২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহার করে ভারতীয় পণ্য পরিবহন চুক্তি খসড়ায় মন্ত্রীসভা অনুমোদন

-

চট্টগ্রাম এবং মোংলা বন্দর ব্যবহার করে ভারতীয় পণ্য সে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যে পরিবহনের জন্য একটি চুক্তির খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে চলমান ‘সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক সুদীর্ঘ করার উদ্দেশ্যে’ ‘এগ্রিমেন্ট অন দা ইউজ অব চট্রগ্রাম অ্যান্ড মোংলা পোর্ট ফর মুভমেন্ট অব গুডস টু এন্ড ফর্ম ইন্ডিয়া বিটুইন বাংলাদেশ এন্ড ইন্ডিয়া’ খসড়ায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম ।
সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তেজগাঁও কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে চুক্তির খসড়াটি অনুমোদনের পর সচিবালয়ে ফিরে সাংবাদিকদের কাছে এর বিস্তারিত তুলে ধরে তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে স্বাক্ষরের জন্য চট্টগাম ও মোংলা পোর্টে যোগাযোগের জন্য যে কমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক তৈরি করা হচ্ছে, তার চুক্তির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এখানে প্রভিশন রাখা হয়েছে নেপাল ও ভুটান ইচ্ছা প্রকাশ করলে যুক্ত হতে পারবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, পণ্য পরিবহনে বাংলাদেশের যান ব্যবহার হবে। এটি ট্রানজিট ঠিক না, কারণ আমাদের পরিবহন ব্যবহার করতে হচ্ছে। আমাদের আইন অনুযায়ী শুল্ক ও ট্যাক্স তাদের দিতে হবে। প্রস্তাবিত চুক্তি অনুযায়ী মালবাহী কার্গো শনাক্ত করতে ‘ট্র্যাকিং সিস্টেম’ ব্যবহার করা হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম চুক্তির বিভিন্ন শর্তাবলির বিষয়ে বলেন, পণ্য সামগ্রী পরিবহনের ক্ষেত্রে শুধু বাংলাদেশের ভেইকল ব্যবহার করা হবে। বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক নিয়মাবলি (গ্যাট) এবং দেশের নিয়ম মেনে চলতে হবে, শুল্ক বিভাগ ডিউটিজ অ্যান্ড ট্যাক্সেস সমপরিমান বন্ড গ্রহণ করবে। বাংলাদেশের মধ্যে দিয়ে মালামাল পরিবহনের জন্য গ্যাট প্রিন্সিপাল অনুসারে শুল্ক/কর ব্যতিত চার্জ-ফি ও পরিবহন খরচ আদায় করা হবে। এছাড়া বাংলাদেশের স্থল বন্দর ব্যবহার করায় স্থল বন্দরের দক্ষতা বাড়াতে মাশুল আদায় করা হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরের সক্ষমতার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। প্রস্তাবিত চুক্তিতে কয়েকটি রুটের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সেগুলো হচ্ছে- চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর থেকে আগরতলা ভায়া আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া), চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর থেকে ডাউকি ভায়া তামাবিল (সিলেট), চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর থেকে সুতারকান্দি ভায়া শেওলা (সিলেট) এবং চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর থেকে বিবিরবাজার ভায়া শ্রীমন্তপুর (কুমিল্লা)। চুক্তিটি পাঁচ বছরের জন্য হবে এবং যে কোনো পক্ষ প্রয়োজনে যে কোনো সময় চুক্তি স্থগিত রাখতে পারবেন।
শফিউল আলম বলেন, চুক্তিটি ৫ বছরের জন্য সম্পাদিত হবে এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে আরও ৫ বছর বলবৎ থাকবে। তবে ৬ মাসের নোটিসে যে কোনো পক্ষ চুক্তিটি বাতিল করতে পারবে। জরুরি প্রয়োজনে বা রাষ্ট্রের নিরাপত্তার স্বার্থে যে কোনো পক্ষ চুক্তির বাস্তবায়ন সাময়িকভাবে স্থগিত করতে পারবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, চুক্তি মোতাবেক নৌ সচিবদের নেতৃত্বে গঠিত ইন্টার গভর্নমেন্ট কমিটির মাধ্যমে উদ্ভূত সমস্যার নিরসন করা হবে এবং উভয় দেশের কর্মকর্তা সমন্বয়ে কাস্টমস অ্যান্ড পোর্ট সাব গ্রুপ গঠন করা হবে।
চায়নার সাথে অংশীদারিত্বে কোম্পানি করার প্রস্তাবও অনুমোদন
মন্ত্রিসভার বৈঠকে সরকারি মালিকাধীন ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্টিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড এবং চায়নার হেক্সিং ইলেকট্রিক্যাল কোম্পানি চায়না ৪৯ ও ৫১ অংশীদারিত্বে একটি কোম্পানি করার প্রস্তাবও অনুমোদন হয়।
শফিউল আলম বলেন, এই কোম্পানির নাম দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ স্মার্ট ইলেকট্রিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড। ওনারা স্মার্ট মিটার থেকে শুরু করে যত ধরনের ইলেকট্রিক্যাল সরঞ্জাম উৎপাদন করতে পারবে। এটির অথরাইজ ক্যাপিটাল হবে ৫০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত হবে ২৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা। এর মধ্যে ১৪ কোটি ৫৮ লাখ দেবে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি এবং ১৪ কোটি এক লাখ দেবে হেক্সিং। কোম্পানির বার্ষিক উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা হবে ৫ লাখ সিঙ্গেল ফেইজ স্মার্ট পেমেন্ট মিটার।


আরো সংবাদ



premium cement