বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলো 'গুগু'
- বিবিসি
- ১৬ আগস্ট ২০১৮, ১৩:০৬, আপডেট: ১৬ আগস্ট ২০১৮, ১৮:৩২
গুগুকে যখন বাসায় আনা হয়েছিল, তখন ও ছিল মিষ্টি হলদেটে রঙের। সময় গড়িয়েছে। এখন পালকের রঙে আর হলদেটে ভাব নেই। এখন ধবধবে সাদা সুদর্শন এক রাজহাস সে। তার মালিক মিস উ এর ভাষ্য এমনই।
কিন্তু দুঃখের কথা হলো, গুগু'কে এখন আর নিজের কাছে রাখতে পারছেন না উ। কারণ কিছুদিন পরেই বাসা বদল করবেন তিনি। সেই বাড়িতে গুগু'কে রাখা সম্ভব নয়। তাই মহাবিপদে পড়েছেন উ। পোষ্যটিকে নিজের কাছে না রাখতে পারার কষ্ট পুষে রাখতে না পেরে তা জানিয়ে দিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
উ চীনের বাসিন্দা। গুগু'কে নিয়ে তিনি জনপ্রিয় মাইক্রোব্লোগিং সাইট সিনা উইবো'তে একটি পোস্ট দেন। সেখানে তিনি সাংহাই মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করেন, তারা যেন গুগু'কে সেখানে আশ্রয় দেন।
প্রশ্ন উঠা স্বাভাবিক এতো জায়গা থাকতে এই বিশ্ববিদ্যালয়েই কেন গুগু'কে রাখার অনুরোধ করলেন তিনি?
কারণটা একটু পরে বলছি।
তার আগে মিস উ এর পোস্টটি শুনুন। সাংহাই বিশ্ববিদ্যালয়কে উদ্দেশ্য করে তিনি লিখেছেন, 'আমি গুগু'কে রান্না করে খেতে চাচ্ছি না। দয়া করে আমাকে সাহায্য করুন। আপনাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে গুগু'কে ভর্তি করিয়ে নিন।
এবার আসুন সেই কারণে। সাংহাই বিশ্ববিদ্যালয় কিছুদিন আগেই এক ঝাঁক রাজহংসিকে এই প্রতিষ্ঠানের লেকে ছেড়েছে। সে কথা জানা ছিল মিস উ এর। তাই রাজহংসিদের সঙ্গী করে গুগু'কে রাখার রাখার অনুরোধ করেন তিনি।
অনুরোধ সাথে সাথেই রাখেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। জানান, আমরা আনন্দের সাথে গুগু'কে আমাদের 'বিশাল রাজহাস পরিবারে' আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।
এই খবরে স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়েন উ।
তার এই পোস্ট এখন উইবোতে ভাইরাল হয়ে গেছে। অনেকে মন্তব্য করেছেন। কেউ এটিকে ভালো চোখে দেখেছেন। আর কেউ নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন।
একজন ব্যবহারকারীর বলেছেন, 'অসাধারণ একটি হৃদয়ছোঁয়া গল্প। আশা করছি, গুগু সারাজীবনের জন্য একটি বাড়ি পেয়েছে। হয়ত একটি বড় লেকে, যেখানে সে দিনভর সাঁতার কাটবে।'
আরেকজন লিখেছেন, 'আমার মনে হয় উ মজা করে গুগু'কে রান্না করে খাওয়ার কথা বলেছেন।'
একজন অবশ্য ক্ষুদ্ধ হয়ে উ'কে দায়িত্বহীন পোষ্য মালিক বলেছেন।
তবে যে যাই বলুক, গুগু এখন সাংহাই বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজহাস পরিবারের সদস্য। রাজহংসিদের সাথে লেকে ঘুরে বেড়াবে আর কোয়াক কোয়াক করে ডাক হাকবে।
আরো পড়ুন : মেতিয়াস আর তার দেহরক্ষী
ছোট্ট মেতিয়াস সমুদ্রে বেড়াতে এসেছে। কিন্তু সমুদ্র দেখতে এসে কী চুপ চাপ দাড়িয়ে থাকা যায়! হুহ, এক দমই না। তাই তো সমুদ্রের বুকে তার লাফ-ঝাঁপ শুরু। ঢেউয়ের সাথে লুটোপুটি খাচ্ছে সে। আর খিলিখিল করে হাসছে। কিন্তু ছোট্ট এই মেয়েটির সাথে মা-বাবা কেউ নেই। এ কী করে সম্ভব? কিভাবে ছোট্ট মেটিকে একা সমুদ্রে ছেড়ে দিলো?
কে বলেছে মেতিয়াস একা?
ওই যে দেখুন তার পাশেই আছে গার্ড। হ্যাঁ, মেতিয়াসকে চোখে চোখে রাখছে বিশাল বড় এ কুকুরটি।
সে কী মেতিয়াসকে বিপদ থেকে বাঁচাত পারবে?
পারবে না মানে? দেখুন না, কী করেছে সে। মেতিয়াস যখন সমুদ্রে মনের আনন্দে গোসল করছিল। ঢেউয়ের তোড়ে ভাসছিল তখন ভয় পেয়ে যায় ওর দেহরক্ষী কুকুরটি। দ্রুত মেতিয়াসের জামার কলার ধরে টানতে থাকে। টানতেই থাকে...। মেতিয়াস তাকে বারণ করছিল আর খিলখিল করে হাসছিল। কিন্তু কোনো কথাই শুনছিল না বিশাল কুকুরটি। মেতিয়াসকে টানতে টানতে একেবারে তীরে নিয়ে আসে। তারপেই ক্ষান্ত হয়। মেতিয়াসের জামার কলার ছেড়ে দেয়।
পুরো ঘটনাটি হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়ার মতো। দেখলেই মুখে হাসি আর মনে প্রশান্তি আসে। এক কথায় চমৎকার!
এই ঘটনাটির ভিডিও অনলাইনে শেয়ার করার পর দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। মানুষ খুব পছন্দ করেছে। এর প্রমাণ এক সপ্তাহে এক মিলিয়ন ভিউ।
অনেকে মন্তব্যও করেছেন। একজন লিখেছেন, 'মন ভরে গেলো মেতিয়াসকে রক্ষা করতে কুকুরটির আচরণ দেখে...। সে যেভাবে মেয়েটিকে দেখাশুনা করেছে, তা অনেক বড় মানুষও তা পারে না।'
আরেকজন বলেছেন, 'সে তার কাজ করেছে। কুকুরটি খুব ভালো।'
আরো একজন মন্তব্য করেন, 'খুব ভালো লাগছিল মেতিয়াসের খিলখিল হাসি শুনে। কুকুরটি আসলেই অন্য রকম। ভিডিওটি খুব সুন্দর।'
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা