিষয়টি যেহেতু বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিসৌধের জন্য সেইজন্য বেশি সময় দিলাম। জাতির পিতা ছাড়া অন্য বিষয় হলে বেশি সময় দিতাম না। আপনি কি জাতির পিতাকে অস্বীকার করতে চান? জতির পিতার জন্ম না হলে আপনি আজ বিরোধী দলীয় চিফ হুইপের পদে বসতে পারতেন না।’

পরে ৭১ বিধিতে নিজের নোটিশের উপর বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাঙ্গা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর কথা বলায় মাননীয় স্পিকার আপনাকে ধন্যবাদ। সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খানকেও ধন্যবাদ। আমি তো বঙ্গবন্ধুর বিষয়ে আপত্তি করিনি। আমি বলতে চেয়েছি, এর আগে দুই-তিনদিন আমি আমার নোটিশ পড়ে শেষ করতে পারিনি। ভবিষ্যতে আমরাও যেন সময় বেশি পাই। আমি এ বিষয়টা বলতে চেয়েছি।’ এসময় ডেপুটি স্পিকার বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে অন্য কোনো বিষয় আনা ঠিক নয়।

দেখুন:

আরো সংবাদ



premium cement
হাতিয়া-সন্দ্বীপ চ্যানেলে কার্গো জাহাজডুবি : একজন নিখোঁজ, ১১ জন উদ্ধার হঠাৎ অবসরের ঘোষণা পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়কের বগুড়ায় গ্যাসের চুলার আগুনে বৃদ্ধা নিহত বগুড়ায় ধানের জমিতে পানি সেচ দেয়া নিয়ে খুন জিআই স্বীকৃতির সাথে গুণগত মানের দিকেও নজর দিতে হবে : শিল্পমন্ত্রী অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ চুয়েট, শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ সখীপুরে সাবেক ও বর্তমান এমপির সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ তীব্র গরমের জন্য আওয়ামী লীগ সরকার অন্যতম দায়ী : মির্জা আব্বাস সৈয়দপুরে জামায়াতের উদ্যোগে সালাতুল ইসতিসকার নামাজ আদায় জিম্বাবুয়ে সিরিজের শুরুতে না থাকার কারণ জানালেন সাকিব ঝালকাঠিতে গ্রাম আদালত কার্যক্রম পরিদর্শনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দল

সকল