২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দৈত্যাকার পিজ্জা-বার্গার খাওয়াই যাদের পেশা (ভিডিও)

বিশালাকার পিজ্জা-বার্গার তাদের খাবার তালিকায় নিয়মিতই থাকে - সংগৃহীত

লন্ডনের এক রেস্তরায় জানালার ধারের সিটে বসে প্রায় সাড়ে পাঁচ কেজি বা ১৮৩ আউন্স ওজনের একটি বার্গারের অপেক্ষায় বসে আছেন ফুড ব্লগার এবং রেস্তরায় বিভিন্ন খাবার খাওয়ার প্রতিযোগিতার নবিস অংশগ্রহণকারী আন্দ্রে সিদোরভ।

ভ্রমণ বিষয়ক টেলিভিশন চ্যানেলের কল্যাণে আজকাল এসব প্রতিযোগিতার কথা সবাই জানেন। আন্দ্রে বলছেন, এই প্রতিযোগিতা অনেকের কাছেই মুফতে যা খুশি খাওয়ার একটি দুর্দান্ত সুযোগ, ইংরেজিতে একে 'চিট মিল' বলেও অভিহিত করা হয়।

"আজকে আমার 'চিট মিল' ১৮৩ আউন্স ওজনের একটি বার্গার।"

গত চার বছর ধরে আন্দ্রে শখের বশেই বিভিন্ন রেস্তরায় প্রকাণ্ড সব বার্গার আর পিজ্জা খাবার প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছেন।

একে তিনি খুবই আমোদের বিষয় বলে মনে করেন। উদাহরণস্বরূপ, এ ধরণের একেকটি বার্গার ম্যাকডোনাল্ডসের ২১টি বড় বার্গারের সমান হয়ে থাকে।

নগদ অর্থ

এখানে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রেস্তরাগুলো বিনামূল্যে প্রতিযোগীদের খাবার সরবরাহ করে।

কিছু ক্ষেত্রে আবার নগদ অর্থও দেয়া হয় প্রতিযোগীদের। বিভিন্ন নামী ও নতুন রেস্তরার ফুড ভাউচারও দেয়া হয় পুরষ্কার স্বরূপ।

আন্দ্রে এ পর্যন্ত ৪০ থেকে ৫০ ধরণের নতুন ধরণের খাবারের প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন।

ব্রিটেনে কয়েক শো প্রতিযোগী আছেন, যারা নিয়মিত এ ধরণের কাজ করে থাকেন।

চার বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় কেইট ওভেনস প্রথম বিশাল আকৃতির এক বার্গার খেয়ে পুরষ্কার জিতেছিলেন।

সাধারণত নারীরা এ ধরণের প্রতিযোগিতায় কম আসেন। যে কারণে তার সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাওয়ার পর ২৪ বছর বয়সী কেইট লন্ডনের একজন পূর্ণকালীন ফুড চ্যালেঞ্জ ব্লগারে পরিণত হন।

এখন এটাই তার পেশা।

"এটা আসলে সত্যিকারের চাকরির মত নয়। কিন্তু দেখা গেল অন্য যেকোনো চাকরির মতই আমাকে সিরিয়াসলি ব্যাপারটি নিয়ে ভাবতে হয় এবং সে অনুযায়ী নিজের পারফরম্যান্স ভালো করার একটা তাগিদ থাকে আমার মধ্যে।"

কেইটের ইনস্টাগ্রামে এখন ৬০ হাজারের ওপর অনুসারী রয়েছেন।

তিন কেজি ওজনের একটি কাবাব খাওয়ার তার ভিডিওটি ইউটিউবে আড়াই লক্ষ বার দেখেছেন মানুষ।

কেইট আর আন্দ্রে যে ধরণের প্রতিযোগিতায় যান, সেগুলো যুক্তরাষ্ট্রে আরো বড় আকারে অনুষ্ঠিত হয়।

আন্দ্রের নিজস্ব ওয়েবসাইট আছে এখন আর সেখানে বিভিন্ন রেস্তরা থেকে আড়াই হাজারের বেশি খাবার চেখে দেখার অনুরোধ ইতিমধ্যেই জমা হয়েছে।

কী ধরণের খাবার থাকে প্রতিযোগিতায়

বেশির ভাগ সময় প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন স্বাদের নতুন ধরণের বার্গার আর পিৎজাই বেশি থাকে।

এছাড়া কাবাব আর নানা স্বাদের পাস্তাও অনেক সময় প্রতিযোগীরা চেখে দেখেন।

অধিকাংশ সময় সেগুলো একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করার চ্যালেঞ্জ থাকে।

কেইট বলছেন, চ্যালেঞ্জে জেতার জন্য বিভিন্ন কৌশল রপ্ত করা শিখেছেন তিনি।

যেমন বার্গারের ক্ষেত্রে পানি খেলে খাবার চিবানো সহজ হয়, আবার রুটির অংশটি আগে শেষ করে ফেলা উচিত।

সস্তায় খাবার

প্রতিযোগীদের ক্ষেত্রে দেখা যায়, মজার সব খাবার চেখে দেখাটাই বড় আকর্ষণ হয়।

তবে, সেই সঙ্গে সস্তায় খাবার ব্যবস্থাও একটি বড় ব্যপার প্রায় সব প্রতিযোগীর জন্যই।

কেইট এখন মাসে একটির বেশি প্রতিযোগিতায় অংশ নেন না।

সামাজিক মাধ্যমে তিনি যেসব প্রতিক্রিয়া পান তার বেশিরভাগই 'ইতিবাচক'। তবে, অনেক ক্ষেত্রেই তাকে শুনতে হয় যে, ছেলেরা বলে, "তোমাকে ডিনারে নিয়ে যাওয়া নিশ্চয়ই খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হবে।"

তবে যেসব রেস্তরায় তিনি যান, তারা বেশিরভাগ সময়ই পয়সা রাখেনা তার কাছ থেকে, ফলে তাকে ডিনারে নিয়ে গেলে যে অন্য মেয়েদের থেকে খরচ কম হবে, সেটা অনেকেই বুঝতে পারেন না---মজা করে বলছিলেন কেইট।

রেস্তোরা মালিকের কী লাভ

আর রেস্তরায় মালিকেরা একে দেখেন কম খরচে তার পণ্যের বিজ্ঞাপন হয়ে যায়।

একটি বিজ্ঞাপন তৈরির আগে সেটা বিভিন্ন সরকারী দপ্তরে মান যাচাই এর জন্য পাঠানো, এরপর বিজ্ঞাপন তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার এসবের জন্য যে খরচ হয়, তার চেয়ে অনেক কম খরচে এসব প্রতিযোগিতা আয়োজন করা যায়।

ফলে কয়েক বেলার খাবার ব্যবস্থা করা আর কিছু ক্ষেত্রে বিনামূল্যে খাওয়ার জন্য কুপন সরবারহ করাটা বেশ আয়েশের সাথেই করতে পারেন তারা।

দেখুন কেইটের তিন কেজি ওজনের কাবাব খাওয়ার চ্যালেঞ্জ -


আরো সংবাদ



premium cement