২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দীর্ঘ বিষাদ ভ্রমণ শেষে মৃত সন্তানকে বিদায় জানালো সেই তিমি মা

সন্তানকে মুখে নিয়ে সাঁতরে যাচ্ছে মা তিমি - সংগৃহীত

সমুদ্রে কমপক্ষে এক হাজার মাইল বহন করার পর অবশেষে মৃত নবজাতককে বিদায় জানালো সেই তিমি মা। কানাডার ভ্যাঙ্কুভারের তিমি গবেষণা কেন্দ্রের গবেষকরা বলছেন, "মা তিমিটির বিষাদ ভ্রমণ শেষ হয়েছে এবং তার আচরণ উল্লেখযোগ্যভাবে বিচিত্র।"

এই ধরণের তিমি মাছ সাধারণত সপ্তাহখানেক ধরে মৃত সন্তান বহন করে থাকে, কিন্তু বিজ্ঞানীরা মনে করছেন এই এক্ষেত্রে তিমিটি রেকর্ড করেছে।

মা তিমিটি গত কয়েকদিনেই সারাবিশ্বের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে।

তিমি গবেষণা কেন্দ্র শনিবার এক বিবৃতিতে বলে, "সমুদ্রতট থেকে নেয়া টেলিফটো ডিজিটাল চিত্র থেকে ধারণা করা যায় যে মা তিমিটি শারীরিকভাবে সুস্থ অবস্থাতেই রয়েছে।"

"মৃত তিমিটির দেহ যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মধ্যবর্তী স্যালিশ সাগরে ডুবে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে তিমির দেহের 'নেক্রপসি' (পশুর ময়নাতদন্ত) করার সুযোগ হয়তো পাবেন না গবেষকরা।"

ভ্যাঙ্কুভার উপকূলে মা তিমিটিকে মৃত শাবক বহন করে নিয়ে যেতে দেখা যায় ২৪ জুলাই।

ওই দিনই শাবকটি মারা যায় বলে ধারণা করা হয়। তবে তার মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্র দুই দেশই এই ধরণের তিমিকে বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতি হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

এই ধরণের তিমির প্রধান খাবার চিনুক স্যামন মাছ, যার সংখ্যা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অনেক কমে গেছে।

 

আরো পড়ুন : মৃত সন্তানকে তিন দিন আগলে রাখলো তিমি মা

দীর্ঘ ১৭টা মাস, ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করছিল সে। কবে মা হবে, কবে সন্তানের মুখ দেখবে! কিন্তু সে স্বপ্ন আর পূরণ হলো না মা তিমির।

মঙ্গলবার সকালে ব্রিটিশ কলম্বিয়ার ভিক্টোরিয়ার কাছে সন্তানের জন্ম দেয় ‘জে৩৫’ নামে বিপন্নপ্রায় ‘কিলার হোয়েল’টি। মেয়ে হয়েছিল। গত তিন বছরে ওই তিমি পরিবারে প্রথম জীবিত সন্তানের জন্ম দিয়েছিল জে৩৫ (সংরক্ষণবিদরা তাই বলছেন)। তাই আনন্দের সীমা ছিল না। জে৩৫ ও তার সদ্যোজাত সন্তানকে ঘিরে ছিল পরিবারের সবাই। সব কিছু একদম ঠিক ছিল।

কিন্তু হঠাৎই নড়াচড়া বন্ধ করে দেয় সদ্যেজাত তিমিটি। একজন মা-কে সব চেয়ে ভয়াবহ যে পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হতে পারে, সেটাই হয়েছিল। তৈরি ছিল না জে৩৫। মাত্র কয়েকটা ঘণ্টার চোখের সামনে মারা গিয়েছিল তার সদ্যোজাত সন্তান। কিচ্ছু করতে পারেনি সে।

‘সেন্টার ফর হোয়েল রিসার্চ অন স্যান জুয়ান আইল্যান্ড’-এর প্রতিষ্ঠাতা তথা বিজ্ঞানী কেন ব্যালকোম্ব বলেন, ‘‘এরপরের দৃশ্যগুলো চোখে দেখা যায় না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে গেছে, সন্তানকে মুখে নিয়ে সাঁতরে যাচ্ছে জে৩৫।’’ ঘণ্টার হিসেব ক্রমে দিন ছুঁয়েছে। বৃহস্পতিবারও দেখা গেছে, মৃত সন্তানকে কিছুতেই কাছ ছাড়া করছে না সে। ব্যালকোম্বের কথায়, ‘‘এমন নয় যে এ ঘটনা আগে দেখা যায়নি। কিন্তু এত দীর্ঘ সময়, এই প্রথম দেখলাম।’’

সমুদ্রবিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, মঙ্গলবার থেকে তিন দিনে নিজের দলের সাথে ভ্যাঙ্কুভার গিয়ে, সেখান থেকে স্যান জুয়ান আইল্যান্ড ফিরেছে জে৩৫। প্রতিদিন গড়ে ৬০-৭০ মাইল সাঁতরে পার করেছে। আর গোটা সময়টা তার সন্তানের ৪০০ পাউন্ডের দেহটা ভাসিয়ে রেখেছে সে।

‘‘ব্যাপারটা সামলানো জে৩৫-এর জন্য খুব একটা সহজ নয়,’’ বলেন ‘ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটন সেন্টার ফর কনজারভেশন বায়োলজি’র তিমি বিশেষজ্ঞ ডেবরা গিলস।

বৃহস্পতিবার একটি নৌকা থেকে জে৩৫-এর উপর নজর রাখছিলেন ডেবরা। তার কথায়, ‘‘সন্তানের মৃতদেহ যতবার ডুবে যাচ্ছে, ওকে দেহটা তুলে আনতে হচ্ছে। মাথার উপর সন্তানের দেহটা নিয়ে সাঁতরে চলেছে সে। এই ভাবে তিন-তিনটে দিন! সন্তান হারানোর শোক সব প্রাণীদেরই ক্ষেত্রেই একই রকম।’’ (২৯ জুলাই ২০১৮, প্রকাশিত সংবাদ)

 

আরো পড়ুন : সন্তানকে নিয়ে খেলায় মেতেছে মা শিম্পাঞ্জি

পিঁড়ি পিঁড়ি ওই তো
ছাই মাটি কই?

ছোট্ট সন্তানকে পায়ের উপর তুলে এখনো এই ছন্দে খেলতে থাকেন অনেক মা-বাবা। শূন্যে ভেসে বেড়িয়ে পুঁচকেটা বড্ড মজা পায়। খিলখিল করে হাসতে থাকে। শেষ মেষ 'সোনার গাঙ্গে, না হয় রুপার গাঙ্গে' যেকোনো একটিতে ঝাঁপিয়ে পড়তে হয় পুঁচকেটাকে। এই হলো খেলা। এই খেলারই একটি ভিডিও এবার সবার হৃদয় ছুয়েঁছে।

নিশ্চয়ই ভাবছেন, এক মা তার সন্তানকে নিয়ে খেলছেন। কিন্তু ব্যাপারটা পুরোপুরি তা নয়, শূন্যে ভাসার এ খেলাটি এক মা শিম্পাঞ্জি খেলেছে তার সন্তানের সাথে। অস্ট্রেলিয়ার কুইসল্যান্ডের এক দল গবেষক এই ভিডিওটি ইউটিউবে প্রকাশ করে। একটি গবেষণা চলাকালীন মন ছুঁয়ে যাওয়া ঘটনাটি তারা ভিডিও করেন।

এতে দেখা যায়, এক মা শিম্পাঞ্জি তার সন্তানকে দুই পায়ের উপরে তুলে খেলছে। তার তাতে মজা পেয়ে হাত-পা ছুঁড়ে খেলছে ছোট্ট শিম্পাঞ্জি। এরপরই সন্তানকে পায়ের উপর থেকে বুকে জড়িয়ে ধরে আদরে ভরিয়ে দিতে থাকে মা শিম্পাঞ্জি।


আরো সংবাদ



premium cement