২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

সংসদে শীর্ষ ১০০ ঋণখেলাপির তালিকা প্রকাশ

-

জাতীয় সংসদে দেশের প্রধান ১০০ ঋণ খেলাপীর তথ্য প্রকাশ করে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, দেশে বর্তমানে ঋণখেলাপির সংখ্যা ২ লাখ ৩০ হাজার ৬৫৮ জন/ প্রতিষ্ঠান। এসব ঋণখেলাপিদের কাছে ৮৮টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অনাদায়ী অর্থের পরিমাণ ১ লাখ ৩১ হাজার ৬৬৬ কোটি ১৬ লাখ টাকা।
বুধবার বিকেলে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে আওয়ামী লীগ দলীয় সংরক্ষিত সংসদ সদস্য বেগম পিনু খানের ( মহিলা আসন-২৩) প্রশ্নের উত্তরে এ কথা জানান অর্থমন্ত্রী।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি (ঋণ তথ্য ব্যুরো) ডাটাবেজে সংরক্ষিত চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত তথ্যানুযায়ী এই ঋণখেলাপির সংখ্যা জানিয়ে মন্ত্রী ১০০ শীর্ষ ঋণখেলাপির তালিকার পাশাপাশি ৮৮টি সরকারী-বেসরকারী ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের তালিকাও তিনি প্রকাশ করেছেন।
সংসদে দেওয়া অর্থমন্ত্রীর তালিকা অনুযায়ী শীর্ষ ১০০ ঋণখেলাপির মধ্যে রয়েছে- মোহাম্মদ ইলিয়াস ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কোয়ান্টাম পাওয়ার সিস্টেম লি., ম্যাক্স স্পিনিং মিলস, রাবেয়া ভেজিটেবল ওয়েল ইন্ডাট্রিজ, রাইজিং স্টিল মিল, ঢাকা ট্রেডিং হাউজ, বেনেটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, আনোয়ারা শিপিং মিলস, ক্রিসেন্ট লেদার প্রোডাক্টস, ইয়াসির এন্টারপ্রাইজ, চৌধুরী নিটওয়ার, সিদ্দিক ট্রেড, রুপালী কম্পোজিট লেদার ওয়ার, আলফা কম্পোজিট টয়েলস হলমার্ক ফ্যাশন লিমিটেড, মুন্নু ফেব্রিক্স, ফেয়ার ইয়ার্ন প্রসেসিং লিমিটেড, ফেয়ার ট্রেড ফেব্রিক্স, শাহরিজ কম্পোজিট টয়েল লিমিটেড, ম্যাক ইন্টারন্যাশনাল, সুরুজ মিয়া শিপিং মিলস, প্যাসিফিক বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড, সালেহ কার্পেট মিল, পদ্মা পলি কটন নিট ফেব্রিক্স, এ কে স্টিল প্রমুখ।
অর্থমন্ত্রীর দেয়া তথ্য অনুযায়ী, সব চেয়ে ঋণ খেলাপী (অনাদায়ী) ব্যাংকগুলোর মধ্যে সর্বাগ্রে রয়েছে- সোনালী ব্যাংক লি., যার খেলাপী ঋণের পরিমান ১৮ হাজার ৬৬২ কোটি ৯৭ লাখ ৩০ হাজার টাকা, দ্বিতীয় জনতা ব্যাংক লি. এর খেলাপী ঋণের পরিমান ১৪ হাজার ৮৪০ কোটি ২৭ লাখ টাকা, তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে- অগ্রনী ব্যাংক, খেলাপী ঋণের পরিমান ৯ হাজার ২৮৪ কোটি ৪২ লাখ টাকা, চতুর্থ অবস্থানে বহুল আলোচিত বেসিক ব্যাংক লি. যার খেলাপী ঋণের পরিমান ৮ হাজার ৫৭৬ কোটি ৮৫ লাখ ৭ হাজার টাকা, পঞ্চম অবস্থানে ইসলামী ব্যাংক- ৫ হাজার ৭৬ কোটি ৪৩ লাখ ৩ হাজার টাকা।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জানান, চলতি ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে বিভিন্ন প্রকল্পের অনুকুলে বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা থেকে প্রাপ্ত বৈদেশিক সাহায্যের আশ্বাসের পরিমান ছিল ৩৬১.৩৫ মিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে ঋণের পরিমান ৩৬০ মিলিয়ন ডলার এবং অনুদানের পরিমাণ ১.৩৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং বৈদেশিক সাহায্যের প্রাপ্তির (ডিসবার্সমেন্ট) পরিমান ছিল ১৮৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ঋণের পরিমান ১৮৫.৪৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং অনুদানের পরিমান ২.৪২ মার্কিন ডলার। অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে সারাদেশে বেসরকারি ব্যাংক থেকে কৃষকদের মধ্যে ১১ হাজার ৩১৬ কোটি টাকার কৃষি ও পল্লী ঋণ প্রদান করা হয়েছে।
মৌলভীবাজার-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. আব্দুল মতিনের এক প্রশ্নের জবাবে আবুল মাল আবদুল মুহিত সংসদকে জানান, ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে রাজস্ব আদায়ের সংশোধিত লক্ষমাত্রা দুই লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা এর মধ্যে ৯১ শতাংশ অর্জিত হয়েছে। চলতি অর্থবছরের রাজস্ব আয়ের লক্ষমাত্রা দুই লাখ ৯৬ হাজার ২০১ কোটি টাকা।
আরেক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ক্যাপিটাল মার্কেট (বিআইসিএম) চলতি বছরের আগষ্ট পর্যন্ত সাত হাজার ৫৬৭ জন সাধারণ বিনিয়োগকারীদেও প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে। পজিবাজার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে এক হাজার ৫৮৮ জনের সার্টিফিকেট কোর্স সমাপ্ত করেছে এবং ২৬০ জনকে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা ইন ক্যাপিটাল মার্কেট (পিজিডিসিএম) কোর্স পরিচালনা করেছে। মন্ত্রী জানান, পূজিঁবাজারে ক্ষতিগ্রস্থ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে আইপিওতে ২০% কোটা প্রথা এবং বিনিয়োগকারীদেও সহায়তার উদ্দেশে ৯০০ কোটি টাকার ফান্ড গঠন করা হয়েছে।
মন্ত্রী জানান, কর্মসংস্থান ব্যাংকের শাখা স্থাপন করার জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকার জনগণের নিকট থেকে আবদেন পাওয়া গেলে ব্যাংকের ব্যবসায়িক সম্ভবানা পর্যালোচনাপূর্বক সংশ্লিষ্ট নীতিমালা অনুসরণ কওে নতুনশাখা খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। স্থানীয় জনগণের চাহিদা ও বাস্তবতা পর্যালোচনা কওে নীতিমালা অনুসরন কওে সংশ্লিষ্ট উপজেলা সদওে পর্যায়ক্রমে কর্মসংস্থান ব্যাংকের শাখা খোলা হবে।


আরো সংবাদ



premium cement